×

জাতীয়

এবার ঈদযাত্রায় কোনো ঝামেলা নেই কমলাপুরে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:১৯ এএম

এবার ঈদযাত্রায় কোনো ঝামেলা নেই কমলাপুরে

ছবি: সংগৃহীত

অনলাইনে শতভাগ টিকেট বিক্রির পর ‘টিকেট যার ভ্রমণ তার’ নিশ্চিতে ব্যাপক কড়াকড়ির মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে রেলের ঈদযাত্রা। গতকাল সোমবার সকাল ৬টা ২০ মিনিটে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস কমলাপুর ছেড়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে স্বস্তির ট্রেনযাত্রায় রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছেন নানা বয়সি মানুষ। বাচ্চা-কাচ্চাসহ লাগেজের বহর নিয়ে ট্রেনে উঠতে বা নিজের আসনে গিয়ে বসতে কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়নি যাত্রীদের। ঝুঁকি নিয়ে ছাদেও উঠতে পারেনি কেউ। কেন না, এবারের ঈদযাত্রায় যাত্রীদের কমলাপুর স্টেশন চত্বর থেকে ট্রেন পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরুতে হচ্ছে কয়েক স্তরের তল্লাশি।

এতে সন্তুষ্টি প্রকাশের পাশাপাশি বিনা টিকেটের যাত্রী রুখতে রেলের এ পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন অধিকাংশ যাত্রী। আবার যারা নিজের আইডিতে টিকেট না কেটে অন্য কোনোভাবে সংগ্রহ করেছেন তাদের অনেকেই জড়াচ্ছেন বাগবিতণ্ডায়, শাসাচ্ছেন ট্রাভেলিং টিকেট এক্সামিনারদের (টিটিই)। গতকাল সকালে সরজমিন রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, স্টেশনের প্রবেশপথেই রয়েছে বাঁশের তৈরি পাঁচটি গেট।

এতে পাঁচজন টিটিই যাত্রীদের টিকেট ও এনআইডি চেক করছেন। হ্যান্ড মাইকে টিকেট হাতে নিয়ে প্লাটফর্মে প্রবেশের অনুরোধ জানাচ্ছেন তারা। তাদের কাজে সহায়তা করছেন রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর (আএনবি) সদস্যরা। পাশে রয়েছে র‌্যাব, পুলিশ ও আনসারের বিশাল টিম। তারাও যাত্রীদের লাইন সোজা করতে ও ভিড় সামলাতে সহায়তা করছেন।

দ্বিতীয় চেকিং হচ্ছে টিকেট কাউন্টারের সামনের অংশে, সেখানে রয়েছে তিনটি গেট। সবশেষে মূল প্রবেশপথের আগে সন্দেহভাজনদের তৃতীয় চেকিং করা হচ্ছে। টিটিইরা প্রয়োজনে পয়েন্ট অব সেলস (পিওএস) মেশিন ব্যবহার করে টিকেট চেকিং ও এনআইডি মিলিয়ে দেখছেন। এমনই কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে যাত্রীদের প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে প্ল্যাটফর্মে।

এদিকে, অন্যের এনআইডি দিয়ে টিকেট কাটা যাত্রীদের প্রবেশে বাধা দিচ্ছেন টিটিইরা। অন্যের আইডি দিয়ে টিকেট কাটা আইনজীবী পরিচয় দেয়া এক যাত্রী বলেন, আমার আইডি (রেলওয়ের সার্ভারে রেজিস্টার্ড আইডি) নষ্ট বলে ভাইয়ের আইডি দিয়ে টিকেট কেটেছি। আমি কেন এটা দিয়ে যেতে পারব না।

বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে তিনি বলেন, মন্ত্রীর পিএকে কল দেব? এ সময় তার সঙ্গে থাকা অন্যজন বলেন, এতো কড়াকড়ি হলে চলবে? ধীরে ধীরে কড়াকড়ি করতে হবে। টিটিই তাদের বলেন, এই চার আসনের কারো একজনের সঙ্গে যদি এনআইডি মিলতো, তবুও যেতে দিতে পারতাম। কিন্তু আপনাদের কারো সঙ্গে আইডি মেলেনি। তাই আপনাদের যেতে দিতে পারব না। কারণ, অন্য কেউ যদি টিকেট ও এনআইডি শো করে, তাকে যেতে দিতে বাধ্য আমি।

কর্তব্যরত টিটিইরা জানান, প্রায় ৯৫ শতাংশ যাত্রীর টিকেটের সঙ্গে এনআইডির মিল আছে। ৫ শতাংশ যাদের মিল নেই, তাদের আমরা ভিতরে যেতে বাধা দিচ্ছি। আমাদের এভাবেই নির্দেশনা দেয়া আছে। এরা সম্ভবত কোনো অনলাইন দোকান থেকে ব্ল্যাকে টিকেট কিনেছেন।

সার্বিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে ঢাকা বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সফিকুর রহমান বলেন, স্টেশনে প্রবেশের জন্য একজন যাত্রীকে কয়েক স্তরের চেকিং সম্পন্ন করতে হচ্ছে। যারা সত্যিকারের টিকেটের যাত্রী তাদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। যারা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে টিকেট সংগ্রহ করেছেন, তারা হয়তো অসুবিধায় পড়েছেন। তবে আমরা ‘টিকেট যার ভ্রমণ তার’ নিশ্চিত করতে প্রতিটি যাত্রীর টিকেট চেকিং করছি। তাছাড়া টিকেট বিহীন যাত্রীরা যাতে কোনোভাবেই ট্রেনে চাপতে না পারে, টিকেটধারী যাত্রীদের যাত্রা অনিরাপদ না করতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখছি। যদিও প্রতিটি ট্রেনের সিটের বিপরীতে ২৫ শতাংশ স্ট্যান্ডিং টিকেট বিক্রি করছে রেলওয়ে। তারা দাঁড়িয়ে গন্তব্যে যেতে পারছেন।

কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, এবারে শতভাগ ট্রেন টিকেট অনলাইনে বিক্রি করেছে রেলওয়ে। প্রতিদিন কমলাপুর থেকে ৩০-৩২ হাজার যাত্রী বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রা করছেন। সারাদেশে প্রায় ৭৫ হাজার যাত্রী ট্রেনে চেপে ঈদ যাত্রা করছেন বলে জানান তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App