খুলতে শুরু করেছে দোকানপাট

ঈদ শেষে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে কর্মজীবী মানুষ। তবে মহাসড়কে যানবাহনের তেমন চাপ না থাকায় ভোগান্তি ছাড়াই ফিরছে সবাই। গতকাল সোমবার ভোর থেকে বাস, ট্রেন ও লঞ্চগুলো বিপুল যাত্রী নিয়ে ঢাকায় ফিরেছে। ট্রেন যাত্রীরা স্বস্তি নিয়ে ফেরার কথা জানিয়েছেন। সড়কের কোথাও কোনো যানজট না থাকায় তেমন দুর্ভোগে পড়তে হয়নি বাসের যাত্রীদের। বৈরী আবহাওয়া না থাকায় লঞ্চযাত্রা ছিল স্বস্তির।

সদরঘাট টার্মিনাল সরগরম হয়ে ওঠে গতকাল ভোর ৪টা থেকেই। বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, হুলারহাট, ভান্ডারিয়া, রাঙ্গাবালী, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, চাঁদপুর, ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে যাত্রী নিয়ে লঞ্চগুলো নিরাপদেই সদরঘাটে পৌঁছেছে। যাত্রীর চাপ গত কয়েক দিনের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে বলে জানান বরিশাল থেকে আসা কুয়াকাটা-২ লঞ্চের স্টাফ নাসির। বরিশাল থেকে আসা যাত্রী নিজামুদ্দিন জানান, লঞ্চে তেমন যাত্রী ছিল না। আবহাওয়া ভালো ছিল। তাই অনেকটা স্বস্তি নিয়েই সবাই ঢাকায় ফিরেছেন।

এদিকে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে যাত্রী নিয়ে বাসগুলো ভোরেই গাবতলী বাস টার্মিনালে এসে থামতে শুরু করে। প্রতিটি বাস ৩০-৩৫ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকায় ফিরেছে। রংপুর থেকে আসা মোজাম্মেল জানান, তিনি মিঠাপুকুর থেকে বাসের টিকেট কেটে ঢাকায় রওনা হন। নির্ধারিত ভাড়া দিয়েই এসেছেন, বাড়তি ভাড়া দিতে হয়নি। যানজট না থাকায় রাস্তায় কোথাও কোনো ভোগান্তি পোহাতে হয়নি। এবার ঈদে যাওয়া এবং আসা স্বস্তিদায়ক হয়েছে। গাবতলী পৌঁছার পর বাসায় যেতে সিএনজি এবং রিকশার জন্য ডবল ভাড়া গুনতে হচ্ছে।

রংপুর থেকে আসা আগমনী পরিবহনের কর্মী কামাল হোসেন বলেন, রংপুর থেকে তাদের বাসগুলো সকাল ৮টার মধ্যে গাবতলীতে পৌঁছেছে। মহাসড়কে কোনো যানজট নেই। শ্যামলী পরিবহনের ম্যানেজার প্রকাশ জানান, গত কয়েক দিনের তুলনায় গতকাল ঢাকায় ফেরা যাত্রীর চাপ কিছুটা বেড়েছে। কোনো মহাসড়কেই যানজট নেই। এ কারণে ঢাকায় আসতে বেশি সময় লাগছে না- একটানে চলে আসছে। কমলাপুর রেলস্টেশনে যাত্রী সবচেয়ে বেশি। বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রেনগুলো পূর্ণ আসনে যাত্রী নিয়েই

ঢাকায় ফিরছে। ট্রেনের যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি স্বস্তি নিয়ে ঢাকায় ফিরেছেন। ট্রেনে ওঠার পর থেকে কমলাপুর পৌঁছানো পর্যন্ত কোথাও কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়নি। চট্টগ্রাম সিলেট উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার ট্রেনগুলো নির্দিষ্ট সময়েই কমলাপুর রেলস্টেশনে এসে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে।

এদিকে ঈদের ছুটির পর এখনো চিরচেনা রূপে ফেরেনি রাজধানী ঢাকা। শহরজুড়ে এখনো ছুটির আমেজ। সরকারি-বেসরকারি অফিসের চাকরিজীবীরা যানজটহীন শহরে অল্প সময়ের মধ্যেই অফিসে যাতায়াত করতে পারছেন। রাস্তাগুলোতে যানবাহনের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। তবে ট্রাফিক সিগন্যালে কাউকেই দাঁড়াতে হচ্ছে না। এলিফ্যান্ট রোডের মার্কেটগুলো খুলছে, তবে বেশির ভাগ দোকান এখনো বন্ধ। ধানমন্ডি এলাকার কিছু দোকান খোলা দেখা গেছে। ফার্মগেট এলাকার অনেক দোকান খুললেও ফুটপথের দোকানগুলো এখনো বন্ধ। কাওরানবাজার এলাকার বেশির ভাগ দোকান খুলেছে এবং বেচাকেনাও কমবেশি হচ্ছে।

দুপুরের দিকে রমজান পরিবহনের চালক মোরশেদ জানান, সড়কে যানবাহনের চাপ না থাকায় ট্রাফিক জ্যাম নেই। তবে যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে। সকালের দিকে প্রায় সব বাসেই অফিসগামী লোকজনের ভিড় ছিল।