×

জাতীয়

রাত পোহালেই ঈদ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৩, ০৯:৩৫ পিএম

রাত পোহালেই ঈদ

ছবি-প্রতীকী

রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা। বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে রাজধানী ঢাকা সহ সারাদেশে মুসলিম সম্প্রদায় ঈদুল আজহা উদযাপন করবে। মহান আল্লাহর অপার অনুগ্রহ লাভের আশায় ঈদের জামাত শেষে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সামর্থ্য অনুয়ায়ী পশু কুরবানি করবেন। নামাজ শেষে মুসল্লিদের অনেকেই যাবেন কবরস্থানে। চিরবিদায় নেয়া তাদের স্বজনদের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে অশ্রুসজল চোখে এই আনন্দের দিনে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে আল্লাহর দরবারে আকুতি জানাবেন। দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানালেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসী সহ বিশ্বের সকল মুসলমানদের আন্তরিক অভিনন্দন ও মোবারকবাদ জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, মহান আল্লাহ্র প্রতি গভীর আনুগত্য ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল-আজহা। ‘আজহা’ অর্থ কুরবানি বা উৎসর্গ করা। ঈদুল-আজহা উৎসবের সাথে মিশে আছে চরম ত্যাগ ও প্রভু প্রেমের পরাকাষ্ঠা। মহান আল্লাহর নির্দেশে স্বীয় পুত্র হযরত ইসমাইল (আঃ) কে কুরবানি করতে উদ্যত হয়ে হযরত ইবরাহীম (আঃ) আল্লাহ প্রতি অগাধ ভালোবাসা, অবিচল আনুগত্য ও অসীম আত্মত্যাগের যে সুমহান দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন- তা ইতিহাসে অতুলনীয়। রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, কুরবানি আমাদের মাঝে আত্মদান ও আত্মত্যাগের মানসিকতা সঞ্চারিত করে, আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর সঙ্গে সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নেয়ার মনোভাব ও সহিষ্ণুতার শিক্ষা দেয়। প্রধানমন্ত্রী পবিত্র ঈদুল-আজহার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে নিজ নিজ অবস্থান থেকে জনকল্যাণমুখী কাজে অংশ নিয়ে বৈষম্যহীন, সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন। তিনি তাঁর বাণীতে বলেন, ‘আমি প্রত্যাশা করি, প্রতিবারের মতো এবারও ঈদ ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলের জীবনে সুখ ও আনন্দের বার্তা বয়ে আনবে।’ শেখ হাসিনা আরো বলেন, হযরত ইবরাহীম (আঃ) মহান আল্লাহ উদ্দেশ্যে প্রিয় বস্তুকে উৎসর্গের মাধ্যমে তাঁর সন্তুষ্টি লাভে যে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন, তা বিশ্ববাসীর কাছে চিরকাল অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় হয়ে থাকবে। গতবারের মতো এবারও করোনার বিস্তার রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ উদযাপন করবেন মুসলমানরা। পশু কুরবানির ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করতে হবে। সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান জামাত কোথায় কখন এবার হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৭টায়। জাতীয় ঈদগাহে নামাজ আদায় করার জন্য ঢাকাবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, এবার কিশোরগঞ্জের শত বছরের ঐতিহ্য ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানের ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে এই ঈদ জামাত। প্রতিবছরের মতো এবারও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করতে ৫টি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৭টা থেকে পর্যায়ক্রমে জামাতগুলো অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত সকাল ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমাম হিসেবে থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা এহসানুল হক। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম আব্দুল হাদী। দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মুহীউদ্দিন কাসেম। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন (অব.) হাফেজ ক্বারী মোঃ আতাউর রহমান। তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়। ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মাওলানা আবু সালেহ পাটোয়ারী। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের প্রধান খাদেম মোঃ শহিদ উল্লাহ। চতুর্থ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়। এতে ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মাওলানা মো. আনিসুজ্জামান সিকদার। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম হাফেজ মোঃ রুহুল আমিন। পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল পৌনে ১১টায়। এতে ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম হাফেজ মোঃ জহিরুল ইসলাম। এই ৫টি জামাতে যদি কোনো ইমাম উপস্থিত না থাকেন তবে বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মাওলানা জাকির হোসেন। আবহাওয়া প্রতিকূল হলে জাতীয় ঈদগাহের ঈদের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৭টা থেকে পরিবর্তিত হয়ে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররমে সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। সারাদেশে বিভাগ, জেলা, উপজেলা, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এবং সরকারি সংস্থাসমূহের প্রধানগণ জাতীয় কর্মসূচির আলোকে নিজ নিজ কর্মসূচি প্রণয়ন করে ঈদ উদযাপন করবেন। উল্লেখ্য, প্রায় চার হাজার বছর আগে মহান আল্লাহ্ পাকের সন্তুষ্টি লাভের জন্য হজরত ইবরাহীম (আ.) নিজ পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)’কে কোরবানি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্ রাব্বুল আ’লামিনের অপার কুদরতে হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কুরবানি হয়ে যায়। হজরত ইবরাহীম (আ.)-এর ত্যাগের মহিমার কথা স্মরণ করে বিশ্বব্যাপী মুসলিম সম্প্রদায় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে আল্লাহ পাকের অনুগ্রহ লাভের আশায় পশু কোরবানি করে থাকে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App