×

জাতীয়

ঋণ পরিশোধ করেও বৃদ্ধকে যেতে হলো জেলে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৩, ১০:০৪ পিএম

ঋণ পরিশোধ করেও বৃদ্ধকে যেতে হলো জেলে
এনজিও প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক বিপিডি প্রগতি কর্মসূচি থেকে দশ বছর আগে দেড় লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন ৯৪ বছর বয়সী সাইজুদ্দিন। ঋণের সব টাকা পরিশোধ করেও ব্র্যাক বিপিডি প্রগতি কর্মসূচির করা এক মামলায় তাকে যেতে হয়েছে জেলে। বৃদ্ধকে অমানবিক হয়রানি করায় প্রতিষ্ঠানটিকে দশ লাখ টাকা জরিমান করেন হাইকোর্ট। আগামী তিন মাসের মধ্যে সাইজুদ্দিনকে এই টাকা দেয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ। এ সংক্রান্ত শুনানি শেষে বুধবার (২১ জুন) এ আদেশ দেন হাইকোর্ট। এসময় সাইজুদ্দিনের পক্ষে শুনানি করেন-অ্যাডভোকেট লুৎফর রহমান। তিনি বলেন, সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করার পরও ব্র্যাক বিপিডি প্রগতি কর্মসূচি মামলা প্রত্যাহারে গাফিলতির কারণে সাজাপ্রাপ্ত হন সাইজুদ্দিন। প্রায় ৪০ দিন জেল খাটেন তিনি। বৃদ্ধকে অমানবিক হয়রানি করার জন্য ব্র্যাক বিপিডি প্রগতি কর্মসূচিকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। এই টাকা বৃদ্ধকে তিন মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। আদালত সূত্রে জানা যায়, ব্র্যাক বিপিডি প্রগতি কর্মসূচি গাজীপুরের কাপাসিয়ার শাখা থেকে ২০১২ সালে ২৪ জানুয়ারি দেড় লাখ টাকা ঋণ নেয় সাইজুদ্দিন। জামানত হিসেবে দিয়েছিলেন ব্ল্যাঙ্ক (খালি) চেক। নিয়মিত কিস্তিতে ৭৫ শতাংশের বেশি টাকা পরিশোধও করেন তিনি। অল্পকিছু টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে জামানত দেয়া খালি চেকে এক লাখ ছাব্বিশ হাজার সাতশত পনের টাকা লিখে বৃদ্ধের ব্যাংক হিসাবে জমা দেয় ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক বিপিডি। চেকটি ডিজঅনার হলে ২০১৩ সালের ৯ জুন সাইজুদ্দিনকে আসামি করে মামলা করে প্রতিষ্ঠান। এই মামলায় তিনি নিম্ন আদালত থেকে জামিন নেন। পরে তিনি ঋণের অবশিষ্ট পাওনা পরিশোধ করেন। ঋণের সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে মর্মে বৃদ্ধকে একটি প্রত্যয়নপত্র দেন প্রতিষ্ঠানটি। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল মামলা প্রত্যাহার করা হবে। মামলা প্রত্যাহার না করে সাইজুদ্দিনকে হয়রানি করা হয়েছে এমন কথা বলে এডভোকেট মো. লুৎফর রহমান বলেন, মামলা প্রত্যাহার না করায় গাজীপুরের যুগ্ম দায়রা জজ আদালত আসামি সাইজুদ্দিনকে ১ বছরের কারাদণ্ড এবং চেকের দ্বিগুণ অর্থ ২ লাখ ৫৩ হাজার ৪৩০ টাকা অর্থদণ্ড দেন। বিষয়টি সাইজুদ্দিন জানতেন না। সাজা পরোয়ানা মূলে বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে নিম্ন আদালতে চেকের টাকার অর্ধেক জমা দিয়ে আপিল করেন। দেরি হওয়ায় আপিল গ্রহণ করেনি নিম্ন আদালত। পরে ২০১৫ সালে হাইকোর্টে ফৌজদারি রিভিশন মামলা দায়ের করেন বৃদ্ধ। ওই বছরের ১৮ অক্টোবর থেকে তিনি জামিনে রয়েছেন।এই মামলার আজ(২১ জুন) শুনানি শেষ হয়। বর্তমানে তার বয়স ৯৪ বছর চলছে। শুনানি শেষে সাইজুদ্দিনকে মামলা থেকে খালাস দেয়া হয়েছে। আপিল করার সময় জমা করা টাকা ১০ দিনের মধ্যে ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেন আদালত।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App