পঁচাত্তরে নভেম্বরে তিন মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তার হত্যার ঘটনায় জিয়াউর রহমানকে জড়িয়ে মামলা দায়ের সরকারের সূদূর প্রসারী রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার শঙ্কা- সরকার পতনের সময়কাল যত এগিয়ে আসবে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ বিএনপির বিরুদ্ধে এই ধরনের ষড়যন্ত্রের মাত্রা আরো বাড়বে।

রবিবার (১৪ মে) গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে করে তিনি এই শঙ্কার কথা জানান। এ সময় মহাসচিবের সঙ্গে আরো ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। সংবাদ সম্মেলনে ঘূর্ণিঝড় মোকার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে জনগণের পাশে থাকতে বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব।

জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে শেখ হাসিনা ও তার কুশীলবরা নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এই মামলা সেই ষড়যন্ত্রের একটি ঘৃণ উদাহরণ মাত্র। সম্পূর্ণভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একটি মিথ্যাকে আবারো সামনে তুলে নিয়ে এসেছে ৪৮ বছর পরে। উদ্দেশ্যটা একটাই, জনগন যখন গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়ার আন্দোলন শুরু করেছে, যখন জাতীয়-আন্তর্জাতিকভাবে প্রবল চাপ সৃষ্টি হয়েছে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে সেই সময়ে এই ধরনের একটি মিথ্যা বিষয় তুলে ধরে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

ফখরুল বলেন, নাহিদ ইজহার খান সম্ভবত তার নিজের মায়ের লেখা বইটাও পড়ে দেখেননি। যেখানে তার মা নীলুফার হুদা তার লেখা ‘কর্ণেল হুদা ও আমার যুদ্ধ’ গ্রন্থে স্পষ্টভাবেই লিখে গেছেন, কর্নেল হুদাকে হত্যার সময় কী পরিস্থিতি ছিলো। সেখানে উপস্থিতি মানুষের জবানবন্দিই প্রমাণ দেয় সেদিন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কর্ণেল নওয়াজিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন খালেদ মোশাররফ, কর্নেল নাজমুল হুদা ও মেজর এটিএম হায়দারকে রক্ষা করার।

তিনি বলেন, ইতিহাসের নির্মম পরিহাস হলো- কর্নেল হুদার মেয়ে নাহিদ ইজহার খান যিনি ফ্যাসিস্ট ভোটারবিহীন সংসদের এমপি হিসেবে তার পিতার হত্যাকারী জাসদ-গণবাহিনীর উপপ্রধান হাসানুল হক ইনু এবং কর্নেল তাহেরের ভাই ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল একটি সংসদের এমপি হিসেবে গলা ফাটাচ্ছেন নিজের পিতার হত্যার হুকুমের আসামী করেছেন জিয়াউর রহমানকে যিনি তার পিতাকে বাঁচানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। এমনকি তার মায়ের লেখা গ্রন্থে অভিমান করে স্বীকার করে নিয়েছেন তাদের মাথা গোঁজার ঠাই করে দিতে।

এই মামলার পেছনে রয়েছে সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, আমার বিশ্বাস ষড়যন্ত্র না থাকলে নাহিদ ইজহার পিতার ইতিহাস স্বীকৃত জাসদ-গণবাহিনীর জীবিত কমান্ডার ইনু গংদের বাদ দিয়ে যিনি সৈনিক-অফিসার বিরোধ নিরসনে সেনা অফিসারদের জীবন বাজি রেখে দেশের বিভিন্ন সেনা ছাউনিতে ঘুরে বেড়িয়েছেন সেই প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হুকুমের আসামি করে পিতার রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করতেন না।