×

জাতীয়

সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইনের খসড়া প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠালো ঐক্য পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র শাখা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৩, ০৭:৪৬ পিএম

সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইনের খসড়া প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠালো ঐক্য পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র শাখা
বাংলাদেশে সামনে নির্বাচন আসছে, নির্বাচনের আগে-পরে সংখ্যালঘুরা যাতে নির্যাতিত না হয় সেজন্য সরকারকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে ইন্ডিয়ান সাব-কন্টিনেন্ট পার্টিশন ডকুমেন্টেশন প্রজেক্ট নামের একটি সংগঠন। আইনের একটি খসড়া এরইমধ্যে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে নির্বাচনের আগে-পরে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধের জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টিক সিটির জিম হুয়েলান বোর্ডওয়াক হলে এই সংগঠন আয়োজিত তিনদিন ব্যাপী বঙ্গ সম্মেলনে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানানো হয়। এতে সহযোগিতা করে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুক্তরাষ্ট্র শাখা। দেশটির স্থানীয় সময় গত শনিবার বিকেলে এই সম্মেলন শুরু হয়। সংগঠনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়েছে। সম্মেলনে ঐক্য পরিষদ নেতারা জানান, ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’টি যাতে প্রকৃতই একটি টেকসই আইন হয়, অর্থাৎ সংখ্যালঘু নির্যাতন চিরতরে বন্ধ করতে সক্ষম হয় এবং ভবিষ্যতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ঠেকানোর জন্য এতে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা সংযুক্ত করতে হবে। সভায় এই আইনের একটি খসড়া কিছুটা পড়ে শোনানো হয় এবং জানানো হয়, এই খসড়াটি এরইমধ্যে ওয়াশিন্টনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হয়েছে। সম্মেলনে সর্ব্বসম্মতিক্রমে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে বলা হয়, অবিলম্বে ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’ প্রণয়নের জন্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে ‘সংখ্যালঘু কমিশন’ গঠনেরও আহবান জানানো হয়। তবে এটি এটি নুতন কিছু নয়, প্রধানমন্ত্রী অঙ্গীকার। আসন্ন নির্বাচনের আগেই এ আইনটি পাশ করে প্রধানমন্ত্রী তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন বলে সম্মেলনে আশা করা হয়। সম্মেলনে ইন্ডিয়ান সাব-কন্টিনেন্ট পার্টিশন ডকুমেন্টেশন প্রজেক্টের চেয়ারম্যান ড. দিলীপ নাথের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে আলোচক ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা এবং একুশে পদক প্রাপ্ত লেখক ও কাউন্সিলম্যান ড. নূরন নবী, ডিষ্টিংগুয়িশড প্রফেসর, মানবাধিকার প্রবক্তা ও লেখক ড. সব্যসাচী দস্তিদার, লেখক, চিন্তাবিদ ও রাজনীতিবিদ তথাগত রায়, চিকিৎসক, প্রফেসর ও প্রগতিশীল রাজনীতিবিদ ড. মাসুদুল হাসান, লেখক, কলামিস্ট ও মানবাধিকার কর্মী শিতাংশু গুহ, যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক নবেন্দু দত্ত, এটর্নি ও মানবাধিকার কর্মী অশোক কর্মকার, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও মানবাধিকার কর্মী ড.দ্বিজেন ভট্টাচার্য্য এবং অর্কিটেক্ট ও মানবাধিকার কর্মী উৎসব চক্রবর্তী। বক্তারা সবাই স্বীকার করেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-ভিত্তিক ১৯৭২ সালের সংবিধান পুন:প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নাই। পঞ্চদশ সংশোধনীর সুযোগ নিয়ে সংবিধানের ৮ম সংশোধনী বাতিল করা উচিত ছিলো, যা না হওয়ায় সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস বহুগুন বেড়ে গেছে। সরকার ২০১৮ নির্বাচনের পরপরই ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’টি প্রণয়ন করলে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস এতটা বাড়তো না। তারা বলেন, তাই অবিলম্বে এই আইনটি প্রণয়ন করা হোক। সভায় বক্তারা এবার সংখ্যালঘু হিন্দু সমাজকে নির্বিঘ্নে পুজো এবং শারদোৎসব উদযাপনের নিশ্চয়তা বিধান করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। বক্তারা বলেন, সরকারের চাইলে সংখ্যালঘু নির্যাতন ঠেকানো সম্ভব। তারা বলেন, ২০১৩ সালে রামুর বিভৎসতা থেকে শুরু করে ২০২১ সালের পুজো পর্যন্ত কিছুদিন পর পর ধর্মীয় জাতীয়তাবাদী, মৌলবাদী ও উগ্রপন্থী চক্র দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর বর্বর অত্যাচার করে আসছে, সরকারের উচিত ভবিষ্যতে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস বন্ধের ব্যবস্থা নেয়া। তারা বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুত ‘সংখ্যালঘু কমিশন’ ছাড়াও আরও কিছু আইনকে ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’-এর অন্তর্ভূক্ত করে একটি কঠোর বিল পাশ হলে সংখ্যালঘুরা কিছুটা রেহাই পেতে পারে, কারণ তখন নির্যাতকদের বিচার হয়ে শাস্তি পাওয়ার ভয় থাকবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App