×

জাতীয়

রাজধানীজুড়ে আ.লীগের বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৩, ০৯:২৭ এএম

রাজধানীজুড়ে আ.লীগের বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ

ছবি: ভোরের কাগজ

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘হত্যার হুমকির’ প্রতিবাদে রাজধানীজুড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ক্ষমতাসীন দলটির নেতাকর্মী। গতকাল সোমবার বিকালে রাজধানীর প্রতিটি থানায় অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোও। মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

বিক্ষোভ সমাবেশে আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি ছোট বিষয় নয়। বিএনপির জেলা পর্যায়ের একজন নেতার বক্তব্য শুধু এটি নয়, এটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এই বক্তব্য একেবারেই ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।

তারা আরো বলেন, বিএনপি সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাতে ষড়যন্ত্র করছে। এরই অংশ শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি। এ জন্য রাজশাহী জেলা বিএনপির সভাপতি আবু সাঈদ চাঁদকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তারা আরো বলেন, শেখ হাসিনাকে হুমকি দিলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী চুপ করে বসে থাকবে না। প্রয়োজনে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এ সময় বিএনপিকে রাজপথে মোকাবিলায় নিজেরা প্রস্তুত বলেও জানান তারা।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, তাদের ২৪টি থানায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। আর ঢাকা মহানগর উত্তরের ৫৪টি ওয়ার্ড ও ২৬টি থানাতেও বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এস এ মান্নান কচিসহ নগর নেতারা।

রাজধানীর থানায় থানায় বিক্ষোভ : বিকাল ৩টায় রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শাহবাগ, পল্টন ও মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগ। এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমদ মন্নাফী। বিক্ষোভ মিছিলটি মহানগর নাট্যমঞ্চ থেকে শুরু হয়ে গুলিস্তান, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম, বায়তুল মোকাররম হয়ে জিরো পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়।

লালবাগ, চকবাজার ও বংশাল থানা আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে অংশ নেন দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। ওয়ারী এলাকা থেকে বের হওয়া বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি চৌধুরী আশিকুর রহমান লাভলু। উপস্থিত ছিলেন ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেনসহ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের স্থানীয় নেতাকর্মী।

ডেমরায় সুলতানা কামাল সেতুসংলগ্ন চৌরাস্তা এলাকায় বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শরফুদ্দিন আহমেদ সেন্টু। যাত্রাবাড়ীতে থানা আওয়ামী লীগের সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সারোয়ার কবির। বক্তব্য রাখেন ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনু। খিলগাঁও, সবুজবাগ, মুগদা, শাহজাহানপুর, রমনাসহ বিভিন্ন থানায় একযোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

যুবলীগের বিক্ষাভ মিছিল ও সমাবেশ : কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে কেন্দ্রীয় যুবলীগ। বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে নেতারা বলেন, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে বিএনপি। তাদের রাজপথে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করা হবে।

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, বাংলার মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার রক্ষার আন্দোলন করতে গিয়ে শেখ হাসিনাকে বারবার হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আজকে তারা আবার বঙ্গবন্ধু কন্যাকে হত্যা করতে চায়, কবর রচনা করতে চায়। এই হুমকি শুধু হুমকি নয়। মার্কিন দূতের সমালোচনা করে নিখিল বলেন, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের রাষ্ট্রদূত বলছে, তার নাগরিকদের বাংলাদেশে নিরাপদে চলাফেরা করতে। বাংলাদেশে এমন কোনো ঘটনা নাই, যেখানে মানুষের নিরাপত্তার ঘাটতি পড়েছে। বাংলার মাটিতে কোনো খুন-খারাবি নাই, যতটুকু করে সেটা বিএনপি-জামায়াত করে।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিক্ষোভ : বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বেলা ১১টায় বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল করে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ। পরে বেলা ১২টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে আশপাশের এলাকা প্রদক্ষিণ করে। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুর সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন ও সাধারণ সম্পাদক তারেক সাঈদসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

ঢাবি শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকির দেয়ার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। এই হুমকি শুধুমাত্র জেলা পর্যায়ের একজন নেতার বক্তব্য নয়, এটি গভীর ষড়যন্ত্রের একটি অংশ। তাদের নীলনকশা প্রণয়ন ও সেটির কার্যক্রম শুরুর একটি ইঙ্গিত। এই বক্তব্য একেবারেই ক্ষমার অযোগ্য একটি অপরাধ।

ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদার সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন ঢাবি উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম অহিদুজ্জামান চান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছিত, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুস ছামাদ, ফার্মেসি অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিতেশ চন্দ্র বাছার, শিক্ষক সমিতির সদস্য অধ্যাপক ড. আবু জাফর মো. শফিউল আলম ভূঁইয়া, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী প্রমুখ।

জাসদের বিবৃতি : জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। একই সঙ্গে হুমকিদাতাকে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। তারা বলেন, বিএনপি তাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এবং খালেদা-তারেকের মতোই হত্যা-খুনের রাজনৈতিক পথেই আছে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিবৃতি : বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের নির্বাচন-২০২৩ এর স্মার্ট প্যানেলের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকিদাতাকে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন- স্মার্ট প্যানেলের চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যক্ষ আবদুল আহাদ চৌধুরী, মহাসচিব (প্রশাসন) প্রার্থী সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী কেএম মোজাম্মেল হক, আনোয়ার হোসেন পাহাড়ী বীরপ্রতীক প্রমুখ।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট : প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকিদাতা আবু সাঈদ চাঁদকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে দেশের ২৩ বিশিষ্টজন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন- সাংবাদিক আবেদ খান, সঙ্গীতজ্ঞ সুজেয় শ্যাম, আবৃত্তিশিল্পী আশরাফুল আলম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুছ, কবি ড. মুহাম্মদ সামাদ, চিকিৎসক অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান খান, অভিনয়শিল্পী কেরামত মাওলা, অধ্যাপক জিয়াউল হাসান কিসলু, ঝুনা চৌধুরী, কাওসার চৌধুরী, যাত্রাশিল্পী মিলন কান্তি দে, চারুশিল্পী কামাল পাশা চৌধুরী, আবৃত্তিশিল্পী আহ্কাম উল্লাহ্, অভিনয় শিল্পী ও রাজনীতিক নাদের চৌধুরী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মিজানুর রহমান, অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ, রোকেয়া প্রাচী, ড. নিগার চৌধুরী, সঙ্গীত শিল্পী সুজিত মোস্তফা, সংগীত শিল্পী মাহমুদ সেলিম, নৃত্যশিল্পী, মুনমুন আহমেদ ও সঙ্গীতা ইমাম।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App