×

জাতীয়

সিলেট ও বরিশালে দামে হতাশ চামড়া ব্যবসায়ীরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৩, ০৯:৩০ এএম

সিলেট ও বরিশালে দামে হতাশ চামড়া ব্যবসায়ীরা

ফাইল ছবি

এবার পশুর চামড়া নিয়ে নয়-ছয় করতে পারেনি চট্টগ্রামে চামড়া ব্যবসায়ীরা। সুশৃঙ্খলভাবেই এবার কুরবানির পশুর চামড়া বেচাকেনা হয়েছে। এদিকে সিলেট বিভাগে এবারো চামড়ার ন্যায্যমূল্য মিলেনি। খুচরা বিক্রেতারা একেবারেই কম মূল্যে চামড়া বেচে দিতে বাধ্য হয়েছেন। অপরদিকে সরকার চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিলেও বরিশালে চামড়ার দর পতন হওয়ায় হতাশ চামড়া সংগ্রহকারীরা। তাদের অভিযোগ, সিন্ডিকেট করে চামড়ার দাম কমিয়ে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, আর্থিক সংকট ও ট্যানারি ব্যবসায়ীদের অনীহা আর মূল্য কম দেয়ায় তারাও চামড়ার দাম কম দিচ্ছেন।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল থেকে পাঠানো খবর-

চট্টগ্রাম অফিস : চামড়ার মৌসুমি সংগ্রহকারী-আড়তদার এবং তাদের প্রতিনিধি সিন্ডিকেটকে হটিয়ে দিয়েছে আঞ্জুমান এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের অঙ্গ সংগঠন গাউছিয়া কমিটি। তাদের তত্ত্বাবধানে কয়েক হাজার মাদ্রাসার ছাত্র ট্রাক নিয়ে নগরীর বিভিন্ন অলিগলি ও গ্রাম থেকে চামড়া সংগ্রহ করেছেন। কুরবানিদাতাদের কাছ থেকে বিনামূল্যেই চামড়া পেয়েছেন তারা।

তবে জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও কাঁচা চামড়ার আড়তদাররা বলেছেন, এবার কুরবানি নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কম হয়েছে। চট্টগ্রামে কুরবানির দিন দুপুর থেকে নগরীর কাঁচা চামড়া সংগ্রহের স্থানগুলোতে ঘুরে এবার চিরচেনা দৃশ্যের দেখা মেলেনি। অলিগলির মুখে কিংবা সড়কে কাঁচা চামড়া নিয়ে তরুণ-যুবকদের জটলা ছিল না। নগরীর চৌমুহনী কর্ণফুলী বাজার, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, ঈদগাহ বৌবাজারসহ যেসব স্পটে কাঁচা চামড়া এনে জড়ো করা হয়, সেখানে গত বছরের মতো এবারও তেমন ভিড়-হাঁকডাক দেখা যায়নি। কিন্তু এর আগে চট্টগ্রামে কুরবানির কাঁচা চামড়ার বাজার প্রতিবছর ‘কয়েকটি চক্রে’ নিয়ন্ত্রণ হতো। কুরবানি দাতাদের কাছ থেকে চামড়া সংগ্রহ করতেন এলাকার উঠতি তরুণ-যুবকরা, যাদের মৌসুমি সংগ্রহকারী বলা হয়। তারা কয়েকজন মিলে ৫-৬টি করে চামড়া সংগ্রহ করতেন। তাদের কাছ থেকে কাঁচা চামড়া কিনে নিতেন বড়-মাঝারি মানের ব্যবসায়ীরা, যারা শুধু কুরবানির সময়ই চামড়া কিনতে বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেন এবং সেই চামড়া বিক্রি করেন আড়তদারের কাছে। সেই ব্যবসায়ীরা কাঁচা চামড়া বিক্রি করতেন আড়তদারের প্রতিনিধির কাছে। প্রতিনিধির কাছ থেকে চামড়া যেত আড়তদারের ডিপোতে।

