×

জাতীয়

যুক্তরাষ্ট্র ইন্দোপ্যাসিফিক দেশগুলোকে কাছে টানছে, ব্যতিক্রম ঢাকা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৩, ১২:০৯ এএম

যুক্তরাষ্ট্র ইন্দোপ্যাসিফিক দেশগুলোকে কাছে টানছে, ব্যতিক্রম ঢাকা
যুক্তরাষ্ট্র ইন্দোপ্যাসিফিক দেশগুলোকে কাছে টানছে, ব্যতিক্রম ঢাকা
যুক্তরাষ্ট্র ইন্দোপ্যাসিফিক দেশগুলোকে কাছে টানছে, ব্যতিক্রম ঢাকা

২০১৬ সালে ঢাকা সফরকালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (মাঝখানে) বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের (মাঝখানে) সাথে। ছবি: এএফপি

চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলায় তার ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের অংশ হিসাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল থেকে নিয়মিতভাবে রাজনৈতিক নেতাদের হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানান।

সম্প্রতি বাইডেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্য একটি রাষ্ট্রীয় নৈশভোজের আয়োজন করেন। এর একদম বিপরীত চিত্র হলো, দক্ষিণ এশিয়ায় মোদীর মিত্রদের একজন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিনা ওয়াশিংটনের অপছন্দের তালিকায় চলে গেছেন।

দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন বিশ্বব্যাংক সংক্রান্ত ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন গিয়েছিলেন, তখন বাইডেন প্রশাসনের কেউ তার সঙ্গে দেখা করতে চাননি।

দক্ষিণ এশিয়ার একটি আঞ্চলিক শক্তি এবং এর দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশকে ওয়াশিংটন ঠাণ্ডা মাথায় অবন্ধুসুলভ আচরণ প্রদর্শন করেছে। এবং এজন্য দেশটির বিরুদ্ধে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের বাতুল অজুহাত তুলেছে ওয়াশিংটন।

সাউথ চায়না মর্ণিং পোস্ট পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে ‘উইথ আই অন চায়না, ইউএস য়ুজ কান্ট্রিজ ইন ইন্দো-প্যাসিফিক ইয়েট বাংলাদেশ রিমেইনস অ্যান এক্সসেপশন’ শিরোনামের এক সংবাদে এসব তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।

ওই রিপোর্টে বলা হয়, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে, ইউএস-নেতৃত্বাধীন গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানাননি বাইডেন। একইসঙ্গে ট্রেজারি বিভাগ থেকে রাজনৈতিক বিরোধীদের জোরপূর্বক গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তুলে র‌্যাবের সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের উপদেষ্টা কাউন্সেলর ডেরেক চোলেট বলেছিলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অবক্ষয় ঢাকার সঙ্গে ওয়াশিংটনের সহযোগিতার ক্ষমতাকে সীমিত করবে। সেসময় তিনি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানান। এরপর এই সতর্কতা অনুসরণ করেই র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় ওয়াশিংটন।

গত এপ্রিলে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের এতোই অবনতি হয় যে, বাংলাদেশ থেকে ‘গণতন্ত্র উৎখাতের চেষ্টা করছে’ বলে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন শেখ হাসিনা।

[caption id="attachment_444349" align="aligncenter" width="700"]টার্গেট চীন: ইন্দো-প্যাসিফিক দেশগুলোকে কাছে টানছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্যতিক্রম বাংলাদেশ ২০১৬ সালে ঢাকা সফরকালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (মাঝখানে) বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের (মাঝখানে) সাথে। ছবি: এএফপি[/caption]

৭৫ বছর বয়সী শেখ হাসিনা তার অবসর নেয়ার জন্য কিছু সমালোচকদের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেন।

মার্কিন সফরের সময় হাসিনা বিরোধী ও হাসিনা সমর্থকদের মধ্যে ভার্জিনিয়ায় হোটেলের বাইরে সংঘর্ষ হয়েছিল। এসময় তিনি বলেছিলেন, ‌'কারণ আমি যদি না থাকি, জানি না কে ক্ষমতায় আসবে।'‌

