×

জাতীয়

ভয়ংকর ‘মোকা’র হিংস্র ছোবল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৩, ০৮:৪৬ এএম

ভয়ংকর ‘মোকা’র হিংস্র ছোবল

বঙ্গোপসাগরে গত চার বছরে মে মাসে অন্তত চারটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ ও ‘যশ’ এই ভূমিতে তাণ্ডবলীলা চালিয়েছিল। এবারো মে মাসেই তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’র অগ্রভাগ গতকাল শনিবার মধ্যরাতেই ছোবল দিয়েছে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে। তবে সেখানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা সম্ভব হয়নি। আজ রবিবার সকাল ১০টার মধ্যেই ওই এলাকাগুলোতে ১৯০ থেকে ২১০ কিমি বেগে আঘাতের প্রবল আশঙ্কার কথা জানিয়েছে জাপানের কৃত্রিম ভূউপগ্রহ চিত্র ও যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার।

কানাডার সাচকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ অনেক দ্রুত উপকূলের দিকে অগ্রসর হয়ে গতকাল শনিবার মধ্যরাত থেকেই সেন্টমার্টিনে ছোবল দেয়া শুরু করেছে। এটি আজ রবিবার সকাল ১০টার মধ্যেই ১৯০ থেকে ২১০ কিমি বেগে সেন্টমার্টিনে আঘাত করে ঘূর্ণিঝড়কেন্দ্রের পুরোটা কক্সবাজার জেলার ওপর দিয়ে অতিক্রম করার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। জেলার সেন্টমার্টিন ছাড়াও কুতুবদিয়া ও মহেশখালী দ্বীপের মানুষ সবচেয়ে বেশি বিপন্ন হবে। রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতে বন্যা, ভূমিধস ও প্রানহানির আশঙ্কা রয়েছে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের বড় একটি অংশ সমুদ্রে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা যেমন রয়েছে; তেমনি ওই দ্বীপের ভূ-কাঠামোর স্থায়ী ক্ষতি হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। সেন্টমার্টিন দ্বীপে আটকে পড়া লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে না নিলে প্রাণহানির আশঙ্কা আছে বলে জানান তিনি। প্রসঙ্গত, এই আবহাওয়া গবেষক সর্বপ্রথম গত ২৬ এপ্রিল জানান, ১৩ মে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বড় ঘূর্ণিঝড় আসছে। এরপর থেকে নিজের ফেসবুক থেকে তিনি এ পর্যন্ত প্রচার করেছেন ৭৪টি বার্তা।

গতকাল একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ আসছে। আমরা ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোকে প্রস্তুত রেখেছি ও ঝড়টি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। ঘূর্ণিঝড়ের সময় পানি জমে গেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুতরাং সেই সময়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে। এই পদক্ষেপ (গ্যাস ও বিদ্যুত বন্ধ) সাময়িক দুর্ভোগ সৃষ্টি করলেও মানুষের জীবন রক্ষা পাবে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গতকাল শনিবার বঙ্গোপসাগরের বুকে আরো শক্তি সঞ্চার করেছে ‘মোকা’। পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তর উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে আরো ঘনীভূত হতে পারে ঘূর্ণিঝড়টি। আজ রবিবার দুপুরের দিকে শক্তি কিছুটা কমিয়ে ‘মোকা’ অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসেবে বাংলাদেশের কক্সবাজার এবং মিয়ানমারের কাউকপুরের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। ওই সময় ঝড়ের গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৭৫-১৯০ কিমি। সর্বোচ্চ বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ২১০ কিমি। এরপর শক্তিক্ষয় করে অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড় থেকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে আগামীকাল সোমবার গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। আবহাওয়া অফিস দেশের তিনটি সমুদ্রবন্দর এবং ১২টি জেলার জন্য ১০ ও ৮ নম্বর মহাবিপদের সঙ্কেত দিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ‘মোকা’র প্রভাবে তিনটি সমুদ্রবন্দর তছনছ হয়ে যেতে পারে।

