×

জাতীয়

বিদ্যানন্দ নিয়ে সমালোচনার জবাব দিলেন কিশোর কুমার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৩, ১২:৩০ এএম

বিদ্যানন্দ নিয়ে সমালোচনার জবাব দিলেন কিশোর কুমার

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কিশোর কুমার দাস। ফাইল ছবি

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন নিয়ে নানান সমালোচনা চলছে। ফেসবুকে প্রকাশিত একটি কোলাজ ছবিকে কেন্দ্র করে এই সমালোচনা শুরু হয়। এরই সূত্র ধরে বিদ্যানন্দের অন্যান্য কাজ ও প্রতিষ্ঠানটির স্বচ্ছতা নিয়েও ফেসবুকে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।

সোমবার (১৭ এপ্রিল) বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কিশোর কুমার দাস তার ফেসবুক পেজ থেকে লাইভ করে এসব প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, যারা বিদ্যানন্দকে নিয়ে সমালোচনা করছেন, তারা মহৎ উদ্দেশ্য নিয়েই তা করছেন। তারা ভাবছেন, বিদ্যানন্দ ভুল করলে তা দেশের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। তবে বিদ্যানন্দের কাজকর্মে কেউ স্বচ্ছতা না পেলে বা প্রতিষ্ঠানটি অনৈতিক কাজ করছে, এমন মনে করলে যে কেউ বিদ্যানন্দের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন। এর আগেও বিভিন্নজন উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন, তার জবাবও দেয়া হয়েছে।

গত ৪ এপ্রিল রাজধানীর বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের পর বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকেরা ব্যবসায়ীদের সহায়তায় নানা উদ্যোগ নেন। স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্যোগে পুড়ে যাওয়া কাপড়গুলো ব্যবহার উপযোগী করার পর অভিনেতা-অভিনেত্রীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের জনপ্রিয় ব্যক্তিদের কাছে তা বিক্রি করেন। যে কাপড় বাঁচানো সম্ভব হয়েছে, তা দিয়ে শিশুদের পোশাক, গয়নাসহ নানা পণ্য বানিয়ে তা বিক্রি করে ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।

বিদ্যানন্দের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, এক নারী উদ্যোক্তার বানানো কিছু গয়নার ছবি দেখেই ওই সব গহনা বানানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে বিদ্যানন্দের ফেসবুক পেজে কোলাজ ছবি প্রকাশের সময় ওই নারী উদ্যোক্তার বানানো কয়েকটি গয়নার ছবিও প্রকাশ করা হয়। এই নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে পরে পেজ থেকে তা সরিয়ে ফেলা হয় এবং প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়। তবে এরপরও সমালোচনা চলছে।

ফেসবুক লাইভে কিশোর কুমার দাস এই ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে তিনি এ জন্য দায়ী ও এই অপরাধে পদ ছাড়তে বললে তাতে তার কোনো আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিদ্যানন্দের ৮-১০টি ফেসবুক পেজ রয়েছে। এতে প্রায় ৩০ হাজার লেখা আছে, তার মধ্যে ৩০টি লেখাতে ভুল থাকতেই পারে। বেতনভুক্ত কেউ লেখাগুলো লিখছেন না, তরুণ স্বেচ্ছাসেবকেরা লিখেছেন।

কিশোর কুমার দাস বলেন, কোনো ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর সেখানে কতভাবে কাজ করা যায়, সেটাই বিদ্যানন্দ দেখাতে চেয়েছে। তবে অনেকে অভিযোগ করেছেন, বিদ্যানন্দ বঙ্গবাজারে কাজ করায় পুরো মনোযোগ বিদ্যানন্দের দিকে চলে গেছে। বিদ্যানন্দের জন্যই নাকি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর যে ধরনের প্রতিবাদ হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি।

তিনি আরো বলেন, বঙ্গবাজার তহবিলে দুই কোটি টাকা জমা হয়েছে। তা অনুষ্ঠান করেই বিতরণ করা হবে। তবে অনুষ্ঠান কোথায় হবে, তা আগে থেকে কেন জানানো হয় না, তা নিয়েও অনেকে সমালোচনা করছেন। এর উত্তর হলো, আগে থেকে জানানো হলে অনেককেই চাঁদা দিতে হয়। প্রতিষ্ঠান এটি চায় না বলেই আগে থেকে স্থান জানানো হয় না।

বিদ্যানন্দ পাহাড়সহ বিভিন্ন জায়গায় জমি কিনেছে- এই নিয়ে ফেসবুকে বেশি সমালোচনা হচ্ছে। এ বিষয়ে কিশোর কুমার বলেন, মানুষ বিভিন্ন ভিডিওর অংশবিশেষ দেখে সমালোচনা করছেন। বিদ্যানন্দ বেশির ভাগ জমির মালিক না, লিজ নেওয়া জমিতে অনাথালয়, এতিমখানা, হাসপাতালের মতো কার্যক্রম পরিচালনা করছে। শর্ত অনুযায়ী লিজ নেওয়া হয়েছে জমিগুলো। লিজ দেওয়া জমির দাতা বা প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম বন্ধ করলে জমি ফেরত দিতে হবে। জমি কোনোভাবেই ব্যবসা বা পর্যটনের জন্য ব্যবহার করা যাবে না। নিয়মের ব্যত্যয় ঘটালে জমি দাতার কাছে ফেরত চলে যাবে। পাহাড়ে অনাথালয়গুলোতে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ছেলেমেয়েরা থাকছে, স্থানীয় লোকজনই সেখানে কাজ করছেন। তবে স্থায়ী উদ্যোগের জন্য কুড়িগ্রামে মেয়েদের এতিমখানার জন্য এক একরের বেশি জায়গা ও রামুতে এতিমখানার জন্য জমি কিনেছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App