×

জাতীয়

ভিসির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে দুদক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৩, ১০:১২ এএম

ভিসির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে দুদক

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সদ্য সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান মন্টুর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট বলে দাবি করেছেন প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান মন্টু। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগে দুর্নীতিসহ অবৈধ আয়ের মাধ্যমে ঢাকার পূর্বাচলে ১০ কাঠা জমি, ১৭/জি উত্তরায় ২টি ফ্ল্যাট, জার্মানি ও ইংল্যান্ডে বাড়ি এবং নিজ জেলা বরিশালেও বিপুল সম্পদ গড়েছেন বলে লিখিত অভিযোগে দাবি করেন বাকৃবির সহকারী অধ্যাপক ইসফাক আহাম্মেদ পরিচয়ের এক ব্যক্তি।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার কৃষিবিদ ড. ওয়ালিউল্লাহ জানান, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সিইসি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক ইসফাক আহাম্মেদ নামে কোনো শিক্ষক নেই। এর আগে গত ৩১ মে দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক (দৈনিক ও সাম্প্রতিক অভিযোগ সেল) উত্তম কুমার মণ্ডল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই অভিযোগ তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবরে গত ৩১ মে পাঠিয়েছেন। ওই চিঠিতে দুদক কর্মকর্তা আরো উল্লেখ করেন, বাকৃবি সদ্য সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান মন্টুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ চলতি বছরের ২৯ মার্চ দুদক ময়মনসিংহ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে দায়ের হয় (যাহার অভিযোগ নং- ২৮/২০২৩)।

এই অভিযোগে সহকারী অধ্যাপক ইসফাক আহাম্মেদ আরো দাবি করেন, প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান মন্টু চাকরি বিধি লঙ্ঘন করে ২০১২ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিটের আঞ্চলিক কার্যালয়ে গোন্ডেন রাইচ প্রকল্পে পরামর্শক (কনসালট্যান্স) হিসাবে কাজ করেছেন। এতে অবৈধভাবে প্রায় ৮ কোটি টাকা আয় করে বিদেশে পাচার করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে কনসালট্যান্সি কাজে যাওয়া আসায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের যানবাহন ও জ্বালানি ব্যবহার করে প্রায় ২৫ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি করেছেন।

একই সঙ্গে তিনি ভিসি হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি বাসা দখলে রেখে এবং পাহারা বসিয়ে প্রায় ৭৬ লাখ টাকা ক্ষতি করেছেন। এছাড়াও তিনি নিজের আত্মীয়কে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ঠিকাদারি কাজ করিয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন।

অস্তিত্বহীন এই অধ্যাপক আরো দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগে বাণিজ্য করে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান মন্টু। এছাড়াও প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান মন্টু নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনামধন্য কয়েকজন শিক্ষককে ছাত্রলীগ লেলিয়ে দিয়ে লাঞ্ছিত করেছেন বলেও লিখিত অভিযোগে দাবি করেন অধ্যাপক ইসফাক। তবে এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভুয়া বলে দাবি করেছেন প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান মন্টু।

তিনি বলেন, যিনি নিজেকে সহকারী অধ্যাপক দাবি করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট ও ভুয়া অভিযোগ করেছেন, তিনি নিজেই অস্তিত্বহীন। এই নামে কোনো শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই, আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখেন। তবে পূর্বাচলে আমার ছয় ডেসিমেল জমি আছে, বরিশালে পৈত্রিকসূত্রেপ্রাপ্ত জমিতে ছোট একটি টিনশেড বাড়ি আছে এবং ঢাকার দক্ষিণ কমলাপুরে পৈত্রিকসূত্রেপ্রাপ্ত জমি আছে। এর মধ্যে বোনদের অংশের কিছু জমি আমি কিনেছি। এর বাইরে পৃথিবীর কোথাও আমার বাড়ি নেই।

এ সময় চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে ধান গবেষণায় পরামর্শক হিসেবে কাজ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি নিয়ে সেখানে আমি তিন বছর পরামর্শক ছিলাম। এটা নিয়ম মেনেই করেছি। তাছাড়া আমার কোনো ঠিকাদার আত্মীয় নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাবেক ভিসি প্রফেসর আলী আকবরের সময় ২০২০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন শতাধিক কর্মচারীর নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। এরপর আমি দায়িত্ব নিয়ে দুটি পৃথক নিয়োগ কমিটি গঠনের মাধ্যমে এই নিয়োগ সম্পন্ন করি। এতে কোনো দুর্নীতির সুযোগ ছিল না।

তিনি দাবি করেন, মূলত আমার দায়িত্ব পালনকালে কেউ হয়তো কোনো সিদ্ধান্তে আমার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছেন। তাই হয়তো হয়রানি করার জন্যই আমার বিরুদ্ধে এই মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে আমি মনে করি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App