×

জাতীয়

তলিয়ে গেছে রাজধানীর অনেক এলাকা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৩, ১০:১৬ পিএম

তলিয়ে গেছে রাজধানীর অনেক এলাকা

শনিবার বিকেল থেকে বৃষ্টির ফলে রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকা তলিয়ে যায়। মৌচাক এলাকায় ছবিটি তুলেছেন ভোরের কাগজের রিপোর্টার হাসনাত আসিফ কুশল

তলিয়ে গেছে রাজধানীর অনেক এলাকা

রাজারবাগ পুলিশ লাইনস এলাকায় ছবিটি তুলেছেন স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী তানজির আহামেদ ফাহিম

তলিয়ে গেছে রাজধানীর অনেক এলাকা

দুর্ভোগে নগরবাসী বৃষ্টি আরো দুদিন অব্যাহতের পূর্বাভাস

কুরবানির ঈদের দিন থেকে থেমে থেমে ঝরছে বৃষ্টি। যে কারণে কুরবানি দিতে গিয়েও যেমন সমস্যায় পড়তে হয়েছে দেশবাসীকে, তেমনি ঈদ আনন্দও কিছুটা ফিকে হয়েছে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের। তার ওপর শনিবার (১ জুলাই) দুপুরের পর ঢাকার আকাশ কালো হয়ে নেমে আসে অন্ধকার, তার পরে তুমুল বর্ষণ। এ যেন বর্ষার ভরা যৌবন। জানালায় কিংবা বারান্দায় দাঁড়িয়ে এই বর্ষণ কারো কারো জন্য বৃষ্টিবিলাস হলেও দুর্ভোগ হয়েছে পথচলতি মানুষের। বেশি অসুবিধায় পড়েন পথচারী, নিম্ম অঞ্চল বা বস্তিবাসীরা। গত তিনদিনের বৃষ্টিতে তাদের ঘরের ভেতর পানি জমে গেছে। বয়ষ্ক ও বাচ্চাদের নিয়ে কোন রকমে চৌকির ওপরে পাততে হয়েছে সংসার। তলিয়ে গেছে রান্নার চুলা ও টয়লেট। একে কুরবানির ঈদের ছুটি থাকায় কোনো কাজকর্ম নেই, তার ওপর ভারী বৃষ্টিতে বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ায় এক অবর্ণনীয় অবস্থার মধ্যে পড়েছেন তারা।

এদিকে অবিরাম বৃষ্টিতে জমা পানিতে হেড লাইট জ্বালিয়ে দূরন্ত গতিতে ছুটছে কিছু কিছু গাড়ি। আর ভারি বৃষ্টিতে রাজধানীর নিচু এলাকাসহ বেশ কিছু জায়গায় জমে গেছে পানি। রাজধানীর হাতিরঝিল, কারওয়ান বাজার, মালিবাগ, শান্তিনগর, কাকরাইল, মৌচাক, বাড্ডা, রামপুরা, ধানমন্ডিসহ বেশ কিছু জায়গায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতার। এদিকে, পানি জমায় পোয়াবারো রিকশা ও সিএনজি ড্রাইভারদের। ২০ টাকার পথ ১০০ টাকা হাকছে রিকসা, আবার সিএনজি তো আরো বেশি, ১০০-১৫০ টাকার পথ ৪০০-৫০০ টাকা চাইছে তারা।

[caption id="attachment_444328" align="aligncenter" width="1200"] রাজারবাগ পুলিশ লাইনস এলাকায় ছবিটি তুলেছেন স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী তানজির আহামেদ ফাহিম[/caption]

এদিকে, রাজধানীর গণমাধ্যম ও যেসব বেসরকারি অফিস আদালত খোলা তার কর্মীদের আসা যাওয়াতে সমস্যা সৃষ্টি হয় এই ভারী বর্ষণে। কেউ ভিজে আবার কেউ বেশি ভাড়া দিয়ে রিকশা বা সিএনজিতে করে অফিসে আসা বা ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। ভারী বর্ষায় রাজধানীর অনেক কাঁচা বাজার, মাছ বাজার এমনকি ফুটপাতও তলিয়ে যেতে দেখা গেছে।

এছাড়া, আগারগাঁও থেকে জাহাঙ্গীর গেট যেতে নতুন রাস্তায়, খামারবাড়ি থেকে ফার্মগেট, ফার্মগেট-তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকা, মোহাম্মদপুরের কিছু অংশ, মেরুল বাড্ডা, ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকা, গুলশান লেকপাড় এলাকার সংযোগ সড়কের কয়েকটি স্থানে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পুরান ঢাকার বংশাল, নাজিমুদ্দিন রোড পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

বৃষ্টির পানি সরে যাওয়ার জন্য উপযুক্ত ড্রেন না থাকা এবং নিয়মিত ড্রেন পরিস্কার না করাসহ নগরপিতাদের খামখেয়ালিপনাকেই দুষছেন রাজধানীবাসীরা। তার ওপরে কুরবানির ঈদের ময়লা আবর্জনা, বর্জ ড্রেনে ঢুকে পানি নিষ্কাশনের পথ কিছুটা রুদ্ধ হয়ে যাওয়ায় সহজে পানি সরছে না বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।

এদিকে, আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ রবিবারও সারাদেশে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে আবারো রাজধানীর বহু এলাকা জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় থাকায় ঢাকাসহ সারা দেশে বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। গতকাল শনিবার সকাল নয়টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মৌসুমি বায়ুর অক্ষ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় ও উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।

আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বলেন, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে ও তাপমাত্রা বাড়তে পারে। সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ঢাকায় ৯১ মিলি মিটার, সিলেটে ৯৯ মিলি মিটার, ময়মনসিংহে ৭৪ মিলি মিটার, রংপুরে ৪৫ মিলি মিটার, বরিশালে ২৫ মিলি মিটার, খুলনায় ১৫ মিলি মিটার, চট্টগ্রামে ১২ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App