এপ্রিল মাসে ৫২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৫২ জন নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন ৮৫২ জন। এ সময়েও মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা শীর্ষে অবস্থান করছে। ২১৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২৩১ জন নিহত ও ১৭১ জন আহত হয়েছেন। রেলপথে ৪২টি দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত ও ৬৭ জন আহত, নৌ-পথে ১০টি দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত ও ১৬ জন নিখোঁজ হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১১ মে) বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায় এপ্রিল মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ২৮ দশমিক ৫১ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৩৪ দশমিক ২২ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে ও ৩০ দশমিক ৯৮ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়া, সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, শূন্য দশমিক ১৯ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও শূন্য দশমিক ৩৮ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে। সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেলের অবাধ চলাচল, সড়কে ব্যাটারিচালিত ও ইঞ্জিনচালিত ত্রিচক্রযানের ব্যাপক প্রভাব, মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা, উল্টোপথে যানবাহন চালানো, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন, অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, বেপরোয়া গতিতে চালানোর কারণে এসব দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিদায়ী এপ্রিল মাসে ৫২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৫২ জন নিহত ও ৮৫২ জন আহত হয়েছেন। একই সময় রেলপথে ৪২টি দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত ও ৬৭ জন আহত হয়। নৌ-পথে ১০টি দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত, ১৬ জন নিখোঁজ হয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৫৭৮টি দুর্ঘটনায় ৫৯৭ জন নিহত ও ৯১৯ জন আহত হয়েছেন। ২১৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২৩১ জন নিহত ও ১৭১ জন আহত হয়েছে- যা মোট দুর্ঘটনার ৪০ দশমিক ৮৭ শতাংশ, মোট নিহতের ৪১ দশমিক ৮৪ শতাংশ ও আহতের ২০ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।

সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ১৬৩ জন চালক, ৯০ জন পথচারী, ৩৭ জন পরিবহন শ্রমিক, ৩২ জন শিক্ষার্থী, ৪ জন শিক্ষক, ২৫ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৭৩ জন নারী, ৬৩ জন শিশু, ১ জন সাংবাদিক, ৯ জন চিকিৎসক, ১ জন মুক্তিযোদ্ধা, ৩ জন আইনজীবী ও ১ জন প্রকৌশলী এবং ৮ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে নিহত হয়েছে ৪ জন পুলিশ, ১ জন আনসার, ১ জন বিমানবাহিনীর সদস্য, ২ জন বিজিবি সদস্য, ১৪৪ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৭৮ জন পথচারী, ৪৭ জন নারী, ৪৩ জন শিশু, ৩০ জন শিক্ষার্থী, ২২ জন পরিবহন শ্রমিক, ৪ জন শিক্ষক, ৩ জন চিকিৎসক, ১ জন সাংবাদিক, ২ জন আইনজীবী, ১ জন প্রকৌশলী ও ৫ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

এ সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত ৭৪০টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ৩০ দশমিক ৫৪ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৩ দশমিক ২৪ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৫ দশমিক ১৩ শতাংশ বাস, ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইক, ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ কার-জীপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৪৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ গাড়ি চাপা দেয়া, ২২ দশমিক ৬২ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ১১ দশমিক ৭৮ শতাংশ বিবিধ কারনে, শূন্য দশমিক ১৯ শতাংশ গাড়ির চাকায় ওড়না পেচিয়ে এবং শূণ্য দশমিক ৩৮ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।