সতর্কতা জারি করা হয়েছে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্ণীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালি, ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও বরগুনা জেলার জন্যও। তবে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা থেকেই কক্সবাজার, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন এবং উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ‘মোকা’র প্রভাব পড়তে শুরু করে। ‘মোকা’ যতই উপকূলের দিকে এগোচ্ছে, ততই আবহাওয়ার পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে। গতকাল সকাল থেকেই তাই কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। আবহাওয়া দপ্তর আরো জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে চট্টগ্রাম, সিলেট এবং বরিশালে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি হবে। আর সে কারণে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রাম- এই পাঁচ জেলার পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধসের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার থেকে ৫ লাখেরও বেশি মানুষকে এরই মধ্যে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করছে প্রশাসন।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়কে কেন্দ্র করে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সব হোটেলকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। এক সপ্তাহের মতো খাবারও মজুত করে রাখা হয়েছে। এছাড়া ‘মোকা’ মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশ। ঘূর্ণিঝড়সংক্রান্ত যে কোনো সেবার জন্য নিকটস্থ থানা অথবা ৯৯৯ এ যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশ। ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ মোকাবিলা ও টেলিযোগাযোগসংক্রান্ত সেবার তথ্য জানাতে বিটিআরসিতে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। উপকূলের সাধারণ মানুষকে নিরাপদে সাইক্লোন সেন্টারে নিতে কাজ করছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

এছাড়া ঝড়পরবর্তী উদ্ধার অভিযানে ব্যাপক প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। বিশেষ করে উদ্ধারকাজের জন্য ছোট ছোট বোট, বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবার মজুত রাখা রয়েছে। এরই মধ্যে বিজিবির বিপুলসংখ্যক সদস্য কাজ করছেন। ঘুর্ণিঝড় ‘মোকা’ আঘাত হানার পর দ্রুততম সময়ে উপকূলীয় এলাকায় উদ্ধার কার্যক্রম, চিকিৎসা ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। ত্রাণসামগ্রীসহ এই বাহিনীর ২১টি জাহাজ, নৌ কন্টিনজেন্ট, হেলিকপ্টার ও মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট (এমপিএ) প্রস্তুত রাখার কথা জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

জানা গেছে, দ্য ওয়ার্ল্ড মিটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও) বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারকে ইতোমধ্যেই সতর্ক করে বলেছে, এই ঝড়ের গতি ভয়ানক থেকে আরো ভয়ানক হবে। তার জেরে জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। ফলে নিচু এলাকাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল মিটিওরোলজির আবহাওয়াবিজ্ঞানী রক্সি ম্যাথু কোল ভারতীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, বর্তমানে যেসব ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হচ্ছে, সেগুলো অনেক দিন ধরে শক্তি সঞ্চয় করে রাখছে। একটি উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে আম্ফানের কথা। স্থলভাগে বিপুল শক্তি নিয়ে আছড়ে পড়েছিল সেটি। যার ফলে ধ্বসংলীলাও অনেক বেশি হয়েছে। সমুদ্রের উপরিতল যত গরম হবে এবং তার সঙ্গে যদি হাওয়া অনুকূল হয়, ঘূর্ণিঝড় তত বেশি শক্তি সঞ্চয় করতে পারে এবং সেই শক্তি অনেক দিন ধরে রাখতে পারে। ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’র ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে। দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। সেই বিপুল শক্তিতে ঘণ্টায় ১৭৫ কিলোমিটার বেগে স্থলভাগে আছড়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এও বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পদ্ধতিতে কোনো বদল আসেনি। আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রের উপরিতলের উষ্ণতা বাড়ছে। এর সঙ্গে বাড়ছে সমুদ্রের তাপ ধরে রাখার মাত্রা। ফলে সাম্প্রতিক অতীতে ঘূর্ণিঝড় দ্রুত গতিতে শক্তি বাড়াচ্ছে।

ছয় জেলায় জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা : দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান জানিয়েছেন, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’র কারণে দেশের ছয় জেলায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। তিনি বলেন, গত শুক্রবার সকালে মোকা অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। এখনো উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এটা যেভাবে অগ্রসর হচ্ছে- আশঙ্কা করছি, মিয়ানমার ও বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলায় আঘাত হানবে। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্ণীপুর, বরিশাল, ভোলা বরগুনাসহ বিভিন্ন এলাকায় ১২ ফুট জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি রবিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে আঘাত হানতে পারে। এখন পর্যন্ত যে দূরত্ব আছে, রবিবার সকাল থেকেই উপকূল স্পর্শ করতে থাকবে। তিনি বলেন, এটির অবস্থান, গতিপথ ও গতি বিবেচনা করে আমরা স্থির করেছি, কক্সবাজার বন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেয়ার জন্য। আর চট্টগ্রাম ও পায়রা বন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি রাখা হবে। মোকার আঘাতে ভূমিধসের আশঙ্কার কথা জানিয়ে এনামুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ২০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হবে। এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়নি।

