×

জাতীয়

ঈদের জন্য উল্টো রথযাত্রা একদিন এগিয়ে আনল ইসকন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৩, ০৮:২৭ পিএম

ঈদের জন্য উল্টো রথযাত্রা একদিন এগিয়ে আনল ইসকন

ছবি: সংগৃহীত

২০ জুন জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব শুরু হচ্ছে আগামী ২০ জুন। প্রতিবছর আষাঢ়ের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে রথযাত্রা হয়। এর ৯ দিন পরে হয় উল্টো রথযাত্রা। এবার উল্টোযাত্রা ২৮ জুন। কিন্তু ২৯ জুন পবিত্র ঈদুল আজহা থাকায় একদিন আগে অর্থাৎ ২৭ জুন ইসকন ঢাকায় উল্টো রথযাত্রার আয়োজন করেছে। উল্টো রথযাত্রার মাধ্যমে এ উৎসবের পরিসমাপ্তি ঘটবে। এ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকায় আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) বরাবরের মতো এবারও অগ্নিহোত্র যজ্ঞ (বিশ্বশান্তিকল্পে), আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পদাবলী কীর্তন ও ধর্মীয় নাটকসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। রবিবার ইসকন স্বামীবাগ আশ্রমে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়।

মতবিনিময় সভায় ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী এসব কথা জানিয়ে বলেন, আগামী ২০ জুন রথযাত্রার উদ্বোধন করবেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতয়ি হাইকমিশনার শ্রী প্রণয় ভার্মা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তিথি অনুযায়ী ২৮ জুন উল্টো রথযাত্রা। কিন্তু আগামী ২৯ জুন ঈদুল আজহা থাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে একদিন এগিয়ে ২৭ জুন উল্টো রথযাত্রা উৎসব পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসকন। উল্টো রথযাত্রায় প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস জগন্নাথ দেব হলেন জগতের নাথ বা অধীশ্বর। জগৎ হচ্ছে বিশ্ব আর নাথ হচ্ছেন ঈশ্বর। তাই জগন্নাথ হচ্ছেন জগতের ঈশ্বর। তার অনুগ্রহ পেলে মানুষের মুক্তিলাভ হয়। জীবরূপে তাকে আর জন্ম নিতে হয় না। এ বিশ্বাস থেকেই রথের ওপর জগন্নাথ দেবের প্রতিমা রেখে রথ নিয়ে যাত্রা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। ২০ জুন সকালে বিভিন্ন মাঙ্গলিক আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে শুরু হবে রথযাত্রার মূল অনুষ্ঠান। এর মধ্য রয়েছে হরিনাম সংকীর্তন, বিশ্বশান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আলোচনা সভা, পদাবলি কীর্তন, আরতি কীর্তন, ভাগবত কথা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ভগবত গীতা পাঠ, ধর্মীয় নাটক মঞ্চায়ন। ঢাকার স্বামীবাগের আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) সকালে ইসকন আশ্রমে বিশ্বশান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞের মাধ্যমে রথ উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। দুপুরে স্বামীবাগ ইসকন আশ্রমে এক আলোচনা সভা হবে। সেখানে সরকারের মন্ত্রী, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠনের নেতারা উপস্থিত থাকবেন। ইসকনের স্বামীবাগ আশ্রমে বিশ্বশান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞ ও আলোচনা সভা শেষে দুপুর ৩টায় সেখান থেকে রথসহ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু হবে।

সুবিশাল বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহযোগে শ্রীশ্রীজগন্নাথ, বলদেব ও সুভদ্রা মহারানীর শ্রীবিগ্রহ স্বামীবাগ আশ্রম থেকে জয়কালী মন্দির, ইত্তেফাক মোড়, শাপলা চত্ত্বর, দৈনিক বাংলা মোড়, রাজউক ভবন, গুলিস্তান, পুলিশ হেড কোয়াটার, সরকারী কর্মচারী হাসপাতাল, হাইকোর্ট মাজার, দোয়েল চত্বর, শহীদ মিনার, জগন্নাথ হল, পলাশী হয়ে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে নেওয়া হবে এবং ২৭ জুন মঙ্গলবার উল্টোরথ যাত্রার দিন একই পথে (বিপরীত দিকে) রথ ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে স্বামীবাগ আশ্রমে আনা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে ইসকন স্বামীবাগ আশ্রমের অধ্যক্ষ শ্রী চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী বলেন, রথযাত্রার দিন পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি নিরাপত্তার জন্য ইসকনের সেচ্ছাসেবক দল কাজ করবেন। বিভিন্ন দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালনের উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ধর্ম প্রচার কিছুটা কঠিন হলেও অসুবিধা হচ্ছে না। আমরা ভক্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাম কীর্তন করে আসি। যেখানে যেমন পরিবেশ সেখানে সেভাবেই মানিয়ে নেই। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সুপ্রাচীন বৈদিকযুগের আদর্শের ভিত্তিতে ইসকন প্রতিষ্ঠিত। যা প্রায় ৫০০ বছর পূর্বে বিশ্ব মানবতার জগৎ শিক্ষক ও বাঙালি জাতির গৌরব শ্রীচৈতন্য দেবের দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। শ্রীচৈতন্যদেবের অহিংস নীতি প্রতিষ্ঠার দ্বারা বিশ্বভ্রাতৃত্বের মাধ্যমে একটি আদর্শ সমাজ গড়ে তোলাই ইসকনের আদর্শ ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App