×

জাতীয়

ফাঁকা রাজধানীতে রিকশা-অটোর দাপট

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৩, ১০:১২ এএম

ফাঁকা রাজধানীতে রিকশা-অটোর দাপট

ছবি: সংগৃহীত

ঈদ শেষ হলেও ঢাকা এখনো একেবারেই ফাঁকা। একে তো ঈদের ছুটি, তারপর আবার দিনভর একটানা বৃষ্টি। এই দুইয়ে মিলে লোকজনের বাসার বাইরে নামার সুযোগ নেই। নিতান্তই জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের না হওয়ায় রাজধানীর পরিবেশ একেবারেই শান্ত। তবে এই অবস্থায় রিকশাচালক, সিএনজি চালকদের পোয়াবারো। গণপরিবহন কম থাকার সুযোগে তারা ইচ্ছেমতো পাবলিকের পকেট কাটছে।

এদিকে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষের এবার ঢাকায় ফেরার পালা। স্বজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগির পর শনিবার থেকেই অনেকে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন। তবে এদের সংখ্যা কম। অন্যদিকে ঢাকায় ফেরা মানুষের চেয়ে ঈদের একদিন পরও ঢাকা ছেড়ে গ্রামে যাওয়া মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। এই যাওয়া-আসার পথে বৃষ্টি তাদের ভোগান্তির সৃষ্টি করেছে।

সড়কগুলোতে সীমিতসংখ্যক গণপরিবহন চলাচল করেছে। অনেক সময় অপেক্ষার পর বাস পাওয়া যায়নি। তবে ঈদের দিন থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত ফাঁকা রাস্তায় রিকশাচালক ও সিএনজি চালকদের দাপট ছিল। যাদের ব্যক্তিগত গাড়ি নেই এবং বাস পাচ্ছিলেন না, তাদের অনেকের মূল ভরসা হয়ে দাঁড়ায় রিকশা। এই সুযোগে রিকশাচালকরা ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করেছেন। রিকশার দাপট থাকলেও সংখ্যায় আগের চেয়ে কম দেখা গেছে। রিকশাচালকরা ৫০ টাকার ভাড়া ৯০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করেছেন। সিএনজি চালকরাও কম যাননি। সব গন্তব্যের যাত্রীদের কাছ থেকেই বাড়তি ভাড়া আদায় করেছে।

রাজধানীর মতিঝিল, দিলকুশা, বায়তুল মোকাররম, ফার্মগেট, ধানমন্ডি, গুলশান, মহাখালী, বনানী, বারিধারা, রামপুরা, মগবাজারসহ সব এলাকার রাস্তা প্রায় জনশূন্য। লোকসমাগম কম দেখা গেছে। ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজি অটোরিকশা ও রিকশা চলাচল করেছে। সব এলাকার অফিস, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান তালাবদ্ধ। শুধু বাস-লঞ্চ টার্মিনাল, রেলস্টেশন, চামড়া বেচাকেনা হয়েছে এমন সব স্থানগুলোতে বেশি মানুষ দেখা গেছে। অভিজাত এলাকার কিছু ফাস্টফুডের দোকানের বিভিন্ন বয়সি মানুষের ভিড় দেখা গেছে।

এদিকে ঈদের ছুটি শেষ হওয়ায় লোকজন আবার ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে। গতকাল শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। আজ রবিবার থেকে অফিস-আদালত, ব্যাংক-বিমা ও শেয়ারবাজার, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মব্যস্ততা শুরু হবে। তাই পথের ঝামেলা এড়াতে অনেকেই আগেভাগে ঢাকায় ফিরেছেন। রাজধানীর বাস-লঞ্চ টার্মিনাল ও রেলস্টেশনে সকাল থেকে কিছু মানুষ ঈদ শেষে ঢাকায় ফিরেছে। ফিরতি পথে কোনো চাপ নেই।

সরকারি-বেসরকারি বেশির ভাগ কর্মজীবীদের অনেকে এক বা দুই দিনের ঐচ্ছিক ছুটি নিয়েছেন। তারা আরো দুইদিন পর ফিরতি যাত্রার চাপ শুরু হবে। টাঙ্গাইল থেকে ঢাকায় ফেরা আতিকুর রহমান জানিয়েছেন, শনিবারই তাকে কর্মস্থলে যোগ দিতে হবে। তাই ঢাকায় ফিরেছেন। পথে কোনো ঝামেলা নেই। যাত্রীর সংখ্যাও কম ছিল।

রাজশাহী থেকে ফিরে ব্যাংক কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম জানান, রবিবার ব্যাংক খুলবে। তাই আগেভাগেই ঢাকায় ফিরেছি। পরিবারের অন্য সদস্যরা আসবে আগামী সপ্তাহে। যাত্রীর চাপ নেই, পথে ঝামেলাও নেই।

সকালের দিকে কমলাপুর রেলস্টেশনে ফিরতি ট্রেনে আসা যাত্রীর চাপ কম ছিল। তবে এখনো ঢাকা ছেড়ে ঘরমুখী যাত্রীর চাপ বেশি রয়েছে। দুপুরের পর থেকে স্টেশনে আসা প্রতিটি ট্রেনেই যাত্রী সংখ্যা বেশি ছিল। চট্টগ্রাম থেকে আসা সরকারি কর্মকর্তা বশির আহমেদ জানান, অফিস থাকায়, তিনি একাই ঢাকায় ফিরেছেন। ট্রেনের অনেক সিট ফাঁকা ছিল, যাত্রীর চাপ নেই। রবিবার থেকে ট্রেনে ভিড় বাড়বে। তাই আজই ঢাকায় চলে এসেছি।

ফিরতি যাত্রীর চাপ কম থাকলেও কমলাপুর রেলস্টেশনে গতকাল শনিবারও ঘরমুখো যাত্রীর চাপ অনেক বেশি ছিল। যারা ঈদের আগে টিকিট পাননি বা ছুটি পাননি তারা এখন বাড়ি ফিরছেন। ময়মনসিংহগামী যাত্রী হারুন জানান, ঈদের আগে টিকিট পাইনি। তাছাড়া ঢাকায় থাকার কারণে কিছু মাংস পেয়েছি। ঈদের আগে বাড়িতে গেলে এগুলো পাওয়া যেত না। এখন মাংস নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি।

বাস টার্মিনালগুলোতেও ঢাকায় ফেরা মানুষের চাপ কম। তবে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া যাত্রীর চাপ তুলনামূলকভাবে বেশি। যাত্রী এবং পরিবহন কর্মীরা জানান, ঈদে লম্বা ছুটির কারণে ঢাকায় ফেরা মানুষের চাপ নেই। শনিবার মহাখালী বাসটার্মিনালে কিশোরগঞ্জগামী অনন্যা পরিবহন কাউন্টারে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন হয়েছে। কর্মী রফিক জানান, এখনো অনেকের ছুটি আছে। তাই তারা ফিরতে আরো দেরি করবেন। ঢাকায় কম মানুষ আসছে। তবে অনেক মানুষ এখনো ঢাকা ছাড়ছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App