×

জাতীয়

কক্সবাজারের সর্বত্র চলছে মোকার ক্ষত মোছার চেষ্টা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৩, ০৮:৪৮ এএম

কক্সবাজারের সর্বত্র চলছে মোকার ক্ষত মোছার চেষ্টা

ঘূর্ণিঝড় মোকার ক্ষত মুছতে চেষ্টা চলছে সর্বত্র। কেউ রাস্তা চলাচল উপযোগী করছে। কেউ ঘর-বাড়ি ও অন্যান্য স্থাপনা মেরামত করছে। এতে ব্যবহার বেড়েছে বাঁশ, ত্রিপল ও টিনের। তাছাড়া সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে খাদ্য সামগ্রী, নগদ অর্থ নিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। মোকায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো মানসিকভাবে শক্ত হয়ে উঠছে।

ইতোমধ্যে টেকনাফের বিভিন্ন পয়েন্ট জরুরি মেরামত কাজে ব্যবহারের জন্য বাঁশ, ত্রিপল ও টিনসহ মেরামত কাজের জরুরি মালামাল বিক্রি শুরু হয়েছে। টেকনাফ সদরের শীলবনিয়া পাড়ার জসিম উদ্দিন বলেন, একটি ছোট বাঁশ ৩৫ টাকা। ৭০০ টাকায় বিশটি বাঁশ ও ৩৫০ টাকায় একটি ত্রিপল কিনে অন্তত বাড়ি-ঘর মেরামতে হাত দিয়েছি। না হয় বৃষ্টি নামলেই ঘরে আর থাকা যাবে না। ত্রিপল ব্যবসায়ী জাকের হোসাইন বলেন, উপজেলা প্রশাসন থেকে বলে দেয়া হয়েছে অতিরিক্ত দাম নেয়া যাবে না। এজন্য ৩০০ টাকায় লবণ চাষীদের কাছ থেকে পুরাতন ত্রিপল কিনে সাড়ে ৩০০ টাকায় বিক্রি করছি।

টেকনাফ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. এরফানুল হক চৌধুরী বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো জরুরি প্রয়োজনে বাঁশ, ত্রিপল ও টিন ব্যবহার করে ঘেরা, ঘরবাড়ি ঠিক করছে। এক শ্রেণির ব্যবসায়ী এসব জিনিসের মূল্য বাড়িয়ে বিক্রি করছে এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যাতে অতিরিক্ত দাম না নেয়।

টেকনাফ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সুবীর কুমার দত্ত জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকায় ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে সরকারিভাবে উপজেলা প্রশাসন আড়াই লাখ নগদ টাকা ও ১০ টন চাল ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বরাদ্দ দিয়েছে। বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিজিবি, কোস্টগার্ড থেকেও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

শাহপরীর দ্বীপে ১৮০ পরিবারকে নগদ টাকা বিতরণ : টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ ৭নং ওয়ার্ড, দক্ষিণপাড়া, মাঝেরপাড়া, পশ্চিমপাড়া, গোলাপাড়ায় ঘূর্ণিঝড় মোকায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৮০ পরিবারের মাঝে এনজিও অক্সফামের সহযোগিতায় নগদ সাড়ে ৫ হাজার টাকা করে বিতরণ করেন টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলম। এ সময় ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান, ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রেজাউল করিম রেজু উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে প্রাথমিকভাবে নগদ অর্থ দেয়ার মাধ্যমে ঘরবাড়ি মেরামত কাজে সহায়তার করা হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে ক্ষতিগ্রস্তদের চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী পর্যাপ্ত সহযোগিতা করা হবে।

সেন্টমার্টিনে ৮০০ জনকে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ দিয়েছে বিজিবি : বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান, বিএএম, এনডিসি, পিএসসি গতকাল মঙ্গলবার ঘূর্ণিঝড় মোকায় ক্ষতিগ্রস্ত সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিদর্শন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন।

টেকনাফ ব্যাটালিয়নের (২ বিজিবি) অধীনস্থ সেন্টমার্টিন বিওপি পরিদর্শন করেন এবং সেখানে মোকায় ক্ষতিগ্রস্ত সেন্টমার্টিনের ৮০০ জন অসহায় মানুষের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন। পরে বিজিবি মহাপরিচালক সেন্টমার্টিন বিওপিতে দায়িত্বরত বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য সব স্তরের বিজিবি সদস্যদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড় মোকা মোকাবিলায় কক্সবাজার জেলা ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত ঘোষণার পর থেকেই বিজিবি সদস্যরা উপকূলীয় অঞ্চলে মাইকিং করে এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে দুর্যোগের আগাম বার্তা পৌঁছে দেয়। এছাড়াও ঘূর্ণিঝড়কবলিত এলাকার জনসাধারণকে সাইক্লোন শেল্টার বা নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে বিজিবি প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App