×

জাতীয়

‘ক্যাসিনো গুরু’ সেলিম প্রধানের ৮ বছরের কারাদণ্ড

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০০ পিএম

https://www.youtube.com/watch?v=BqpjsxfKvN0

অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানিলন্ডারিং আইনের মামলায় অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসায়ী সেলিম প্রধানকে পৃথক দুই ধারায় ৮ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে ১১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। রবিবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮ এর বিচারক. মো. বদরুল আলম ভূঞার আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।

এছাড়া অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের দায়ে সেলিম প্রধানকে ৪ বছর কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তাকে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাভোগ করতে হবে। এছাড়া মানি লন্ডারিংয়ের দায়ে ৪ বছর কারাদণ্ড, ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তাকে আরএ ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এদিকে পৃথক দুই ধারার সাজা একত্রে চলবে। সেক্ষেত্রে তাকে চার বছর কারাভোগ করতে হবে।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেছেন, রায় দিয়ে সমাজ থেকে দুর্নীতি দূর করা সম্ভব নয়। তাই দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে ছেলেমেয়ের বিয়ে দেবেন না। দাওয়াত দিলে যাবেন না। জেনেশুনে কারোর দাওয়াতে যাওয়া মানে রাষ্ট্রবিরোধী অবস্থান নেওয়া। দুর্নীতিবাজদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।

রায় ঘোষণার সময় কারাগারে থেকে সেলিম প্রধানকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তার স্ত্রীও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

উল্লেখ,  ২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর  সেলিম  প্রধানের  বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। মামলায় তার বিরুদ্ধে ১২ কোটি ২৭ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫৪ টাকা অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি মামলাটি তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদকের উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান। চার্জশিটে  ৫৭ কোটি ৭৯ লাখ ২৮৮ টাকার জ্ঞাতআয় বর্হিভুত সম্পদ অর্জন এবং ২১ কোটি ৯৯ লাখ ৫১ হাজার ১৪৫ হাজার টাকা থাইল্যান্ড ও ইউএসএতে পাচারের অভিযোগ আনা হয়। ওই বছরের ৩১ অক্টোবর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আসামির অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে চার্জগঠনের আদেশ দেন। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ৩৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, দুর্নীতির মাধ্যমে ও ক্যাসিনো খেলে সেলিম প্রধান মোট ৫৭ কোটি ৪১ লাখ ৪৮ হাজার টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। এর মধ্যে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ৩৫ কোটি ৪১ লাখ ৯৭ হাজার টাকার। ক্যাসিনো খেলে অর্জিত ২১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা পাচার করেছেন থাইল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রে। সেলিম জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং পেপার্সের চেয়ারম্যান। এই কোম্পানিতে তার ৪০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। ৬৯ হাজার শেয়ারের বিপরীতে এখানে বিনিয়োগ দেখানো হয়েছে ৬৯ লাখ টাকা।

তবে সেলিম প্রধানের নামে শেয়ার মানি ডিপোজিট পাওয়া গেছে ২৩ কোটি ৫৫ লাখ ৮৪ হাজার ৬৫০ টাকা। এই টাকা তিনি অর্জন করেছেন অবৈধভাবে। প্রিন্টিং পেপার্স কোম্পানি ২০১০ সালে মুনাফা করে ২৯ লাখ ৩৩ হাজার ৮৫৩ টাকা। ২০১১ সালে মুনাফা করে ১ কোটি ৪৬ লাখ ২১ হাজার ৭২ টাকা। এখান থেকে ২০১১-১২ অর্থবছরে ৮ কোটি টাকা ঋণ নেন বলে সেলিম প্রধান তার ব্যক্তিগত আয়কর নথিতে উল্লেখ করেছেন। তবে এই কোম্পানি থেকে কীভাবে ঋণ গ্রহণ করেছেন এ সংক্রান্ত কোনো রেকর্ডপত্র নেই তার কাছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App