মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ থেকে বাহিনীর সুনাম ও ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখতে নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য সঠিকভাবে পালনের আহ্বান জানিয়েছেন আনসার ও গ্রাম প্রতিরা বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল একেএম আমিনুল হক।

২৩তম ব্যাচ নবীন ব্যাটালিয়ন আনসারদের ছয় মাসের মৌলিক প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই আহ্বান জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার (৮ জুন) গাজীপুরের সফিপুরে আনসার ভিডিপি একাডেমিতে এ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাহিনীটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খোন্দকার ফরিদ হাসান, একাডেমির ভারপ্রাপ্ত কমান্ড্যান্ট, উপমহাপরিচালক ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

নবীন ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যদের উদ্দেশ্যে আনসার ডিজি বলেন, প্রশিক্ষণলদ্ধ জ্ঞান, মেধা, শ্রম ও দতা কাজে লাগিয়ে আনসার ও গ্রাম প্রতিরা বাহিনীকে আপনারা অনন্য উচ্চতায় এগিয়ে নিয়ে যাবেন। সুশৃঙ্খল বাহিনীর গর্বিত সদস্য হিসেবে পেশাগত ক্ষেত্রে আত্মনিবেদিত থেকে একটি মর্যাদাসীন ও সুদৃঢ় অবস্থানে এ বাহিনীকে দাঁড় করাতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবেন।

তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ থেকে বাহিনীর সুনাম ও ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখতে নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করে আপনারা দেশ ও জাতির সার্বিক উন্নয়নে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সম হবেন।

এর আগে, ইয়াদ আলী প্যারেড গ্রাউন্ডে সকাল নয়টায় কুচকাওয়াজ শুরু হয়। অশ্বারোহী দলের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে মাঠের পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে আগমন করেন প্রধান অতিথি। লাল গালিচায় মোড়ানো সুসজ্জিত খোলা সবুজ জিপে তিনি প্রতিটি কন্টিনজেন্ট পরিদর্শন করেন। পরে প্যারেড কমান্ডার উপপরিচালক মো. জাহিদ হোসেনের নেতৃত্বে কন্টিনজেন্টগুলো ছয় সারিতে মার্চপাস্ট করে প্রধান অতিথিকে অভিবাদন জানায়।

পরে নিজ নিজ ধর্মগ্রন্থের দিকে হাত তুলে দৃঢ় মনোবলে বাংলাদেশের সংবিধানের প্রতি অটল থেকে দেশ ও দশের মানুষের সেবায় নিজের জীবন উৎসর্গ করার শপথ নেন প্রশিক্ষণার্থীরা। তাদের মধ্যে হতে শ্রেষ্ঠ প্রশিার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন আনসার ডিজি। মোট ৪৭৯ জন নবীন ব্যাটালিয়ন আনসার প্রশিক্ষণার্থীর মধ্যে ড্রিলে শ্রেষ্ঠত্বের পুরস্কার অর্জন করেন মুরাদ হোসেন রাহাদ, ফায়ারিংয়ে সেরা মো. সেলিমুজ্জামান সেতু আর সব মিলিয়ে চৌকস প্রশিক্ষণার্থীর পুরস্কার লাভ করেন খোদা বক্স মৃধা।

উল্লেখ্য, ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যরা পার্বত্য চট্টগ্রামে দুর্গম এলাকার গহীন জঙ্গলে নিয়মিত টহল দেয়া ছাড়াও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আঞ্চলিক সন্ত্রাসীদের দমন ও শান্তি-শৃঙ্খলা রায় পরিবার পরিজন রেখে অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে। বর্তমানে ১৬টি ব্যাটালিয়নের প্রায় সাড়ে ৬ হাজার সদস্য এককভাবে ৬০টি ক্যাম্প ও অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে ১৮৬টি ক্যাম্পে কর্মরত থেকে ‘অপারেশন উত্তরণ’ এই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আঞ্চলিক সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ১৯ জন সদস্য নিহত হয়েছে।

এছাড়া, সমতলেও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে মোবাইল কোর্ট ও ভেজাল বিরোধী অভিযানেও দায়িত্ব পালন করছে আনসার সদস্যরা।