×

জাতীয়

প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরে অর্জন ‘সক্ষমতার’ স্বীকৃতি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৩, ১০:১৬ এএম

প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরে অর্জন ‘সক্ষমতার’ স্বীকৃতি

ছবি: পিএমও

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তিন দিনের জাপান সফরে ঢাকা ও টোকিওর মধ্যে চলমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ‘সমন্বিত অংশীদারিত্ব’ থেকে ‘কৌশলগত অংশীদারিত্বে’ উন্নীত হয়েছে। আগে জাপানের সঙ্গে যে সম্পর্ক ছিল, সেটাকে শুধু সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক বলা যেত। এখন দুই দেশের সম্পর্ক একটি কৌশলগত অংশীদারিত্বে পৌঁছেছে। কৌশলগত অংশীদারির ভূরাজনৈতিক ও নিরাপত্তাগত তাৎপর্য রয়েছে। পাশাপাশি জাতিসংঘের প্রিন্সিপল অনুযায়ী ইন্দো-প্যাসিফিক ও এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে বাংলাদেশ-জাপান যা চাইবে তাই করতে পারবে। সব মিলিয়ে এই সফরের মাধ্যমে এটা বলা হচ্ছে, দক্ষিণ এশিয়ায় জাপানের কৌশলগত ও কূটনৈতিক এজেন্ডায় বাংলাদেশের সক্ষমতার স্বীকৃতি এলো। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম মুক্তবাজার।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, গত ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্ভাবনী নেতৃত্ব বাংলাদেশকে উন্নয়নের মডেলে পরিণত করতে সাহায্য করেছে। বছরের পর বছর ধরে দেশটির অগ্রগতি ও প্রবৃদ্ধিতে জাপান উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। এর ফলে দেশ দুটি তাদের সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ টার্নিং পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২৫-২৮ এপ্রিল জাপান সফর উভয় দেশের জন্য আরো সমৃদ্ধি পাবে। দেশ দুটির মৈত্রী নতুন অর্থনৈতিক সম্ভাবনা তৈরি করবে। প্রসঙ্গত, তিন দিনের জাপান সফর শেষে গতকাল প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র সফরে গেছেন। সেখান থেকে যুক্তরাজ্য হয়ে আগামী ৯ মে বাংলাদেশে ফেরার কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

জানতে চাইলে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান ভোরের কাগজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আগেও বেশ কয়েকবার জাপান সফর করেছেন। কিন্তু এবারের সফর অনন্য। জাপান সব সময় বাংলাদেশের বন্ধু উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের জাপান সফরে অন্তত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে লাভ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, সফরের ফলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন গভীরতা জন্ম নিয়েছে। ইন্দো-প্যাসিফিক এবং এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে চলমান অস্থিরতাকে আমলে নিয়ে দুই দেশই তাদের দূতাবাসে প্রতিরক্ষা উইং চালু করতে সম্মত হয়েছে। বাংলাদেশে আরো বিনিয়োগের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপানের ১০ জন বিনিয়োগকারীর সঙ্গে চুক্তি করেছেন। এর ফলে বাংলাদেশে আরো জাপানি বিনিয়োগ আসবে। বিনিয়োগ আসার পাশাপাশি বাংলাদেশে দক্ষ শ্রমিকও তৈরি করে দেবে জাপান।

পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘সমন্বিত অংশীদারিত্ব’ থেকে ‘কৌশলগত অংশীদারিত্বে’ উন্নীত হওয়ার দুটি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ঐতিহাসিক, অন্যটি বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক। দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, কূটনৈতিক নিয়ম অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী কিশিদা যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। এতে দেখা গেছে,

বাংলাদেশ ও জাপান সরকারের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, প্রতিরক্ষা সংলাপ, সফর বিনিময়, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, কোর্স, সেমিনার, কর্মশালা, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং এর সঙ্গে প্রাসঙ্গিক অন্য কোনো সম্মত কার্যক্রমের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার হবে। জাপানের ভূমি, অবকাঠামো, পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সহযোগিতা স্মারক সই হয়েছে। এর ফলে মেট্রোরেলের ক্ষেত্রে সহযোগিতা, মেট্রোরেল নীতি, আইন ও প্রবিধান বিষয়ে সহযোগিতা, অবকাঠামো, নিরাপত্তা নীতি ও ব্যবস্থাপনা এবং দুর্যোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়বে। এই সফরের মধ্যে শুধু বাংলাদেশের নয়, লাভ হবে উত্তর-পূর্ব ভারতেরও।