তবে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ড কাজ করছে। এখন বাতাসের যে গতিবেগ ১৫০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার, এটা বেড়ে হয়তো ১৮০ কিলোমিটার হতে পারে। এর বেশি হওয়ার আশঙ্কা নেই। যে কারণে মোকাকে সুপার সাইক্লোন বলা যাবে না। তবে ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

সিডরের মতোই শক্তিশালী মোকা : সিডরের মতোই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মোকা। উপকূলে যাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত মোকা গতি সঞ্চার করতে থাকবে। প্রায় সিডরের সমতুল্য গতিবেগ নিয়ে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক মো. আসাদুর রহমান।

গতকাল শনিবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের মিডিয়া সেন্টারে ঘূর্ণিঝড় মোকা নিয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান মো. আসাদুর রহমান। তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন, টেকনাফ, উখিয়া অঞ্চলে মোকার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে। এটি যখন তীরে আছড়ে পড়বে তখন বাতাসের গতিবেগ থাকবে ১৬০ কিলোমিটারের বেশি। এর প্রভাবে যে বৃষ্টি হবে, তাতে পাহাড়ধসের শঙ্কা আছে।

তিনি আরো বলেন, একটানা আট ঘণ্টার বেশি প্রবল বৃষ্টি হলে পাহাড়ধসের আশঙ্কা থাকে। প্রবল বৃষ্টি হতে পারে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে। সিলেটেও প্রভাব থাকবে, তবে ঢাকায় কম হবে।

গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু : এরই মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’র প্রভাবে শনিবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে। শহরাঞ্চলে জীবনযাত্রা এখনো পর্যন্ত স্বাভাবিক লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে বিভিন্ন দ্বীপ ও উপকূলীয় এলাকায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সেন্টমার্টিন থেকে শুক্রবার পর্যন্ত অসংখ্য মানুষ নিজেদের উদ্যোগেই টেকনাফে আত্মীয়দের বাড়িতে চলে এসেছে বলে জানা গেছে। কিন্তু গতকাল থেকে আর কেউ আসতে পারছেন না। কারণ ছোট বোট ও ট্রলার চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এ জন্য অনেকে এখন সরকারি উদ্যোগের আশায় আছেন। যদি তাদের নৌবাহিনীর সহায়তায় সরিয়ে আনা হয় সেন্টমার্টিন থেকে।

তবে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক শাহীন ইমরান জানান, সেখানে সবাই আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করবে। সেন্টমার্টিনে যেসব সরকারি স্থাপনা- যেগুলো শক্ত, মজবুত, দোতলা, তিন তলা এ রকম ৩৭টা স্থাপনাকে আমরা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করছি। ওখানে ৭ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। আতঙ্ক আছে মহেশখালীর দিকেও।

মহেশখালীতে ৮টি জায়গায় বেড়িবাঁধ ভাঙা, সেদিক দিয়ে জলোচ্ছ্বাসে পানি ঢুকে পড়ার শঙ্কায় আছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তার মতে, আশঙ্কা তো আছেই, ভূমিধস হওয়ার, জলোচ্ছ্বাসের। এখন আমাদের কাজ হচ্ছে যারা অসহায় তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা। সে কাজটি আমরা করে যাচ্ছি। আমরা দুপুরের মধ্যেই সবাইকে বলছি আশ্রয়কেন্দ্রে চলে আসার জন্য, কিন্তু সন্ধ্যার পর যাতে কোনাভাবেই কেউ কোনো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় না থাকে সেটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই।

জেলা প্রশাসক জানান, মোট ৫৭৬টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত আছে, যেখানে ৫ লাখের ওপর মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। এর বাইরে স্কুল, কলেজ ও কয়েকটি হোটেল-মোটেল আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App