×

জাতীয়

শিক্ষায় বিজ্ঞান, মানবিকতা ও সৃজনশীলতার সম্মিলন ঘটাতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৩, ০৭:৩০ পিএম

শিক্ষায় বিজ্ঞান, মানবিকতা ও সৃজনশীলতার সম্মিলন ঘটাতে হবে

ছবি: ভোরের কাগজ

গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গবেষণায় জোর দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, পরিবর্তিত বিশ্বে টিকে থাকতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে শিক্ষার্থীদেরকে গবেষণা ও দক্ষতায় জোর দিতে হবে। তবে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি শিক্ষার সঙ্গে মানবিকতা ও সৃজনশীলতার সম্মিলন ঘটাতে হবে। তবেই একটি স্মার্ট ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। এই দেশকে যারা জঙ্গিবাদের রাষ্ট্র করতে চায় তাদের প্রতিহত করতে হবে। জঙ্গিবাদ নয়, যোগ্যতা ও মানবিকতার সমন্বয়ে সোনালি ভবিষ্যৎ তৈরি ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নতুন প্রজন্মকে তৈরি হতে হবে। এ মাটি নয় জঙ্গিবাদের, এ মাটি মানবতার।

মঙ্গলবার (১৩ জুন) দুপুরে হোটেল আগ্রাবাদের হল রুমে আয়োজিত কোডার্স ট্রাস্ট চট্টগ্রাম ক্যাম্পাস উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নতুন প্রজম্মকে দক্ষ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে, তাদেরকে পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে খাপ খাইয়ে নেওয়ার যোগ্য করে তুলতে সরকার কাজ করছে। যুগের চাহিদা অনুযায়ী পাঠ্যক্রম সৃষ্টি করে বিভিন্ন সফট স্কিলস শেখার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। যার ফলাফল সুদূরপ্রসারী।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতারকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা বাড়ান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গবেষণায় বরাদ্দ বাড়িয়ে দিয়েছেন। গবেষণা করতে হবে। গবেষণার মাধ্যমে গবেষক তৈরি করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের যে অভাবনীয় অগ্রযাত্রা হুট করে আসমান থেকে পড়েনি। দেশ আজ ডিজিটাল। আজ সবার হাতে হাতে মোবাইল। আমাদের জীবনের একটি অনেক বড় অংশ ডিজিটাল প্রযুক্তি দখল করে আছে। তাই সবাইকে প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে দক্ষ হতে হবে। এই খাতে গবেষণা করতে হবে। ইন্ডাস্ট্রিকে এগিয়ে আসতে হবে। গবেষনায় বিনিয়োগ করতে হবে। বিনিয়োগ করলেই রিটার্ন আসবে তা ভাবা ছাড়তে হবে।

স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শিল্প যোগাযোগ সব দিকে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পৃথিবীর আর কোনো দেশ বাংলাদেশের মতো বিনামূল্যে কোভিডের টিকা দিতে পারেনি, টিকা দেওয়ার ফলে স্কুলের শিক্ষার্থীরাও আজ নিরাপদ। করোনা পরিস্থিতি দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম। যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সব দিক দিয়ে এগিয়ে গেছে দেশ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। ২০০৭-২০০৮ অর্থবছরের বাজেট আর এখন ২০২৩ সালের বাজেট ৯ গুণ বেশি। আমরা কোথায় থেকে কোথায় পৌঁছেছি। দারিদ্র কমেছে, শিক্ষার হার বেড়েছে। ২০১০ সালে কারিগরি শিক্ষার পরিমান ছিল ১ শতাংশ। এখন ১৭ শতাংশ। আর এই ১৭ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি করতে চাইলে কোডার্সট্রাস্ট সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে পারবে। বাংলাদেশের যে উন্নয়নের অভিযাত্রা সে জায়গায় আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করা দরকার।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরিন আখতার বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। আমাদের শিক্ষার্থীদের স্কিল ডেভলপমেন্ট প্রয়োজন। আমরা চাইবো আমাদের ছেলে-মেয়েরা আইটি সেক্টরে নিজেদের স্কিল বাড়িয়ে এগিয়ে যাবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড.মশিউর রহমান বলেন, তথ্য ও প্রযুক্তি নিয়ে আমাদের যে ভাবনা তার আমূল এবং বিপ্লবী পরিবর্তন দরকার। দেশকে ডিজিটাইলাইজড করতে হলে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতকে উন্নত করে কাজে লাগাতে হবে। বিজ্ঞানমনস্কক ও ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

কোডার্স ট্রাস্ট বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আজিজ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোহাম্মদ আমিনুর রহমান, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। আমিনুল ইসলাম বলেন- আমরা জ্ঞান, বিজ্ঞান চর্চার একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই। এজন্য দক্ষতা বাড়াতে হবে। দক্ষতা অর্জন করা ছাড়া কিছুই করা যায় না। উন্নতি করা যায় না। আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত ও ডিজিটাল দেশে পরিণিত করবেন। সেই উদ্দেশ্যে নিয়ে আমরা সবাই একত্রিত হয়ে কাজ করছি। সেই লক্ষ্যে দেশের প্রথম স্মার্ট জেলা হিসেবে চট্টগ্রামকে তৈরি করা হচ্ছে। রোবটিক্স,সাইন্স ক্লাব প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। এখন নতুন নতুন স্কিল প্রয়োজন আমাদের শিক্ষা কার্যক্রমে। কোডাসর্ ট্রাস্টের যে ট্রেনিং সেগুলো ইউনিয়ন পর্যায়ে পৌঁছিয়ে দিতে চাই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App