বিশ্লেষকরা বলেছেন, বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে সম্পর্কের সোনালি অধ্যায় চলছে। এই সম্পর্কের জেরে হয়তো ঢাকা ইন্দো-প্যাসিফিকের রূপরেখা ঘোষণা করেছে। নেপথ্যে কাজ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে যুদ্ধ নয়, বরং সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব রেখে চলার কথাই বলা হয়েছে। ইন্দো-প্যাসিফিক গ্রুপকে সহযোগিতা করে তার অর্থনীতির উন্নয়ন করতে চায় বাংলাদেশ। গত ২৪ এপ্রিল পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এই রূপরেখা ঘোষণার দুই বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা গওহর রিজভী স্পষ্টভাবে বলেছিলেন, ‘আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক সম্পর্কের অংশ হতে খুব ইচ্ছুক’ এবং ভারত ‘আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।’ এ রকম পরিস্থিতিতে জাপানের সঙ্গে নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে বাংলাদেশের। টোকিও মাতারবাড়ী বন্দরসহ বাংলাদেশের অসংখ্য প্রকল্পে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ করেছে। ফলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সাফল্য জাপানের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হতে পারে। ১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি টোকিও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে উন্নয়ন সহযোগিতা তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সংযোগের একটি ভালো উদাহরণ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে জাপান সফরের সময় জাপানি বিনিয়োগের অনুরোধ করেছিলেন। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের বাংলাদেশ সফর জাপানি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ মোড় নেয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাবার অর্থনৈতিক কূটনীতির কথা মনে করিয়ে দিয়ে জাপানি বিনিয়োগে সহযোগিতার ওপর জোর দিয়েছিলেন। কারণ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে সমর্থন করেছিল, তাই নবগঠিত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে জাপানকে সতর্ক থাকতে হয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতা-উত্তর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্বাসনের জন্য যে কটি দেশ সাহায্য দিয়েছে, তার মধ্যে জাপান অন্যতম। জাপান এখন বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্যতম অংশ হয়ে উঠেছে।

ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের সাবেক রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকির মতে, বাংলাদেশ হচ্ছে সেই দেশ যেটি বর্তমানে জাপান থেকে সবচেয়ে বেশি ওডিএ (অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিসট্যান্স) পায়। ২০১৪ সালে জাপান এবং বাংলাদেশ একটি ব্যাপক অংশীদারিত্ব শুরু করে, যার ফলে আর্থিক সহায়তা বাড়তে থাকে। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে জাপান বাংলাদেশকে ২.৬৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দিয়েছে যা অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে বেশি। নতুন করে গ্যাস ও কয়লা, ব্লæ ইকোনমি, স্বাস্থ্য এবং মানবসম্পদ উন্নয়নের মতো খাতেও বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বিনিয়োগের সম্পর্ক সম্প্রসারিত হচ্ছে।

বিশ্লেষণে এও দেখা গেছে, শুধু বাংলাদেশ নয়, ‘মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক’ এর আলোকে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোও জাপান থেকে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ পেয়েছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের সীমানা বাংলাদেশ, ভুটান, চীন, মিয়ানমার এবং নেপালের মধ্যে ভাগ হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ‘মুক্ত এবং উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক’ এলাকা বিকাশের কারণেই জাপান এমন বিনিয়োগ করছে। যা জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সময় থেকে শুরু হয়েছিল। তবে এত বিনিয়োগের পরও চীনের বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) এখানে খচখচানি বাড়িয়েছে। বিআরআইতেও বাংলাদেশ এখন একটি অংশ। তবু জাপান বলেছে, উত্তর-পূর্ব ভারতসহ বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা রয়েছে। যেখানে বহু স্তর সংযোগের ওপর ফোকাস রয়েছে। অন্যদিকে বৈশ্বিক কূটনীতিতে বাংলাদেশ ২০১৪ সালে জাপানের পক্ষে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অস্থায়ী সদস্য পদে তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেয়। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ীভাবে যোগদানের জন্য বাংলাদেশ অবশ্যই জাপানকে সমর্থন করবে। এ থেকে বোঝা যায়, দক্ষিণ এশিয়ায় জাপানের কৌশলগত ও কূটনৈতিক এজেন্ডায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বাংলাদেশ।

