×

জাতীয়

নদী তীরের দখল প্রতিরোধে কম্প্রোমাইজ করা হয়নি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৩, ০৫:৫৫ পিএম

নদী তীরের দখল প্রতিরোধে কম্প্রোমাইজ করা হয়নি

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে ‘জাতীয় নৌ-নিরাপত্তা দিবস ঘোষণার দাবিতে’ এক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: ভোরের কাগজ

দেশ বিরোধী পরাজিত শক্তি সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে মাঠে নেমে পড়েছে। অপশক্তি সামাজিক প্ল্যাটফর্ম বেছে নিয়ে দেশের ও সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করছে। সড়কের গাছ কাটার জন্যও প্রধানমন্ত্রীকে দায়ী করা হচ্ছে। তাদের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না, সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। নদী তীরের দখল প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো কমপ্রোমাইজ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরী।

মঙ্গলবার (২৩ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে ‘জাতীয় নৌ-নিরাপত্তা দিবস ঘোষণার দাবিতে’ এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ‘নদী আমাদের মা’ প্রতিপাদ্য বিষয় সামনে রেখে নোঙ্গর ট্রাস্ট নামে একটি সংগঠন অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফিরে এসে বলেছিলেন নদীর নাব্যতা কমে গেছে, এর প্রবাহ ধরে রাখতে হবে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু দেশের নদীর নাব্যতা রক্ষায় সাতটি ড্রেজার সংগ্রহ করেছিলেন। ২০০৮ সাল পর্যন্ত তা আটটি হয়নি, এটাই বাস্তবতা। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দেশের নদী দুষন ও দখল নিয়ে আর কেউ ভাবেনি। তখনকার সরকারগুলো শুধু নদী নয়, দেশের প্রতিও অবহেলা করেছে। ২০০৪ সালে লঞ্চডুবির ঘটনা দুর্ঘটনা নয়; এটা অবহেলা। আবহাওয়া বার্তা দেয়া হয়নি। তৎকালীন সরকার নৌদুর্ঘটনার ক্ষেত্রে অবহেলা করেছে। তারা দেশের ক্ষেত্রেও অবহেলা করেছে। তারা মুক্তিযুদ্ধের গল্প নয়, আমাদের জেএমবির আব্দুর রহমান, বাংলা ভাই, গ্রেনেড হামলা, অস্ত্র পাচারের গল্প শুনিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। স্বাধীনতা বিরোধি চক্র ক্ষমতায় থেকে বাংলার মানুষের প্রতি অবহেলা করেছে। বাংলার মানুষের ওপর রোলার চালিয়ে অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করেছে। তাদের দরকার ছিলো ক্ষমতা ও অর্থ। নদীকে বাদ দিয়ে সন্ত্রাসে বেশি মনোনিবেশ করা হয়েছে। জিয়াউর রহমান বাংলার যুব সমাজ ও মেধাবী ছাত্রদের হিজবুল বাহার জাহাজে নৌবিহারে নিয়ে অস্ত্র ও অর্থ তুলে দিয়েছে। এরপর তারা অস্ত্র নিয়ে ক্লাসে গেছে। নদী রক্ষায় তারা কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নির্বাচনি ইশতেহারে ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ তৈরির ঘোষণা দিয়েছে। এলক্ষ্যে ৩৮টি ড্রেজার সংগ্রহ করেছে আরো ৩৫টি ড্রেজার সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে। এর আগে কোনো রাজনৈতিক দল দেশের নৌপথ তৈরির কথা ভাবেনি। সরকার ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ তৈরির কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ঢাকার চারপাশের নৌপথ উন্নয়নের কথা বলেছিলেন। সেই নৌপথ রক্ষা করতে পারিনি। ঢাকার চারপাশের নদীর ওপর নেভিগেশনাল ছাড়পত্র ছাড়া ১৪টি লো-হাইটের ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন- ‘বিআইডব্লিউটিএ’র অনুমোদন ছাড়া নৌপথে নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণ করা যাবে না।’

আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা ও নৌকা ‘নদী ও নৌপথ’ নিয়ে ভেবেছে ও ভাবছে। নদী তীরের দখল প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, এক্ষত্রে কোন কমপ্রোমাইজ করা হয়নি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে একটি ক্রুজ ভেসেল সংগ্রহ করতে যাচ্ছি যা দিয়ে বিদেশি পর্যকদের সেবা দেয়া যাবে। বাংলাদেশের নেভাল আর্কিটেক্টদের নির্মিত জাহাজ বিদেশে যাচ্ছে। নেভাল আর্কিটেক্টদের কর্মক্ষেত্র তৈরি করা হচ্ছে। নৌসেক্টরের মাধ্যমে যাতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার দেশের বাইরে যেতে না পারে সে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। বিদেশি জাহাজ মনিটরিং ও দিকনির্দেশনার জন্য আটটি লাইটহাউজ (বাতিঘর) নির্মাণ করা হচ্ছে। জাহাজের গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরে ভেসেল ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ভিটিএমএস) চালু করা হয়েছে।

খালেদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমাদের নদীগুলোর নৌ প্রবাহ যেন ঠিক থাকে আমরা সেটাই চাই। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন শিরার মধ্যে যদি রক্ত প্রবাহিত না হয় তাহলে মানুষ থেমে যাবে। তেমনই নদীমাতৃক বাংলাদেশেও নদীগুলোতে পানি প্রবাহিত না হলে প্রবাহ থেমে যাবে। নদীগুলো দুর্বল হয়ে যাবে। আমাদের নদীগুলোতে বিভিন্ন ধরনের জাহাজ চলাচল করে। কোন নদীতে কোন জাহাজ চলাচল করবে সেটা মাথায় রেখেই ভবিষ্যতে সেতুগুলো নির্মাণ করতে হবে। এজন্য অনুমোদন দেয় বিআইডব্লিউটিএ। বিআইডব্লিউটিএ’র অনুমোদন ছাড়া রোডস, এলজিইডি, সেতু বিভাগ কেউই যেন নদীর ওপর কোনো ব্রিজ নির্মাণ করতে না পারে সেই বিষয়ে জেলা প্রশাসকদের তদারকি করতে বলেছি।

‘নোঙর ট্রাস্ট’-এর চেয়ারম্যান সুমন শামসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমোডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নদী গবেষক তোফায়েল আহমেদ, রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকন, মেরিন হাউজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নৌ-স্থপতি মো. শামসুল অলমনোঙর ট্রাস্টের চেয়ারম্যান সামস সুমন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App