কয়েক সপ্তাহ পরেই বাইডেন প্রশাসনের আরেকটি অপমানের মুখে পড়েন শেখ হাসিনা। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক নির্বাচনে বাধাদানকারীদের আমেরিকান ভিসা না দেয়ার ঘোষণা দেন। এর জবাবে, সর্বস্তরে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে দ্ব্যর্থহীন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকারও।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি এই জাতীয় নির্বাচনের জন্য অনুকূল বলে হাসিনার যে দাবি তা খারিজ করে দেয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে ওয়াশিংটন।

ওয়াশিংটন-ভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক আটলান্টিক কাউন্সিলের আলী রিয়াজ বলেছেন, 'দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে’- হাসিনার এমন দাবি 'স্পষ্ট প্রত্যাখ্যান' করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এ নীতি হাসিনা সরকারকে স্পষ্টভাবে টার্গেট করেনি।তিনি আরও বলেন, বড় করে দেখলে যুক্তরাষ্ট্রের এ নীতিতে ‘বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থা নিয়ে ওয়াশিংটনের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা’ই প্রতিফলিত হয়েছে ।

তবে ওয়াশিংটনের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক উইলসন সেন্টারের মাইকেল কুগেলম্যান অবশ্য ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনে লিখেছেন, বাইডেনের ‘মূল্যবোধ-ভিত্তিক’ কূটনীতি বেছে বেছে প্রয়োগ হচ্ছে। বাইডেন প্রশাসন তার মূল্যবোধ-ভিত্তিক বৈদেশিক নীতির উদাহরণ বানিয়েছে বাংলাদেশকে, যে নীতি বিদেশে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র প্রচারের ওপর জোর দেয়।

মাইকেল কুগেলম্যান এও লিখেছেন, ২০১৪ সাল থেকে মোদীর শাসনের অধীনে নয়াদিল্লির ‘গণতন্ত্র থেকে পিছিয়ে পড়া’ নিয়ে প্রকাশ্যে খুব কমই কথা বলেছে বাইডেন প্রশাসন। কিন্তু ঢাকার দিকে ‘দৃঢ় ও ধারাবাহিক’ মনোযোগ ঠিকই রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।

ওয়াশিংটনের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস-এর ম্যাথিউ ডাসের মতে, ওয়াশিংটনে মোদীর লাল-গালিচা সংবর্ধনা এই ইঙ্গিত দেয় যে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মানবাধিকার এজেন্ডা আসলে পরাশক্তির প্রতিযোগিতায় ‘পিছনে পড়ে গেছে’।

হাসিনার কঠিন, অনমীয় কৌশলগুলো সম্ভবত পরিস্থিতির কারণে সৃষ্টি হয়েছে। ১৯৪৭ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে ভারতের স্বাধীনতার পর একটি নবপ্রতিষ্ঠিত পাকিস্তানে জন্মগ্রহণ করেন হাসিনা। ১৯৭৫ সালে সেনা অভ্যুত্থানের পরে তার পিতা শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হত্যার পর তিনি নির্বাসনে যেতে বাধ্য হন।

আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে, শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালে ভারতের সহায়তায় স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

১৯৮১ সালে বাংলাদেশে ফিরে আসার পর শেখ হাসিনা বছরের পর বছর ধরে আটক এবং গৃহবন্দি থাকতে বাধ্য হন। তিনি দেশের তৎকালীন সামরিক সরকারের বিরোধিতায় রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তোলেন।অবশেষে ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা এবং ২০০১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০৯ সালে আবার জয়ী হন এবং তারপর থেকে ক্ষমতায় রয়েছেন।