জানতে চাইলে কূটনৈতিক বিশ্লেষক মো. জমির ভোরের কাগজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের ফলাফল হচ্ছে বাংলাদেশের সক্ষমতার স্বীকৃতি। এর প্রভাব দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় ক্ষেত্রে পড়বে। বিশেষ করে মাতারবাড়ী প্রকল্পের কারণে বঙ্গোপসাগর এলাকায় উন্নয়নের অনেক পথ খুলে যাবে। এই উন্নয়নের ফলে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে একটি সংযোগ তৈরি হবে। এক্ষেত্রে চায়নার মতো তারা অর্থাৎ জাপানিরা বলবে না, আমাদের শ্রমিকরাই এখানে কাজ করুক। এখানে বাংলাদেশি শ্রমিকরা কাজ করে দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত হবে। এতে পুরো অঞ্চল আরো সমৃদ্ধ হবে।

বিশ্লেষকরা বলেছেন, অর্থনৈতিক বিবেচনার পাশাপাশি ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন টোকিওকে নয়াদিল্লির বাইরে তার দক্ষিণ এশিয়ার শক্তি কাঠামো পুনর্বিবেচনার সুযোগ করে দেবে। অন্যদিকে জাপানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বাংলাদেশকে তার পূর্ণ অর্থনৈতিক সম্ভাবনা কাজে লাগাতে সাহায্য করবে। এর ফলে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পর বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়তা করবে। অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি জাপান বাংলাদেশকে বড় শক্তিগুলোর সঙ্গে তার কূটনৈতিক সম্পর্কের বৈচিত্র্য আনতেও সাহায্য করতে পারে। সহযোগিতার জন্য নতুন উপায় খুঁজে বের করে উভয় পক্ষই তাদের সম্পর্ক উন্নত করতে পারে।

তবে এও ঠিক, শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনার করার সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে ওয়াশিংটন সফর করেন এবং সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্টনি ব্লিংকেনের সঙ্গে দেখা করেন। ব্লিংকেন লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আতিথ্য দেয়ার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান। কিন্তু মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার কথা ঢাকাকে স্মরণ করিয়ে দেন। ঢাকা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এসব বার্তা যখন চালাচালি হচ্ছিল তখন জাপান এবং চীন উভয়ই শেখ হাসিনার কাছে পৌঁছাচ্ছে।

এর আগে গত ১০ জানুয়ারি তার প্রথম বিদেশ সফরে আফ্রিকা যাওয়ার সময় বেইজিংয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং ঢাকায় অবতরণ করেন। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ওই অবতরণ এটাই মনে করিয়ে দেয়, চীনের আঞ্চলিক পরিকল্পনায় ঢাকার গুরুত্ব অনেক। এরপর গত ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারের কাছে পেকুয়ায় বাংলাদেশের প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি উদ্বোধন করেন। এমন পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনার জাপান সফরের আগেই দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা নয়াদিল্লি সফরে এসে বঙ্গোপসাগরের একটি শিল্প কেন্দ্রের কথা বলেছিলেন যা উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারে।

তিনি এও বলেছিলেন, চট্টগ্রামের মাতারবাড়ীতে জাপান যে গভীর সমুদ্রবন্দরটি তৈরি করছে তা চট্টগ্রামের সীমান্তবর্তী উত্তর-পূর্ব রাজ্যের সঙ্গে সংযুক্ত করা গেলে ত্রিপুরা উপকৃত হতে পারে। তখনই ঢাকায় একটি কথা প্রচারিত হতে থাকে, বাংলাদেশের ওপর মার্কিন চাপের কারণ হলো, ওয়াশিংটন ডিসি বাংলাদেশে একটি নৌ ঘাঁটি স্থাপন করতে চায়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সেই চাওয়া সরাসরি পূরণ হয়নি, বরং মাতারবাড়ী প্রকল্পে জাপান ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করায় বাংলাদেশ পরোক্ষভাবে যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া পূরণ করছে বলে মনে করা হচ্ছে। জাপান সফরের আগে ইন্দো-প্যাসিফিক রূপরেখা ঘোষণা যা যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক পরিকল্পনার কাছাকাছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইঙ্গিত দিয়ে বলেছিলেন, তিনি রাশিয়ার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য চীনা ইউয়ানে অর্থ প্রদানে সম্মত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ঢাকার ৫০ বছরের বন্ধুত্ব উদযাপনে ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতি চালিয়েছেন। এরপর আগামী জুন এবং সেপ্টেম্বরে দুটি শীর্ষ সম্মেলনের জন্য ফ্রান্স এবং নয়াদিল্লিতে আরো দু দফা বিদেশ সফর হওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সফরগুলো হওয়ায় সেদিকে নজর থাকবে রাজনীতিসংশ্লিষ্ট মহলের। তবে তার আগে জাপান সফর শেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য গিয়ে বড় শক্তিগুলোর সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App