×

জাতীয়

রানা প্লাজার অভিজ্ঞতা নিয়ে বই, মোড়ক উন্মোচন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৩২ পিএম

রানা প্লাজার অভিজ্ঞতা নিয়ে বই, মোড়ক উন্মোচন

মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইন্সটিটিউটে (আইবিএ) ‘রানা প্লাজা অভিজ্ঞতা: সামগ্রিক কল্যাণের নিশ্চয়তা এবং পোশাক শিল্পের রুপান্তর’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভোরের কাগজের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। ছবি: ভোরের কাগজ

রানা প্লাজার অভিজ্ঞতা নিয়ে বই, মোড়ক উন্মোচন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইন্সটিটিউটে (আইবিএ) ‘রানা প্লাজা অভিজ্ঞতাঃ সামগ্রিক কল্যাণের নিশ্চয়তা এবং পোশাক শিল্পের রূপান্তর’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) আইবিএর প্রফেসর এম শফিউল্লাহ অডিটোরিয়ামে উন্মোচন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। বইটি সম্পাদনা করেছেন ব্যবসায় প্রশাসন ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ এ মোমেন এবং অধ্যাপক ড. সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার। বইয়ের গবেষণা কার্যক্রমের সমন্বয় করেন আইবিএর সহযোগী অধ্যাপক খালেদ মাহমুদ ও প্রভাষক ফাতেমাতুজ যাহরা সাকী। রানা প্লাজা দুর্ঘটনার সময় যারা নিহত হয়েছেন এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের জন্য এ বইটি উৎসর্গ করা হয়েছে। অধ্যাপক মোমেন বইটি সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন।

বইটিতে পোশাক শিল্পের ইতিহাস, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার সময়ের কথা, এবং পরবর্তীতে পোশাক শিল্পের অনবদ্য রূপান্তরকে তুলে ধরা হয়েছে। এ গবেষণার জন্য মোট ২৭টি একান্ত সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছিল। বইটিতে ক্রেতা, বিদেশী ব্র্যান্ড, সাংবাদিক, শ্রমিক সংগঠন, আরএমজি কর্মী, সরকারি সংস্থা, প্রেস মিডিয়া, ঘটনার সাক্ষী, ফটোসাংবাদিক এবং ভুক্তভোগীদেরসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করা হয়েছে। আইবিএ ৩৬ জন আহতের সাক্ষাৎকার নিয়েছে যাদের আহতের মাত্রা ৭০ ভাগ পর্যন্ত ছিল। এছাড়াও দুইজন নিহতের পরিবারের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়।

এদের মধ্যে ছিল ২৬ জন মহিলা এবং ১২ জন পুরুষ। তাদের মধ্যে ৪ জন ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বলেননি। তাদের ছাড়া সবাই গড় ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন গড়ে ২ লাখ চৌষট্টি হাজার টাকা। সরকার, এনজিও, কারখানার মালিক এবং অন্যান্য সমিতি তাদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে যথাসম্ভব স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে সহায়তা করেছে। তারা তাদের দুঃখ এবং বেদনার কথা বলেছে এই বইটিতে এবং আরও উল্লেখ করেছে যে তাদের জন্য আরো কিছু করা যেত। এটি আরএমজি শিল্পের জন্য একটি ব্যয়বহুল শিক্ষা ছিল।

আইবিএ ১০০ টি কারখানা থেকে স্তরিত স্যাম্পলিং কৌশল ব্যবহার করে বিভিন্ন স্তরে ৫০০ শিল্পকর্মীর উপর জরিপ করেছে। পোশাক কারখানাগুলিকে এমআইবি (ম্যাপড ইন বাংলাদেশ) ডাটাবেস থেকে বাছাই করা হয়েছিল, যা সারা দেশে পাঁচটি প্রধান শিল্প অঞ্চলে বিস্তৃত ছিল: ঢাকা, ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর এবং চট্টগ্রাম যেখান থেকে যথাক্রমে ১৮০, ১৩, ১০৮, ১৫৯ এবং ৪০ জন শ্রমিকের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছিল। পোশাক শিল্পে কমপক্ষে ৬ মাসের বেশি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন প্রার্থীদের জরিপের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছিল।

গবেষকরা দেখেছেন যে, ২০১৩ এবং ২০১৮ সালে শ্রম আইন সংশোধন করা হয়েছিল এবং ২০১৫ সালে প্রবর্তিত এম বিধিগুলি শ্রমিকদের জন্য আরও সুবিধাজনক হয়েছে। ২০১৩ থেকে ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত শ্রম বিভাগে অনুচিত শ্রম বিষয়ে। মোট ৪৯টি অভিযোগ জমা দেয়া হয়েছিল। সমস্ত অভিযোগের মধ্যে, ১০টির নিষ্পত্তি করা হয়েছে এবং বাকি ৩৯টির জন্য শুনানি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। একটি আকর্ষণীয় তথ্য রয়েছে যে, ৯০ জন মহিলা পোশাক কর্মী এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন্সে বহুসংস্কৃতির বৈশ্বিক পরিবেশে উচ্চতর পড়াশোনা করছেন। তাদের বেতন নিজ নিজ উদ্যোক্তাদের দ্বারা পরিশোধ করা হচ্ছে। বাংলাদেশই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক গ্রীন কারখানা রয়েছে।

অনুষ্ঠানে আলোচক প্যানেলে নানান বিষয়ে আলোচনা করা হয়। অধ্যাপক ড. সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার পোশাক শিল্প নিয়ে একাডেমিক গবেষণা এবং নীতি বিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করেন। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি মোঃ আতিকুল ইসলাম পোশাক শিল্পকে ঐ সময়ে নেতৃত্ব নেয়ার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি মোঃ শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) শ্রমিকদের মঙ্গল নিশ্চিত করতে এবং পোশাক শিল্পের রূপান্তরে শিল্প নেতাদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। ইউনাইটেড ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কার্সের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম পোশাক শিল্পে শ্রমিকদের মঙ্গল নিশ্চিত করতে শ্রমিকদের অধিকার এবং সমন্বিতভাবে দরকষাকষির গুরুত্ব তুলে ধরেন। দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত সচেতনতা বাড়ানো এবং পোশাক শিল্পে পরিবর্তন চালনা করার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকার আলোচনা করেছেন। বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান পোশাক শিল্পের রূপান্তর এবং শ্রমিকদের সুস্থতা নিশ্চিত করতে বিজিএমইএর ভূমিকা তুলে ধরেন। এই অনুষ্ঠানে গণমাধ্যম, শ্রমিক সংগঠন, ক্রেতা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App