×

জাতীয়

পুরান ঢাকায় ঐতিহ্য রক্ষার হালখাতা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:১৬ এএম

পুরান ঢাকায় ঐতিহ্য রক্ষার হালখাতা

ছবি: সংগৃহীত

পহেলা বৈশাখে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের আরেক নাম হালখাতা উৎসব। দেনা-পাওনা পরিশোধের মাধ্যমে নতুন করে হিসাব খোলার রেওয়াজে এ উৎসব পালিত হয়। কিন্তু কালের বিবর্তনে আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে উৎসবটি। লাল টালিখাতায় হিসাব রক্ষাও যেন এখন কমে এসেছে। তবে এখনো বাঙালির এ ঐতিহ্য ধরে রেখেছে পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা।

বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী আজ পহেলা বৈশাখের দিনে পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজার ও তাঁতীবাজারের প্রায় একহাজার দোকানে এই উৎসব পালিত হবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে স্বর্ণ, বস্ত্র ও কাঁচামালের দোকানে এ হালখাতা উৎসব পালিত হবে। এছাড়া হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী শনিবার পহেলা বৈশাখের সঙ্গে হালখাতা উৎসবও পালন হবে পুরান ঢাকায়।

গতকাল বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার, ইসলামপুর বাজার, বংশাল ও বাদামতলীসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে ঘুরে দেখা যায় দোকানগুলোতে হালখাতা উৎসবের জন্য প্রস্তুতির তোড়জোড়। কেউ বা করছেন ফুল দিয়ে সাজসজ্জা ও ধোঁয়া-মোছার কাজ।

শাঁখারীবাজারের স্বর্ণের ব্যবসায়ী নারায়ণ দত্ত বলেন, দুই বছর করোনা মহামারির কারণে বেচাকেনা বন্ধ থাকায় হালখাতা হয়নি। গত বছর নিয়মরক্ষার জন্য স্বল্প পরিসরে করা হয়েছিল। তাই এ বছর একটু বড় পরিসরে হালখাতা করার চেষ্টা করছি।

একই বাজারের প্রতীমা তৈরির পণ্য বিক্রি করা ব্যবসায়ী রাম রয় বলেন, এক সময় ব্যাপক আয়োজনে হালখাতা পালিত হতো। কিন্তু দিন দিন এ রীতি হারিয়ে যাচ্ছে। মূলত পুরাতন বছরের বাকি-বকেয়ার হিসাব চুকিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন বছরের হিসেব শুরু করার জন্য এ হালখাতা উৎসব করা হয়। তবে এখন এ বিষয়ে এত গুরুত্ব দেয়া হয় না।

ইসলামপুরের বস্ত্র ব্যবসায়ী করিম উদ্দিন বলেন, পহেলা বৈশাখ এলেই সারা বছরের হিসাব চুকিয়ে আমরা নতুন হালখাতা করে থাকি। তবে এখন ব্যবসায়ীরা সবাই ইংরেজি মাসের ওপর ভিত্তি করে আয়-ব্যয় করেন। তাই ধীরে ধীরে পহেলা বৈশাখে হালখাতা উৎসব বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আমরা স্বল্প পরিসরে হালখাতা উৎসব করব।

শ্যামবাজারের কাঁচামালের বেপারী করিম মিয়া বলেন, ছয়-সাত বছর আগেও আমরা হালখাতা করে বাংলা বছরের শুরুতে দেনা-পাওনার হিসাব করতাম। কিন্তু এখন আর হালখাতা করার জন্য অপেক্ষা করি না। নিজের সুবিধামতো সময়ে বাকি পাওনা আদায় করে নিয়ে থাকি। কিছু কিছু জায়গায় হালখাতা হবে। এদিকে ২৫ বছর ধরে শাঁখারীবাজারে ফেরি করে টালিখাতা বিক্রি করে আসছেন ব্যবসায়ী মনু মিয়া।

তিনি বলেন, আগে খুব ভালো বিক্রি করতাম। কয়েক বছর ধরে টালি খাতার বিক্রি অনেক বেশি কমেছে। তবুও কদর কমেনি হালখাতার লাল টালি খাতার। একটা টালি খাতা তিনশ থেকে দুই হাজার টাকায় বিক্রি করেন বলে জানান তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App