×

জাতীয়

প্লাস্টিক দূষণ নিয়ন্ত্রণে আইনের কঠোর প্রয়োগ চায় টিআইবি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৩, ০৭:৩৪ পিএম

বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ২০০২ সালে বাংলাদেশে পলিথিন শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধ হলেও ‘পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫’-এ সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ও লেমিনেটেড প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ না হওয়ায় ফলে ‘প্লাস্টিক দূষণ’ অব্যাহত থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে রবিবার (৬ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে অনতিবিলম্বে প্লাস্টিকের বেআইনি উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও ব্যবহার রোধে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫-এর ৬ (ক) ধারা সংশোধন, দূষণ-কর আরোপ এবং প্লাস্টিক দূষণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পের জবাবদিহির লক্ষ্যে পরিবেশ আইনের কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানায় সংস্থাটি।

বৈশ্বিক মোট প্লাস্টিক দূষণের ২.৪৭ শতাংশ বাংলাদেশে হয়ে থাকে উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে আইন করা হলেও কার্যকর প্রয়োগের অভাবে প্লাস্টিক থেকে পরিবেশ দূষণ শুধু অব্যাহতই নয় বরং উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি-ই পেয়েছে। প্লাস্টিক বর্জ্যসহ ব্যাপকভাবে বর্জ্য ফেলার কারণে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা ও কর্ণফুলী নদী বাংলাদেশের অন্যতম দূষিত নদীতে পরিণত হয়েছে। প্লাস্টিক দূষণের কারণে আমাদের বাস্তুতন্ত্র ও ভূমির ব্যাপক দূষণ ঘটায় গাছপালা ও অন্যান্য প্রাণীর অস্তিত্ব আজ হুমকির সম্মুখীন। এছাড়া জৈব রাসায়নিক সারে প্রচুর পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক থাকায় তা কৃষিকাজে ব্যবহারের ফলে স্থায়ীভাবে মাটি দূষিত হচ্ছে।

পরিবেশ দূষণ রোধে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ, এনভায়রনমেন্টাল পারফরমেন্স ইনডেক্স (ইপিআই)-২০২২ এর এই তথ্য উল্লেখ করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন ও ব্যবহার হ্রাস এবং প্লাস্টিক বর্জ্যের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য প্লাস্টিক দূষণসংক্রান্ত বিধিমালা অবিলম্বে প্রণয়ন করতে হবে। পাশাপাশি সম্ভাব্য ক্ষেত্রসমূহে প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ ও সীমিত করাসহ প্লাস্টিকের পরিবেশবান্ধব প্রাকৃতিক বিকল্প এবং বায়েডিগ্রেডেবল প্লাস্টিক উৎপাদনে প্রণোদনা ও উৎসাহের জন্য কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। একই সঙ্গে প্লাস্টিকের বেআইনি উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও ব্যবহার রোধে দূষণ-কর প্রয়োগসহ আইনের কঠোর প্রয়োগ, প্রয়োজনে বিদ্যমান আইন সংস্কার করে শাস্তির পরিমাণ বৃদ্ধি ও তার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় বিশ্ব ব্যাংক প্রণীত একটি অ্যাকশন প্ল্যানের পাশাপাশি জেলা কার্যালয় ও প্রতিষ্ঠানসমূহে ‘সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক’ ব্যবহার বর্জনের যে নির্দেশনা দেয়া করেছে, তা যেন শুধু ‘কাগজে-কলমে’ সীমাবদ্ধ না থাকে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানায় টিআইবি।

একই সঙ্গে প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় গৃহীত সব কর্মকাণ্ডে সাধারণ জনগণসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের অর্থবহ সচেতনতা ও কার্যকর অংশ নেয়া নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি প্লাস্টিক দূষণ রোধে ব্যবহৃত তহবিলসহ সার্বিকভাবে পরিবেশ সুরক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি, আইন ভঙ্গকারী এবং প্লাস্টিক দূষণের সঙ্গে জড়িত ব্যাক্তি, প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পের কার্যকর জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য টিআইবি জোর দাবি জানায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App