সিলেট ও রাজশাহী সিটির ভোট উপলক্ষে ইভিএম ব্যবহারের জন্য বিশেষ নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্র জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল শনিবার এ পরিপত্র জারি করেছেন ইসির উপসচিব আতিয়ার রহমান। তিনি জানান, সুনির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্রটি জারি করা হয়েছে।

আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ভোট। অন্যান্য সিটি নির্বাচনের মতো এ দুটিতেও ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে।

উপসচিব আতিয়ার রহমান জানান, সিলেট ও রাজশাহী সিটির ভোট উপলক্ষে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) কর্মকর্তারা সরজমিন উপস্থিত থেকে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের সব প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা দেবেন। এ ছাড়া, ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ইভিএম কাস্টমাইজেশনসহ নির্বাচন উপযোগী করে যথাসময়ে রিটার্নিং অফিসারের কাছে হস্তান্তর করবেন। পরিপত্রে ইসি জানিয়েছে, ইভিএম ব্যবহার পদ্ধতি সম্পর্কে প্রার্থী এবং ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক প্রচার করা প্রয়োজন। ইভিএম ব্যবহার যেহেতু একটি কারিগরি বিষয় এবং নতুন ধরনের ব্যবহার কার্যকারিতা রয়েছে, এ জন্য সব প্রার্থী, তাদের নির্বাচনী এজেন্ট, পোলিং এজেন্ট ও ভোটারদের মধ্যে প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রিসাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারদের সুবিধার্থে ইভিএম ব্যবহার পদ্ধতিবিষয়ক নির্দেশিকার প্রয়োজনীয় সংখ্যক কপি পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট থেকে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা অর্থাৎ প্রিসাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারদের জন্য দুদিনব্যাপী এবং পোলিং অফিসারদের জন্য একদিনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটারদের জন্য একদিনব্যাপী ভোটার শিক্ষণ বা মক ভোটিংয়ের আয়োজন করতে বলা হয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় ভোটার শিক্ষণ কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে ভোটদানের জন্য দাঁড়ানো লাইনে অথবা

ভোটকেন্দ্রের চৌহদ্দির ভেতরে ব্যালট ইউনিটের রেপ্লিকার সাহায্যে ভোটার প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

এছাড়া নিরাপত্তার সঙ্গে ইভিএমের পরিবহন, সংরক্ষণ ও কার্যকারিতা যাচাই করা, ইভিএমগুলো ইলেকট্রনিক ডিভাইস হওয়ায় মেশিনগুলো সারিবদ্ধভাবে রেখে যথাযথ নিরাপত্তার সঙ্গে পরিবহন করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ভোটের আগের দিন অন্যান্য নির্বাচনী মালামালসহ বিভিন্ন প্রিসাইডিং অফিসারকে বুঝিয়ে দিতে হবে। প্রিসাইডিং অফিসাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারসহ অবশ্যই সঠিকতা যাচাই করবেন। কোনো ত্রæটি-বিচ্যুতি পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রিজাইডিং অফিসার রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানাবেন। রিটার্নিং অফিসার কন্ট্রোল রুমকে জানিয়ে ত্রæটি-বিচ্যুতি সংশোধন অথবা প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা নেবেন।

প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের একজন করে কারিগরি সদস্য সহযোগিতা করবেন। এ জন্য রিটার্নিং অফিসার তাদের প্রয়োজনে লজিস্টিক সাপোর্ট দেবেন। নির্বাচন কমিশন থেকে পাঠানো ও মাঠপর্যায়ের আইডিইএ (২য় পর্যায়) প্রকল্পে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীর সমন্বয়ে গঠিত মোবাইল কারিগরি টিম সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে অবস্থান করবে। ভোটের দিন বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ইভিএমের কারিগরি সমস্যা আনুষঙ্গিক লজিস্টিক সহায়তা নিশ্চিত করতে তারা তৎপর থাকবেন।

ইভিএমে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের কার্ডের এবং পিন, পাসওয়ার্ডের গোপনীয়তা রক্ষার কথা বলা হয়েছে নির্দেশিকায়। ইভিএমের জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের কার্ড এবং মেশিন চালু করার পিন পাসওয়ার্ড প্রিসাইডিং অফিসারকে সরবরাহ করা হবে, যার গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। এছাড়া সুষ্ঠুভাবে সিটি নির্বাচন শেষ করার উদ্দেশে কেন্দ্রে ব্যবহৃত অডিট কার্ড ও পোলিং কার্ডের একটি সামগ্রিক ব্যাকআপ রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিসে সংরক্ষিত থাকবে।

নির্বাচনের আগের দিন ইভিএম যাচাই করার কথাও নির্দেশনায় বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ভোটের আগে বিভিন্ন প্রার্থীর এজেন্টদের সামনে ইভিএম সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথাও বলেছে কমিশন।