×

জাতীয়

খাদ্যে পুষ্টি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৩, ০১:৩৯ পিএম

খাদ্যে পুষ্টি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ

ছবি: ভোরের কাগজ

খাদ্যে পুষ্টি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ

খাদ্যে পুষ্টি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, জীবন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভোক্তার দোরগোড়ায় ভেজালমুক্ত নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ গৃহীত হয়।

এই আইন বাস্তবায়নে ও সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।

রবিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারের একটি হোটেলে ‘খাদ্য নিরাপদ এবং পুষ্টিকর রাখা, ক্ষতি রোধ করা’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে আয়োজিত ১০ম আন্তর্জাতিক নিরাপদ খাদ্য ফোরাম অনুষ্ঠানে তিনি এসব বলেন। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করেছে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। অনুষ্ঠানে তিনি এসব বলেন। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করেছে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।

সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরে এসে আমাদের সংবিধান উপহার দেন। যেখানে তিনি অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসার মতো মৌলিক অধিকারের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। খাদ্য মানুষের মৌলিক অধিকারগুলোর মধ্যে অন্যতম। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হচ্ছে সব নাগরিকের খাদ্যের চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা করা। এছাড়া জনগণের পুষ্টি, উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধনকে রাষ্ট্রের প্রাথমিক দায়িত্ব হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সব নাগরিকের কর্মক্ষমতা এবং সুস্থ জীবন-যাপনের প্রয়োজনে খাদ্য, পুষ্টি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। এরই ধারাবাহিকতায় জীবন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভোক্তার দোড়গোড়ায় ভেজালমুক্ত নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ গৃহীত হয়। এই আইন বাস্তবায়নে ও সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।

মন্ত্রী বলেন, আজকের এই আয়োজন পুষ্টি সমৃদ্ধ নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে বৈশ্বিক ও সম্মিলিত অঙ্গীকারের একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। খাদ্য নিরাপদতা সুস্থ্য, সমৃদ্ধ, কার্যকর জাতি বিনির্মানের অন্যতম পূর্ব শর্ত।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু আজকের অনুষ্ঠানটি নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক বিভিন্ন পর্যায়ের অংশীজন এবং নীতি নির্ধারকদের মধ্য একটি মতবিনিময়ের ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে, তাই আমি তাদের আহ্বান জানাই, দেশের খাদ্য নিপদতার জন্য যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সেগুলোর উপর যথাযথ আলোকপাত করার জন্য।

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ দেশের খাদ্য নিরাপদতা নিশ্চিতে প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকায় কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, তবে এটা শুধু একটি কর্তৃপক্ষ বা মন্ত্রণালয় দিয়ে করা সম্ভব নয়। এটি অংশীদারিত্বমূলক কার্যক্রম। যেখানে কার্যকর নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা সৃষ্টিতে সবাইকে একটি প্ল্যাটফর্মে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি কাজগুলো যথাযথ ও যৌক্তিকভাবে করতে হবে। তা না হলে আমরা যে সুস্থ, সবল ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বপ্ন দেখছি, যাদের হাত ধরে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে উঠবে, তা বাস্তবায়ন করা খুব কঠিন।

তিনি আরো বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে বহুমুখী সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য আমাদের বিস্তৃত ও কার্যকর পদক্ষেপ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। যা সমস্ত খাদ্যগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করবে। সেজন্য যথাযথ গবেষণা ও উন্নয়ন প্রয়োজন। সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার জন্য প্রয়োজন যথাযথ বিনিয়োগ। এ ক্ষেত্রে ডিজিটাল ও স্মার্ট বিনিয়োগের কথা আমরা ভেবে দেখতে পারি।

আশাবাদ ব্যক্ত করে মন্ত্রী বলেন, এই ফোরামে অনুষ্ঠিত আলোচনা ও এজেন্ডাভিত্তিক সেমিনারে দেশের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের পথ প্রশস্ত করবে।

নিরাপদ খাদ্য কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান কাইউম সরকার বলেন, বাংলাদেশের খাদ্যসমূহের মান বৃদ্ধি এবং এ খাতে বৈদেশিক বাণিজ্য বৃদ্ধিতে রোডম্যাপ প্রণয়নে এই ফোরাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে। ফোরামটি কৃষি ব্যবসায়ীদের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হিসাবে কাজ করবে যাতে আইএফসি-এর বিভিন্ন খাদ্য নিরাপত্তা অনুশীলনের উপর ভিত্তি করে খাদ্যকে নিরাপদ, আরও পুষ্টিকর এবং স্থিতিস্থাপক করার কৌশল তারা রপ্ত করতে পারেন বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে সহায়তা পেয়ে দেশের কৃষি খাতের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে। কৃষি ব্যবসা শিল্পে বেসরকারি ও সরকারি খাতের ব্যবসায়ীদের সাথে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে, ফোরামটি শুধু বাংলাদেশেই নয়, অন্যান্য উদীয়মান বাজারেও খাদ্য খাতের উন্নয়নে সরকারের প্রচেষ্টায় অবদান রাখবে।

অনুষ্ঠানে খাদ্য নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে বাংলাদেশের লক্ষ্য বৈশ্বিক ক্ষুধা ও মানব উন্নয়ন সূচকে তার র‌্যাঙ্কিং উন্নত করতে, পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা করে কীভাবে খাদ্যের মান উন্নত করে এবং অপচয় কমিয়ে রপ্তানি সুবিধা বাড়ানো যায় তার উপর আলোচনা করা হয়।

এবারের ১০ম আন্তর্জাতিক এই ফোরামে ২৪টি দেশের ৪৩ জন আইএফসি প্রতিনিধি, নীতিনির্ধারক, শীর্ষ খাদ্য উৎপাদক, নির্মাতা, খুচরা বিক্রেতা, পর্যটন কোম্পানি, কোল্ড চেইন লজিস্টিক সরবরাহকারী, ভোক্তা সংস্থা এবং অন্যান্য মূল স্টেকহোল্ডারসহ ৩০০ জন প্রতিনিধিসহ অংশগ্রহণ করবেন।

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ আইএফসি'র নিরাপদ খাদ্য প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App