শেখ হাসিনার অধীনে ১৭ কোটি মানুষের এই দেশের দ্রুত অর্থনৈতিক অগ্রগতি হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারীর আগে এক দশক ধরে বার্ষিক বৃদ্ধির হার গড়ে ৭ শতাংশ ছিল। বাংলাদেশকে ‘দারিদ্র্য হ্রাস এবং উন্নয়নের একটি অসাধারণ গল্প’ হিসাবে বর্ণনা করেছে বিশ্বব্যাংক, যেখানে আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যসীমায় দৈনিক ২.১৫ মার্কিন ডলার আয় বিবেচনায় নিয়ে দারিদ্র্য ১৯৯১ সালে ৪১.৯ শতাংশ থেকে কমে ২০১৬ সালে ১৩.৫ শতাংশে নেমে এসেছে। বিশ্বের অন্যতম অনুন্নত দেশ হিসেবে কয়েক দশক পার করে জাতিসংঘের সংজ্ঞা অনুসারে বাংলাদেশ আগামি ২০২৬ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এদিকে, ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীন-আমেরিকান প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে হাসিনা সরকার পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রেখে চলে। বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত বাংলাদেশ কৌশলগতভাবে পরাশক্তিধরদের লড়াইয়ে কোনো পক্ষ নেয়া এড়িয়ে গেছে। দক্ষিণ এশিয়াকে পূর্ব-এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সংযুক্ত করে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যে বাণিজ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট অঞ্চলে বাংলাদেশের অবস্থান।

গত এপ্রিলে ইন্দো-প্যাসিফিকের ওপর ঢাকা তার প্রথম সরকারী নীতি ঘোষণা করে। এতে ‘ন্যায় ও টেকসই উন্নয়নের’ লক্ষ্যে ‘নিয়ম-ভিত্তিক বহুপাক্ষিক ব্যবস্থা’ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানানো হয়। এ ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্র কিংবা চীনের জন্য কোনো স্পষ্ট পক্ষপাতিত্ব দেখা যায়নি। বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্কের অবনতির একটি বড় কারণ এমন অবস্থান। তবে সম্পর্ক যে সবসময় তুষারাচ্ছন্ন ছিল এমন নয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এমন প্রথম দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ছিল এবং ওয়াশিংটন ঢাকার অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদার। দুই দেশ বঙ্গোপসাগরে যৌথ সামরিক মহড়াসহ সন্ত্রাসবাদ বিরোধী সমন্বিত পদক্ষেপও নিয়েছে।

২০২০ সালে, যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন ডেপুটি সেক্রেটারি অফ স্টেট স্টিফেন বিগন বাংলাদেশকে ইন্দো-প্যাসিফিকের একটি ‘মূল অংশীদার’ এবং ‘অঞ্চলে আমাদের কাজের কেন্দ্রবিন্দু’ বলে অভিহিত করেন।

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এই ‘অংশীদারিত্ব’ বাড়ানোর জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি ইন্দো-প্যাসিফিক বিজনেস ফোরামে অংশ নেয়ার জন্য বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানান, যার লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্র এবং ইন্দো-প্যাসিফিক দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা এগিয়ে নেয়া।

কেউ কেউ বিগনের মন্তব্যকে বাংলাদেশকে চতুর্মুখী নিরাপত্তা সংলাপে কিংবা কোয়াডে যোগদানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আমন্ত্রণ হিসেবে দেখেছেন। যাতে ভারত, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়া অন্তর্ভুক্ত এবং এর কৌশলগত লক্ষ্য চীন বিরোধী বলে মনে করে বেইজিং। ২০২১ সাল থেকে বাংলাদেশ কোয়াডে যোগদানের কথা বিবেচনা করছে। তখন বেইজিং ঢাকাকে সতর্ক করে বলেছিল, এমন সিদ্ধান্ত ঢাকা-বেইজিং সম্পর্কের ‘গুরুতর’ ক্ষতি করবে। বাংলাদেশ তার প্রতিবেশী ভারতের মতো কোয়াড সদস্যপদ গ্রহণ করেনি।

ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সাবেক এশিয়া-প্যাসিফিক ডিরেক্টর জোসেফ রোজেন সাম্প্রতিক ইউএস-বাংলাদেশ উত্তেজনাকে চীনের প্রভাব বিস্তারের জন্য একটি ‘সুযোগ’ হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পশ্চাদপসরণ নিয়ে কোনো হট্টগোল না করে চীন বরং তহবিল সরবরাহ করছে।

বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করার পর এবং এই বিষয়ে পাকিস্তানের পক্ষ নেয়ার পরিবর্তে চীন ১৯৭৫ সালে ঢাকার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। সম্পর্ক ক্রমাগত উন্নতি লাভ করে এবং ২০০২ সালে দুদেশ সামরিক প্রশিক্ষণ এবং যৌথ অস্ত্র উৎপাদনে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করে।

২০১৬ সালে রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় ঢাকা চীনের নেতৃত্বাধীন বাণিজ্য ও অবকাঠামো প্রকল্পে যোগ দেয় যা এখন বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ নামে পরিচিত। বাংলাদেশ এখন গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ এ যোগদানের কথা ভাবছে। বেইজিং দাবি করেছে, ২০২১ সালে শি জিনপিংয়ের চালু করা এই উদ্যোগটি দারিদ্র্য বিমোচন, খাদ্য নিরাপত্তা এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য উপকারী অন্যান্য ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় আগ্রহী।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো অনুসারে, বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যবসায়িক অংশীদার চীন, সেইসঙ্গে তার বৃহত্তম সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগকারী এবং সামরিক সরবরাহকারী, বিমান, ট্যাঙ্কার, ফাইটার জেট এবং সাবমেরিনও যার অন্তর্ভুক্ত।

[caption id="attachment_444348" align="aligncenter" width="700"]টার্গেট চীন: ইন্দো-প্যাসিফিক দেশগুলোকে কাছে টানছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্যতিক্রম বাংলাদেশ ২৬ মার্চ, ২০২১ ঢাকায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ছবি: এএফপি[/caption]

গত ছয় মাসে বেইজিংয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঢাকা সফর করেছেন। এর মধ্যে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং হঠাৎ মধ্যরাতে ঢাকা এসেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু-এর জানুয়ারিতে সফরের ঠিক আগে এই সফর ঘটে। এরপরে চীনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান ওয়েইডং মে মাসে ঢাকা সফর করেন।

বাইডেন যিনি শেখ হাসিনাকে মূলত উপেক্ষা করেছেন, তবুও আগামী সেপ্টেম্বরে নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে আশা করা হচ্ছে বাংলাদেশী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখোমুখি হবেন তিনি। এরই মধ্যে ভারতের অতিথি হিসেবে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

ভারতীয় সাংবাদিক নয়নিমা বসু সম্প্রতি বলেছেন, মোদীই তখনকার ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনকে বাংলাদেশের ২০১৮ সালের নির্বাচনের ফলাফল ‘স্বীকার ও গ্রহণ’ করতে রাজি করিয়েছিলেন। মোদী সে সময় যুক্তরাষ্ট্রকে আশ্বস্ত করেছিলেন, শেখ হাসিনার সরকার স্থিতিশীল থাকবে এবং এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক স্বার্থের জন্য কাজ করবে এবং ঢাকা চীনকে ওপড়ে রেখে সূক্ষ্ম ভারসাম্যের খেলা চালিয়ে যাবে।

তবে নয়নিমা বসু এও বলেন, ইদানীং নয়াদিল্লির পক্ষে হোয়াইট হাউস এবং সেনেটের ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নিয়ন্ত্রণে ‘মার্কিন উদ্বেগকে প্রশমিত করা’ সহজ ছিল না।

ওয়াশিংটন এবং বেইজিং যেখানে উদ্বিগ্ন সেখানে হস্তক্ষেপ না করার বিষয়ে দৃঢ় ছিলেন শেখ হাসিনা। যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘আমেরিকা ও চীনের সম্পর্ক তাদের নিজস্ব বিষয়। আমি সেখানে নাক গলাতে যাবো কেন?’

ভাষান্তর: অভিজিৎ ভট্টাচার্য

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App