তবে সেসব ‘চক্র’ ২০২০ সাল থেকে ভেঙে যায়। ২০১৯ সালে আড়তদার ও তাদের প্রতিনিধিরা ‘অস্বাভাবিক দরপতন’ ঘটিয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চামড়া কেনা বন্ধ রেখেছিলেন। এতে কাঁচা চামড়া সড়কে ফেলে দিয়ে তাদের বিদায় নিতে হয়েছিল। ২০২০ সালে মৌসুমি সংগ্রহকারীর সংখ্যা অর্ধেকেরও কমে নেমে আসে। কাঁচা চামড়ার বাজারের ওপর প্রায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন আড়তদার ও তাদের প্রতিনিধিরা। ২০২০ সালেও মৌসুমি সংগ্রহকারীদের একই কৌশলে চামড়া ফেলে যেতে বাধ্য করা হয়। এরপর ২০২১ সাল থেকে কাঁচা চামড়ার বাজারের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ চলে যায় আড়তদার ও তাদের প্রতিনিধিদের হাতে। কিন্তু ২০২২ সালে এসে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ ও কেনাবেচার নিয়ন্ত্রণ নেয় সুন্নী মতাদর্শে বিশ্বাসী সংগঠন ‘গাউছিয়া কমিটি’, যা অব্যাহত আছে এবারও। চামড়া সংগ্রহে শৃঙ্খলা ফিরে আসায় আড়তদার এবং সরকারি সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোও তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।

কুরবানির পর বৃহস্পতিবার দুপুরে চৌমুহনী কর্ণফুলী বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, হাতেগোনা তিন-চারজন চামড়া সংগ্রহকারী নগরীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা থেকে রিকশা-ভ্যানে আসা কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করছেন। বিকাল ৪টা পর্যন্ত সেখানে মাত্র ৭টি চামড়ার স্তূপ দেখা গেছে। সব মিলিয়ে হাজারখানেকের কিছু বেশি চামড়া ছিল। চামড়া সংগ্রহকারীরা জানান, এক থেকে দেড় লাখ টাকা দামের গরু অর্থাৎ ছোট গরুর চামড়া তারা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় কিনেছেন। আর তিন লাখ টাকা বা এর বেশি দামের গরুর চামড়া তারা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় কিনেছেন। ছাগলের চামড়ার কোনো দামই নেই। তারা বলেন, ‘এবার কুরবানি কম হয়েছে। চামড়া খুব কম আসছে। গরু, ছাগলের দাম বেশি ছিল। মানুষের পকেটে টাকা নেই। কুরবানি দিতে পারেনি। এবার গাউছিয়া কমিটিও চামড়া নিয়ে গেছে। তারপরও শহরের বিভিন্ন পাড়া থেকে ছেলেরা অল্প কিছু চামড়া এনেছে।

সিলেট অফিস : সিলেট বিভাগে এবার ৩ লাখ ৯৪ হাজার পশু কুরবানি দেয়া হয়েছে। তবে এবারো চামড়ার ন্যায্যমূল্য মিলেনি। খুচরা বিক্রেতারা একেবারেই কম মূল্যে চামড়া বেচে দিতে বাধ্য হয়েছেন। মাঝারি কিংবা বড় গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকায়। একইভাবে কম দামে বিক্রি হয়েছে ছাগল ও অন্যান্য পশুর চামড়া। ছাগলের চামড়া বিক্রি হয়েছে ১০-২০ টাকায়। সব মিলিয়ে হতাশ হয়েছেন চামড়ার খুচরা ব্যবসায়ী।

সিলেটের আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা বলেছেন, লবণের দাম বেড়ে যাওয়া, শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়া ও ট্যানারি মালিকদের কাছে বকেয়া থাকায় সংকট তৈরি হয়েছে এ ব্যবসায়। এসব কারণেই নির্ধারিত দামের চেয়ে কম দামে চামড়া কিনতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। যদিও ঈদের আগে সরকারিভাবে চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। এতে প্রতি বর্গফুট গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ৪৭-৫২ টাকা ও ঢাকার বাইরে ৪০-৪৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ১৮-২০ টাকা ও বকরির চামড়া ১২-১৪ টাকা। গত বছরের তুলনায় এবার গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট ৭ টাকা এবং খাসির চামড়া ৩ টাকা বাড়ানো হয়। তবে সরকার নির্ধারিত দামে সিলেটে চামড়ার বেচাকেনা হয়নি। সংগ্রহ করা চামড়াগুলো কাঁচা।

ব্যবসায়ীরা বলেছেন, ট্যানারি মালিকদের কাছে সিলেটের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর টাকা আটকে আছে। এর ফলে চামড়া ব্যবসায় অনেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। তবে গত দুই মৌসুম থেকে ট্যানারি মালিকরা অল্প করে পাওনা টাকা পরিশোধ করছেন। অনেক ব্যবসায়ী চামড়া সংগ্রহও করছেন।

