×

জাতীয়

যানবাহনের চাপ বেড়েছে, বাস ট্রেন ও লঞ্চে ভিড়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৩, ০৮:৪৫ এএম

যানবাহনের চাপ বেড়েছে, বাস ট্রেন ও লঞ্চে ভিড়

ছবি: ভোরের কাগজ

নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছে রাজধানীর মানুষ। স্বজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষ ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে সব মহাসড়কে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার জুড়ে কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। তবে চাপ বাড়লেও অনেকটা স্বস্তি নিয়েই বাড়ি ফিরছে মানুষ। যাত্রীবাহী বাস ছাড়াও খোলা ট্রাক, মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসেও লাখ লাখ মানুষ ঢাকা ছাড়ছে।

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হওয়ায় সব যানবাহন থেমে থেমে চলছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কেও যাত্রীর পাশাপাশি যানবাহনের চাপ বেড়েছে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে যানজট বা যাত্রী ভোগান্তি নেই বলে জানা গেছে।

মহাসড়কে যানবাহন চলাচল নির্বিঘœ রাখতে তৎপর রয়েছে হাইওয়ে পুলিশ। বাড়তি ভাড়া আদায় বন্ধে রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলোয় কাজ করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) টিম। গতকাল সোমবার ভোর থেকেই ঘরমুখো মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে রাজধানীর বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল, বাস কাউন্টার এবং রেলস্টেশন। শেষ কর্মদিবস হওয়ায় দুপুরের পর থেকে সড়ক-মহাসড়কে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বাড়ে। যাত্রীবাহী বাস ছাড়াও খোলা ট্রাকে করে বাড়ি ফিরছে মানুষ। এছাড়া মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসেও অনেকে বাড়ি ফিরছে।

টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সড়কে কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। থেমে থেমে গাড়ি চলছে। এতে উত্তরবঙ্গের যাত্রীদের কিছুটা অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে। এই সড়কে কুরবানির পশুবাহী ট্রাকের কারণে ঢাকামুখী লেনেও ধীর গতি। সোমবার ভোররাত থেকেই ঢাকামুখী লেনে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ দেখা যায়। এতে নলকা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম গোলচত্বর পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। তা সামাল দিতে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোয় জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করছে।

গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকায় ফ্লাইওভারের ওপরে ও নিচে সোমবার সন্ধ্যার দিকেও যানবাহনের দীর্ঘ লাইন ছিল। তবে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহনের চাপ তুলনামূলক কম থাকায় বেশ স্বস্তি নিয়েই মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে যাত্রীরা গন্তব্যে যেতে পারছে। আজ মঙ্গলবার থেকে যানবাহনের চাপ বাড়বে বলে জানিয়েছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাড়ির চাপ বাড়লেও নির্বিঘেœই ঘরে ফিরছে মানুষ। কোথাও যানজট নেই। কুমিল্লার যাত্রী মোশারফ হোসেন জানান, যানজট না থাকায় রাজধানীর টিকাটুলি মোড় থেকে বাসে মাত্র দেড় ঘণ্টায় কুমিল্লায় পৌঁছে যাচ্ছে

বাসগুলো। হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা জোনের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ জানিয়েছেন, মহাসড়কে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কোনো যানবাহন থামানো হচ্ছে না। ২২টি থানা ও ফাঁড়ির ৬৬টি পেট্রোল টিমের পাশাপাশি ইমার্জেন্সি সামাল দিতে ৩০টি কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে। ৫টি সরকারি ও ১২টি বেসরকারি রেকার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া অ্যাম্বুলেন্সও প্রস্তুত রয়েছে।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কেও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কের সাভার, নবীনগর ও বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডে সড়ক ব্যবস্থাপনা ভালো না হওয়ায় যানবাহন ধীর গতিতে চলছে। যাত্রীর জন্য অপেক্ষমান বাসগুলো বিশৃঙ্খলভাবে রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে রাখায় এই যানজট বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গার্মেন্টকর্মীরা সোমবার রাত থেকেই ঢাকা, গাজীপুর ও সাভার ছাড়তে শুরু করেছেন।

এদিকে ঈদ সামনে রেখে যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় প্রতিরোধে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) বিভিন্ন বাস টার্মিনাল পরিদর্শন করেছে। বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার গতকাল দুপুরে মহাখালী বাস টার্মিনাল পরিদর্শন করেন। তিনি এ সময় বলেন, বাড়তি ভাড়া নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলে পরিবহন কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের পদচারণায় সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল সরগরম হয়ে উঠেছে। কীর্তনখোলা-২ লঞ্চের মালিক আবুল কালাম খান জানান, গত রবিবার থেকে সদরঘাটে যাত্রীদের উপস্থিতি বেড়েছে। নির্ধারিত সময়ে লঞ্চগুলো ছেড়ে যাচ্ছে। লঞ্চের সব কেবিন আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। এখন যেসব যাত্রী আসবে- নির্ধারিত ভাড়া দিয়েই তারা বরিশাল, পটুয়াখালী, বড়গুনাসহ বিভিন্ন রুটে যাবে। আজ থেকে সদরঘাটে ভিড় বাড়বে।

ঈদযাত্রায় পুরো প্রস্তুত রয়েছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটের ফেরি চলাচল। এসব নৌরুটে যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে ২৭টি ফেরি ও ৩১টি লঞ্চ চলাচল করছে। এই রুটে চাপ বাড়লেও যানজট ও ভোগান্তি নেই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App