×

জাতীয়

ঘুরে দাঁড়ানোর বাজেট চাই

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৩, ০৮:৪৮ এএম

ঘুরে দাঁড়ানোর বাজেট চাই

রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন

আবাসন খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট এন্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন বলেছেন, বিশ্বের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে একরকম অর্থনৈতিক সংকট চলছে। সেই প্রভাব পড়েছে দেশের আবাসন খাতেও। ভোরের কাগজকে তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতির চাপে মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। ফলে ফ্ল্যাট কিনতে আগ্রহী হচ্ছে না। ইতোমধ্যে আমাদের ফ্ল্যাট বিক্রি অনেক কমে গেছে। তাই এ সংকটকালীন সময়ে আবাসন খাতের ঘুরে দাঁড়ানোর বাজেট প্রত্যাশা করছি।

আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, এ খাতের নির্মাণ উপকরণের অস্বাভাবিক দাম বেড়ে যাওয়া, তহবিল সংকট, পর্যাপ্ত ঋণ না পাওয়া এবং ড্যাপজনিত জটিলতার মতো বিড়ম্বনায় আবাসন খাতের মন্দাভাব চলছে। তাই ঘুরে দাঁড়াতে এবারের বাজেটেও আমরা আবাসন খাতের জন্য বিনা প্রশ্নে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ চাই। তিনি বলেন, আবাসন খাতের সা¤প্রতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৫-১০ বছরের জন্য গৃহায়ন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ ফ্ল্যাট, প্লট, বাণিজ্যিক ভবন ও বিপণিবিতানে বিনিয়োগের জন্য বিনা প্রশ্নে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুবিধা বহাল রাখলে দেশের জাতীয় সম্পদ ও প্রবৃদ্ধি বাড়বে।

রিহ্যাব সভাপতি বলেন, এবারের বাজেটে আমাদের দাবির মধ্যে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- ফ্ল্যাট ও প্লট রেজিস্ট্রেশন সংশ্লিষ্ট কর ও ফি সর্বমোট যেন ৭ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। এ বিষয়ে আমাদের প্রস্তাব হচ্ছে- ফ্ল্যাট ও প্লট রেজিস্ট্রেশন সংশ্লিষ্ট ফি ও করসমূহ হ্রাস করে ৭ শতাংশ হার নির্ধারণ করা। এটি কমিয়ে অনেকটা এভাবে করা দরকার। যেমন- গেইন ট্যাক্স ২ শতাংশ, স্ট্যাম্প ফি ১.৫ শতাংশ, রেজিস্ট্রেশন ফি ১ শতাংশ, স্থানীয় সরকার কর ১ শতাংশ এবং মূল্য সংযোজন কর ১.৫ শতাংশ। সব মিলিয়ে হবে ৭ শতাংশ।

তিনি বলেন, বর্তমানে রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত ব্যয় অত্যাধিক হওয়ায় ফ্ল্যাট বা প্লট ক্রেতারা রেজিস্ট্রেশন করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। ফলে সরকার এই খাত থেকে যথাযথ রাজস্ব প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সুতরাং অবিলম্বে রেজিস্ট্রেশন ব্যয় হ্রাস করা প্রয়োজন।

রিহ্যাব সভাপতি বলেন, এর বাইরেও আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে আরো কিছু প্রস্তাব দিয়েছি। এর মধ্যে রয়েছে- নামমাত্র রেজিস্ট্রেশন ব্যয় নির্ধারণ করে আবাসন খাতে ‘সেকেন্ডারি বাজার’ ব্যবস্থার প্রচলন করা। আবাসন শিল্প রক্ষার্থে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিদ্যমান মূল্য সংযোজন কর হ্রাসসহ নতুনভাবে মূল্য সংযোজন কর আরোপ না করা। গৃহায়ন শিল্পের উদ্যোক্তাদের আয়কর হ্রাসকরণ সংক্রান্ত প্রস্তাব রাখা। আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ধারা ৫৩পি অনুসারে গেইন ট্যাক্স ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশ নির্ধারণ করা। রাজউক ও সিডিএর আওতাভুক্ত ও বহির্ভূত এলাকায় সব জমির ক্ষেত্রে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ৫৩এইচ ধারায় আরোপিত কর প্রত্যাহার করা। সাপ্লায়ার ভ্যাট ও উৎস কর সংগ্রহের দায়িত্ব থেকে ৫ বছরের জন্য ডেভেলপারদের অব্যাহতি দেয়া। বিকেন্দ্রীকরণ নগরায়ণ ও পারিপার্শ্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে শহর এলাকায় ৫ বছর এবং শহরের বাইরের এলাকায় ১০ বছরের জন্য ট্যাক্স হলিডের মাধ্যমে উৎসাহিত করার ব্যবস্থা রাখা।

প্রস্তাবনা দিলেও বাজেটে তা উপেক্ষিত থাকে উল্লেখ করে শামসুল আলামিন বলেন, প্রতি বছর বাজেটের আগে আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে অনেক প্রস্তাব দিয়ে আসি, কিন্তু আমাদের এসব প্রস্তাবে পাত্তা দেয় না এনবিআর। যখন বাজেট পেশ করা হয় তখন দেখি আমাদের কোনো দাবিই সেভাবে মানা হয় না। এটি মোটেই কাম্য নয়। তাই আমাদের প্রত্যাশা, এবারের বাজেটে যেন আমাদের প্রস্তাবগুলো আমলে নেয়া হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App