×

জাতীয়

দুই মাসের মধ্যে ঘটনা তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৩, ০৫:১৫ পিএম

নওগাঁয় র‌্যাব হেফাজতে জেসমিনের (৪৫) মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের কমিটিকে দুই মাস সময় বেঁধে দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, এটা স্পর্শকাতর(সেনসিটিভ) ম্যাটার। বারবার সময় দেয়া হবে না। দুই মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে।

আদালতে তদন্ত কমিটির পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষের মাস সময় আবেদনের প্রেক্ষিতে এই নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (১৩ জুন) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ সংক্রান্ত শুনানি হয়। এসময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক।

শুনানির শুরুতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস আদালতকে বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। উচ্চ পর্যায়ের কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এভিডেন্স(সাক্ষ্য-প্রমাণ) সংগ্রহ করেছেন। আরো আনুষঙ্গিক কাজ রয়েছে। তদন্ত শেষ করতে দুই মাস সময় প্রয়োজন। এসময় রিটকারী আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক সময় আবেদনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, তারা আদালতের আদেশের এক মাস দুই দিন পর কমিটি গঠন করেছে। এখানে অনেক সময় ব্যয় হয়েছে। দুই মাস সময় দেয়া ঠিক হবে না।

মনোজ কুমারের আর্জি হাইকোর্ট শুনলেও কার্যকর করেনি। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ করে হাইকোর্ট দৃঢ় ভাষায় বলেন, দুই মাস সময় দিচ্ছি। দুই মাস কিন্তু দুই মাসই। এসময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে। এটা সেনসিটিভ ম্যাটার। বারবার সময় দেয়া হবে না।

গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, দাপ্তরিক কাজে ২২ মার্চ বুধবার রাজশাহী থেকে নওগাঁয় যাচ্ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক এনামুল হক। পথে দেখা পান র‌্যাবের একটি টহল দলের। তিনি নিজের একটি সমস্যার কথা টহল দলের ইনচার্জকে বলেন। সঙ্গে সঙ্গে র‌্যাব অভিযান চালিয়ে গত বুধবার নওগাঁ ভূমি অফিসের সহকারী সুলতানা জেসমিনকে আটক করে। র‌্যাবের হাতে আটকের পর অসুস্থ হয়ে পড়লে সুলতানা জেসমিনকে প্রথমে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহী নগরের রাজপাড়া থানায় তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন এনামুল হক। সুলতানা জেসমিন তখন অচেতন অবস্থায় হাসপাতালের আইসিইউতে। পরদিন শুক্রবার তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। জেসমিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনিসহ কয়েকজন বাদীর পরিচয় ও পদবি ব্যবহার করে ভুয়া ফেসবুক আইডি খোলেন। এরপর চাকরি দেয়ার নামে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে টাকাপয়সা হাতিয়ে নিয়েছেন।

এ ঘটনায় গত র‌্যাব হেফাজতে জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক। এ রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, র‌্যাবের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়। এ সংক্রান্ত শুনানিতে জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে গত ৫ এপ্রিল উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে ওই ঘটনায় জড়িত র‌্যাব সদস্যদের দায়িত্ব থেকে আপাতত সরিয়ে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। কমিটিতে জেলা জজ পদ মর্যাদার একজন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে রাখতে বলা হয়। তদন্ত সম্পন্ন করে কমিটিকে ৬০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়। তদন্তকালীন সময়ে জেসমিনকে গ্রেপ্তারের সঙ্গে র‌্যাবের যেসব সদস্য জড়িত ছিলেন তাদের দায়িত্ব পালন থেকে সরিয়ে রাখতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ঘটনা তদন্তে হাইকোর্টের আদেশে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App