×

জাতীয়

বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় অভিমুখে বিক্ষোভ ১৯ জুন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৩, ০৬:২৫ পিএম

বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় অভিমুখে বিক্ষোভ ১৯ জুন

রবিবার সকালে পুরানা পল্টনের মেহরাব প্লাজায় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে গণতন্ত্র মঞ্চ। ছবি: ভোরের কাগজ

অসহনীয় লোডশেডিং এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট সমাধানের দাবিতে ১৯ জুন মন্ত্রণালয় অভিমুখে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। একই সঙ্গে গত ৪-৭ জুন পর্যন্ত দিনাজপুর অভিমুখে অনুষ্ঠিত রোডমার্চে ক্ষমতাসীন দলের হামলার প্রতিবাদে সোমবার রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে গণতন্ত্র মঞ্চ।

রবিবার (১১ জুন) সকালে পুরানা পল্টনের মেহরাব প্লাজায় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, শহীদুল্লাহ কায়সার, সাকিব আনোয়ার, শাহনাজ রানু, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, কাজী মো. নজরুল, গনসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, বাচ্চু ভুঁইয়া, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, মাহবুব জামান কাদেরী, জেএসডির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির বহ্ণি শিখা জামালী ও আকবর খান উপস্থিত ছিলেন।

সাইফুল হক বলেন, অসহনীয় লোডশেডিং এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট সমাধানের দাবিতে আগামী ১৯ জুন বেলা ১১টায় আমরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় অভিমুখে বিক্ষোভ করবো। এছাড়া, রোডমার্চে হামলা ও বাধার প্রতিবাদে আমরা সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করবো।

দিনাজপুর অভিমুখে অনুষ্ঠিত রোডমার্চে হামলা ও বাধা প্রদানের ঘটনাবলী তুলে ধরে সাইফুল হক বলেন, ‘ওই সব হামলার ঘটনা প্রমাণ করে আওয়ামী লীগ সরকার এখন গণআতঙ্কে ভুগছে। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ-মিছিলেও তারা বেসামাল হয়ে পড়েছে। এখনো তারা যে দমন করেই গদি টিকিয়ে রাখতে চায় তাও পরিস্কার। এই কাজে প্রশাসনকে তারা দলীয় প্রতিষ্ঠান হিসাবে ব্যবহার করতেই যে তৎপর আমাদের গত ৪-৭ জুনের রোডমার্চের ঘটনাবলীও তা আরেকবার প্রমাণ করেছে।

জামায়াতকে সমাবেশের অনুমতি নিয়ে প্রশ্ন দীর্ঘ ১০ বছর পর হঠাৎ করে মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতাকারী দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া নিয়ে সরকারের প্রতি প্রশ্ন তুলেছে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। তারা বলছেন, সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার ও রাষ্ট্র সংস্কারের দাবিতে বিরোধী দলগুলোর করা চলমান আন্দোলনকে আবারো জামায়াতি ব্র্যান্ডিংয়ের চেষ্টা করে নিজেদের দেশি-বিদেশি পক্ষগুলোকে তুষ্ট করতে চায় সরকার। বিষয়টিকে ‘সরকারের দুরভিসন্ধি’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন তারা।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, জামায়াতের ব্যাপারটা বিস্ময়কর। সরকার এতটাই দ্বিধান্বিত যে, কী করবে বুঝতেই পারছে না। কারণ জামায়াতের লোকজন যখন অনুমতি চাইতে গেছে, তখন তাদের গ্রেপ্তার করা হলো। আবার দেড় ঘণ্টার মধ্যে ছেড়েও দিয়েছে। পরে সমাবেশের অনুমতিও দিয়েছে। এর চাইতে সরকারের অস্থিরতা বেশি কী দেখবেন? রাজনৈতিকভাবে তারা একটা সমস্যাও মোকাবিলা করতে পারেনি, তারা আবার গায়ের জোরে নির্বাচন করতে চায়।

তিনি আরো বলেন, গণতন্ত্র মঞ্চ সেরকম লড়াই করতে চায় যেখানে সবার অধিকার নিশ্চিত হবে। এটাকে ধর্মের ভিত্তিতে বিভেদ করা হবে না। জামায়াতকে তারা এতোদিন কেন অনুমতি দেয়নি? এই প্রশ্নগুলো মানুষের মধ্যে নতুন করে দেখা দিয়েছে। আমরা সরকারের কাছে এর উত্তর চাই।

বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, জামায়াত সমাবেশের অনুমতি চাইতে গেলে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। আবার গতকাল (শনিবার) তারা সরকারের অনুমতি নিয়ে সমাবেশ করেছে। আবার সরকারি দলের সাধারণ সম্পাদক বললেন- বিএনপির উসকানি ও মদদ পেয়ে জামায়াত সমাবেশ করেছে। প্রশ্ন হচ্ছে আপনি তাদের ১০ বছর পর অনুমতি (সমাবেশ) দিয়েছেন, আবার বলছেন বিএনপি তাকে উসকানি দিয়ে রাজপথে নামাচ্ছে। সরকার যে অসংলগ্ন আচরণ করছে, নানা বিষয়ে সরকারের যে অস্বস্তি, এটা তার বহিঃপ্রকাশ।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, সভা-সমাবেশ করার অধিকার সবার আছে। কাউকে না করতে দেওয়া হচ্ছে সরকারের অগণতান্ত্রিক আচরণ। এখানে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটা হলো, গত ১৫ বছর ধরে আমরা সরকারের একটি রাজনৈতিক অবস্থান দেখছি পাচ্ছি। সেটি হলো জামায়াতকে তাদের শত্রু বলে চিহ্নিত করে আসছে। তারা যেকোনো আন্দোলনকে জামায়াতি নাম দিয়ে ব্র্যান্ডিং করেছে।

তিনি আরো বলেন, আজকে বাংলাদেশের আন্দোলন হচ্ছে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন, রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের আন্দোলন, সংবিধান সংস্কার করার আন্দোলন। সেই আন্দোলনকে আবারও জামায়াতি ব্র্যান্ডিং দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে, যেটা আজকের সংবাদ মাধ্যমে এসেছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন- জামায়াতকে অগ্নি সন্ত্রাসের জন্য নামানো হয়েছে। তার মানে হচ্ছে বিরোধী দলের পুরো আন্দোলনকে আবারও জামায়াতের ব্র্যান্ডিং করে, সন্ত্রাসের ব্যান্ডিং করে সরকার তার দেশি এবং বিদেশি পক্ষগুলোকে তুষ্ট করতে চাচ্ছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App