ব্যবসায়ীদের হিসাবে, ঈদের দিন বৃহস্পতিবার ও পরদিন শুক্রবার মিলিয়ে সিলেটে প্রায় ৮০ হাজার চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে সিলেট নগরে চামড়া কিছুটা বেশি দামে ও গ্রামাঞ্চলের চামড়া কম দামে কিনেছেন ব্যবসায়ীরা। এসব চামড়া লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে গুদামে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ১২-১৫ দিনের মধ্যে সেগুলো ট্যানারি মালিকদের কাছে দেয়া হবে। সিলেট নগরের মদিনা মার্কেট এলাকার বাসিন্দা রাজিউল করিম জানান, প্রতি বছর তিনি কুরবানির গরুর চামড়া বিক্রি করে যে টাকা পান, তা দান করে দেন। এবার ১ লাখ ১০ হাজার টাকা কেনা গরুর চামড়া বিক্রি করেছেন ২৫০ টাকা পিস।

তিনি বলেন, ৯-১০ বছর আগে যে চামড়া ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হতো এখন সেটি ২৫০ টাকায় বিক্রি হয়। ছাগলের চামড়া ব্যবসায়ীরা নিতেই চান না। সেগুলো বিনামূল্যে দিয়ে দিতে হয়। সিলেটে কুরবানি দেয়া আরো চারজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা কুরবানির পশুর চামড়া মাদ্রাসায় দান করেন। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সেগুলো সংগ্রহ করে পরে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে।

সিলেট নগরের কুয়ারপাড় এলাকার বাসিন্দা এ টি এম ইসরাত বলেন, গোলাপগঞ্জে মামাবাড়িতে গরু কুরবানি দিয়েছি। গরুর চামড়া মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে দিতে চেয়েছিলাম, তারা নেননি। তাদের মতে, ভাড়া দিয়ে সিলেটে চামড়া নিয়ে খরচ ওঠে না। এজন্য তিনি চামড়া ফেলে দিয়েছেন। সিলেটের শাহজালাল চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শেখ শামীম আহমদ বলেন, সমিতির ৫০ জন সদস্য রয়েছেন। এর বাইরে কিছু মৌসুমি ব্যবসায়ীও রয়েছেন। এবার সিলেটে মোটামুটি চামড়া সংগ্রহ হয়েছে। সিলেটে গোটা হিসেবে চামড়া বেচাকেনা হয়। গ্রামাঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা চামড়াগুলোর দাম কিছুটা কম থাকে। গ্রামাঞ্চলে কুরবানি দেয়া গরুগুলোর আকার কিছুটা ছোট থাকে। শহরাঞ্চলে বড় গরু কুরবানি দেয়া হয় বলে দামও কিছুটা বেশি। আকারভেদে ৫০-৩০০ টাকা পর্যন্ত চামড়া কিনেছেন ব্যবসায়ীরা। ছাগলের চামড়া কেনা হয়েছে ১০-২০ টাকায়।

শেখ শামীম আহমদ বলেন, চামড়াগুলো প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে। সেখানেও খরচ বেড়েছে, চামড়ার দাম কম হওয়ার পেছনে সেটিও একটি কারণ। তবে যারা সরাসরি চামড়া সংগ্রহ করেন, তারা আরো কম দামে কিনে নিয়ে আসেন। এ বছর চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, এই মৌসুমে সিলেট জেলায় প্রায় ৮০ হাজার চামড়া সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

এদিকে সিলেট বিভাগে এবার ৩ লাখ ৯৪ হাজার পশু দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৯৯ হাজার ১৭২টি গরু, ১ হাজার ১৫৩টি মহিষ, ১ লাখ ৭২ হাজার ৭৪টি ছাগল ও ২১ হাজার ৬৪০টি ভেড়া।

বরিশাল প্রতিনিধি : ঈদুল আজহায় কুরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। এরপরেও বরিশালে দরপতন হওয়ায় হতাশ চামড়া সংগ্রহকারীরা। তাদের অভিযোগ, সিন্ডিকেট করে চামড়ার দাম কমিয়ে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, আর্থিক সংকট ও ট্যানারি ব্যবসায়ীদের অনীহা আর মূল্য কম দেয়ায় তারাও চামড়ার দাম কম দিচ্ছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে জেলার বিভিন্ন আড়তে লবণজাত করে চামড়া সংগ্রহের কাজ চলছে। বিগত সময়ে চামড়ার বাজারে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের আধিক্য থাকলেও এবার আড়তে আসা বেশিরভাগ চামড়াই লিল্লাহ বো?ডিং ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সংগ্রহ করা।

চামড়া সংগ্রহকারীরা জানিয়েছেন, গত কয়েক বছর ধরে চামড়ার দাম কমে যাওয়ায় এবার মাঠপর্যায়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কোনো প্রভাব নেই। আর এ কারণে কুরবানির পশুর চামড়া সরাসরি মাদ্রাসা, এতিমখানা ও লিল্লাহ বো?ডিং-এ দান করেছেন কুরবানিদাতারা।

