×

জাতীয়

জীবাশ্ম জ্বালানিতে নির্ভরতা বাড়িয়েছে বায়ু দূষণের হুমকি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৩, ০৫:২২ পিএম

জীবাশ্ম জ্বালানিতে নির্ভরতা বাড়িয়েছে বায়ু দূষণের হুমকি

বায়ুদূষন প্রতিরোধ ও পরিবেশ সংরক্ষণে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে। জৈব জ্বালানি পোড়ানোর ফলে বায়ুতে বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হচ্ছে যা বায়ুর গুণগত মান নষ্ট করছে। জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা বায়ু দূষণ ও জ্বালানি নিরাপত্তায় হুমকি বাড়িয়েছে।

বক্তারা বলেন, জৈব জ্বালানি পোড়ানোর ফলে বায়ুতে বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হচ্ছে যা বায়ুর গুণগত মান নষ্ট করছে। দ্বৈত নীতি থেকে সরে না আসলে পরিবেশের যেমন উন্নতি হবে না, তেমনি নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন বাড়বে না। নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার ঘটলে পরিবেশের উন্নয়ন হবে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নেও সফলতা আসবে। নির্মল বায়ু নবায়নযোগ্য জ্বালানি এখনকার সময় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন-যা কিনা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার প্রধান পদক্ষেপ হবে।

শনিবার (১৭ জুন) প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের সেমিনার কক্ষে ‘নির্মল বায়ু এবং জ্বালানী নিরাপত্তায় নবায়নযোগ্য শক্তির প্রসার’ বিষয়ক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) ও আরবান প্রোগ্রাম, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ যৌথভাবে এই বৈঠকের আয়োজন করে। ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদারের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল ও বিশেষ অতিথি হিসেবে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) পরিচালক (অ্যাডমিন) মো. জাকির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জ্বালানি গবেষণা কেন্দ্রের (সিইআর) পরিচালক শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানির অপার সম্ভাবনা রয়েছে কিন্তু কিছু চ্যালেঞ্জও আছে। বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎসগুলোর মধ্যে প্রধানতম উৎস হলো সোলার ও বায়ুকল এগুলোকে সঠিক গবেষণার মাধ্যমে কাজে লাগাতে হবে। বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি লক্ষ্যমাত্রা পৌঁছাতে পারবে বলে আমাদের বিশ্বাস করতে হবে এবং এটা অর্জন করার জন্য কাজ করতে হবে।

বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বায়ু দূষণের ভয়াবহতা উল্লেখ করে বলেন, নির্মল বায়ু মানুষের অধিকার কিন্তু ঢাকা শহরের অধিবাসীরা এ অধিকার থেকে বঞ্চিত। জৈব জ্বালানি পোড়ানোর ফলে বায়ুতে বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হচ্ছে যা বায়ুর গুণগত মান নষ্ট করছে। তাই জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিশ্চিত করা গেলে সবার জন্য নির্মল বায়ু এবং জ্বালানী নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, জ্বালানি একটি কৌশলগত পণ্য। টেকসই নবায়নযোগ্য জ্বালানী অভাবে এবং জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতার ফলে বর্তমানে জ্বালানি নিরাপত্তা হুমকির মুখে। জ্বালানি নিরাপত্তায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিকল্প নেই। অপরদিকে, আমাদের মনে রাখতে হবে জ্বালানি নিরাপত্তা দিতে গিয়ে যেন পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণগুলোর মধ্যে ৭০ শতাংশ দায়ী জীবাশ্ম জ্বালানি। এ বিষয়ে সব পর্যায়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের উপ-পরিচালক মঞ্জু মারীয়া পালমা বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার এক অপরিহার্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার এগিয়ে আসা উচিত। নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহারের উৎস অনুসন্ধানে বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠানগুলোকে উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা রাখতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান, আর্থ সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মাদ মামুন মিয়া, বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোটের (বিএনসিএ) সদস্য সচিব ও সেভ আওয়ার সির মহাসচিব মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক, ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফিক অ্যান্ড মেরিটাইম ইনস্টিটিউটের মোহন কুমার দাস, বাংলাদেশ প্রাণিবিজ্ঞান সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. গুলশান আরা লতিফা, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র লেকচারার (জ্যেষ্ঠ প্রভাষক) মাহমুদা ইসলাম, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদা পারভীন বক্তব্য রাখেন।

এছাড়া, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) গবেষক, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের প্রতিনিধি, বিএনসিএ, পরিবেশ উদ্যোগ, পিউর আর্থ, ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস, সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ, ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফিক অ্যান্ড মেরিটাইম ইনস্টিটিউট ও পরিবেশবাদী সংস্থার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App