×

জাতীয়

শেখ হাসিনার বার্তা নিয়ে এলাকায় আ.লীগ নেতারা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৩, ০৮:১৫ এএম

শেখ হাসিনার বার্তা নিয়ে এলাকায় আ.লীগ নেতারা

ছবি: সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে হাতে আছে ছয় মাসেরও কম সময়। রাজনৈতিক দলগুলো এখন পুরোপুরি নির্বাচনমুখী। দলীয়প্রধানের নির্দেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা জনসংযোগে নেমে পড়েছেন অনেক আগেই। বিএনপি আন্দোলনে থাকলেও ভোটের প্রস্তুতি নিতে পিছিয়ে নেই দলটির নেতারা। বিশেষত. কুরবানির ঈদকে জনগণের পাশে যাওয়ার একটা উপলক্ষ হিসেবে বেছে নিয়েছেন সব দলের নেতারাই। ভোটের বার্তা নিয়ে তৃণমূলে ছুটে গেছেন তারা। এই নিয়ে আমাদের পৃথক দুটি প্রতিবেদন।

রাজনীতি এখন মাঠে। রাজপথে। গ্রামে-গঞ্জে। চায়ের কাপে। ঈদ শুভেচ্ছায়। নির্বাচনী কোলাকুলিতে। আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে শেষ ঈদ হওয়ায় নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক আওয়ামী লীগ নেতারা সবাই নিজ নিজ এলাকায়। জনগণের সুখ-দুঃখের খবর নেয়া, সাধ্যমতো পাশে দাঁড়ানো, উপহারসামগ্রী বিতরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। সঙ্গে রয়েছে দলীয়প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা- সরকারের উন্নয়ন-সাফল্য তুলে ধরে নৌকার জন্য ভোট চাওয়া। সভাপতির নির্দেশ পালনসহ এলাকায় নিজ ইমেজ বাড়ানোর চেষ্টাও করছেন নেতারা।

অবশ্য একাধিক নেতা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী মাঠ প্রস্তুত। টানা ১৪ বছর ধরেই মাঠে রয়েছে, জনগণের সুখে দুঃখে পাশে রয়েছে, এটিই আবারো জনগণকে স্মরণ করিয়ে দিতে চায় দলটি। সরকারের তৃতীয় মেয়াদের শেষ ঈদ হওয়ায় এবারের ঈদুল আজহা রাজনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্ববহ। আর এই সুযোগ কিছুতেই হাতছাড়া করতে চাননি তারা।

ঈদ শেষ হওয়ার পরও কাটেনি রেশ। রাজপথের বিরোধী দল বিএনপির আন্দোলন মোকাবিলা ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রস্তুতির জন্য বিশেষ বার্তা নিয়ে তৃণমূলে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে তারা এবারের ঈদকে উপলক্ষ করে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় রয়েছেন। আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, দলের নির্দেশে এবারের ঈদে প্রায় সব নেতাই নিজের এলাকায়। জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর পাশাপাশি তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে দলের বার্তা ও দলীয় সভাপতির নির্দেশনা পৌঁছে দিচ্ছেন তারা। অনেকেই আবার ঢাকায় ঈদ করে ঈদের পর নির্বাচনী এলকায় যাচ্ছেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদ করেন সরকারি বাসভবন গণভবনে। ঈদের তৃতীয় দিন গতকাল শনিবার সড়ক পথে গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ টুঙ্গিপাড়ায় যান তিনি। কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে নৌকার জন্য ভোট চান তিনি। এছাড়া দুই দিনের এই সফরে আজ রবিবার সকালে টুঙ্গিপাড়ার স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনসাধারণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং গোপালগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মুহম্মদ ফারুক খান, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঢাকায় ঈদ করেন। ঈদের একদিন পর নির্বাচনী এলাকায় যান তারা। নির্বাচনী এলাকায় ঈদ করেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান, দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও স¤প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয় নির্বাচনী এলাকায় ঈদ করেন। জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ঈদুল আজহা উপলক্ষে নিজের অবস্থান জানান দিতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতারা এবার বেশিরভাগই নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করছেন। দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ভোরের কাগজকে বলেন, নির্বাচনী এলাকায় ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করার পাশাপাশি সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরার নির্দেশ দিয়েছেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। সেইসঙ্গে অসহায় দিনমজুর মানুষের খোঁজ খবর নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। দলীয় প্রধানের নির্দেশনা অনুযায়ী এবার আওয়ামী লীগের এমপি, মন্ত্রীরা নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করছেন।

এদিকে অনেক জায়গায় নিজেদের মধ্যে কোন্দল রয়েছে। সেসব মেটানোরও নির্দেশনা রয়েছে। এজন্য ঈদকে বেছে নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে বিশেষ বার্তার পাশাপাশি আগামীতে নৌকা প্রতীক নিয়ে যেসব নেতা নির্বাচন করতে চান- তারা গণসংযোগের জন্য এই সময়টি বেছে নিয়েছেন। আগামী নির্বাচন নিয়ে এর মধ্যে বেশ কয়েকবার দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। সবশেষ দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে তিনি বলেন, আপনারা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে তৃণমূলের মানুষের সঙ্গে দূরত্ব কমান ও অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন করুন। আপনারা যদি মনে করেন, ঢাকায় থেকেই দলীয় টিকেট পাবেন এবং বিজয়ী হবেন, তাহলে ভুল করবেন। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও কঠিন হবে। প্রায় একই বার্তা প্রতিদিন দিচ্ছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দলীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের এ নির্দেশনা মেনে তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে যাচ্ছেন দলটির নেতারা।

সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান ভোরের কাগজকে বলেন, যেসব জায়গায় অভ্যন্তরীণ ভুল বোঝাবুঝি রয়েছে, আশা করছি এই ঈদে এসব ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটবে। দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার নির্দেশনা নিয়ে মাঠে রয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App