এদিকে বরিশাল নগরীর কোনো আড়তেই এবার ছাগলের চামড়ার দেখা মেলেনি। নগরীর পদ্মাবতী এলাকার যে দুই ব্যবসায়ী চামড়া সংগ্রহ করছেন, তাদের আড়তে শুধু গরুর চামড়া আসছে।মাঠপর্যায়ে চামড়া সংগ্রহকারীরা বলছেন, ব্যবসায়ীরা ফ্রিতেও না নেয়ায় এবার ছাগলের চামড়া সংগ্রহ করেননি তারা।

চামড়া সংগ্রহকারী মাওলানা ফারুক হোসেন বলেন, কয়েক বছর আগেও বরিশালে বেশ ভালো দামে চামড়া বিক্রি করা যেত। তখন পাড়া মহল্লায় মৌসুমি ব্যবসায়ীদের বেশ তোড়জোড় ছিল। তবে সা¤প্রতিক সময়ে চামড়ার বাজারে মূল্য ধস নামায় এখন আর তাদের দৌরাত্ম্য নেই। পশুর চামড়া সহসাই মাদ্রাসার অনুকূলে দিয়ে দেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, তবে বর্তমানে এমন এক পরিস্থিতি হয়েছে যেখানে আমরা চামড়া নিয়ে আসলেই দাম নেই বলছেন ব্যবসায়ীরা। শ্রমিক দিয়ে চামড়ায় লবণ দিয়ে সংরক্ষণে খরচ বাড়ার অজুহাতে এবারে চামড়া প্রতি ২০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা দেয়ার কথা বলছেন তারা। মাঠ পর্যায়ে আমাদের চামড়া সংগ্রহের ব্যবস্থা নেই। তাই তারা যে দাম বলছেন তাতেই দিতে হচ্ছে।

চামড়া সংগ্রহকারীদের অভিযোগ, বরিশালে যারা চামড়ার ব্যবসা করছেন, তারাই মূলত সিন্ডিকেট করছেন। একটা চামড়া যেখানে গত বছর ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেটি এবার ৩০০ টাকা। সিন্ডিকেট না হলে সবাই এক দাম বলে কীভাবে?

চামড়া সংগ্রহকারী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমরা শতাধিক চামড়া নিয়ে এসেছি। কিন্তু চামড়ার যে দাম বলা হচ্ছে, সেই দরে দিলে খরচই উঠবে না। তাহলে মাদ্রাসারতো কিছুই থাকবে না। আমাদের ও বাচ্চাদের শ্রমই বৃথা যাবে। আগে যেখানে একটি বড় চামড়া বিক্রি করে দুই থেকে তিন হাজার টাকাও পাওয়া যেত, সেখানে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বলছে পাইকারি ব্যবসায়ীরা। এই রেটে বিক্রি করা তো সম্ভব না।

এদিকে বরিশালের চামড়া ব্যবসায়ী হাজী মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘সরকার ট্যানারি মালিকদের যে দাম ধরে দেয়, সেই দামে তারা আমাদের (ব্যবসায়ী) কাছ থেকে চামড়া কিনে না। সরকার যে চামড়ার দাম দিয়েছে সেটা লবণজাত আর আমরা কিনছি লবণ ছাড়া। আমরা সেই চামড়াগুলো শ্রমিক খাটিয়ে লবণ দিয়ে ট্যানারি উপযোগী করে সংগ্রহ করছি।’

জানা গেছে, ট্যানারি মালিকদের কাছে আগের আটকে থাকা পাওনা টাকা না পেয়ে চামড়া সংগ্রহ করছেন না নগরীর পদ্মাবতী এলাকার অনেক ব্যবসায়ী। তাদের দাবি, বছরের পর বছর ধরেও পাওনা টাকা না পেয়ে বেশিরভাগই যেমন ব্যবসা পরিবর্তন করছেন, তেমনি অনেকে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্বও হয়েছেন। তাই এ ব্যবসায় এখন আর কারো আগ্রহ নেই। মাত্র দুজন ব্যবসায়ী এবার কুরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ করছেন। বরিশালে এবার প্রায় ১ লাখ পশুর চামড়া সংগ্রহ হতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

অপরদিকে বরিশাল জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নুরুল আলম বলেন, ছাগলের চামড়া যত্রতত্র ফেলে যেন পরিবেশ দূষণ করা না হয়, সেজন্য জেলা প্রশাসকের সঙ্গে পাঁচটি দপ্তরের সভায় নানা দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মানুষকে সচেতন করাসহ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা যাতে এসব চামড়া সংগ্রহ করে সেই আহ্বান জানানো হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App