×

জাতীয়

জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে শ্রদ্ধা নিবেদন আজ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:৫৩ এএম

জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে শ্রদ্ধা নিবেদন আজ

ছবি: সংগৃহীত

সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহ বৃহস্পতিবার সকালে নেয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। তবে তাকে সমাহিত করা হবে নাকি দেহ দান করা হবে- সে সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। পরিবারের সদস্যরা বৈঠক করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন এবং শ্রদ্ধা নিবেদন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. আলতাফুন্নেসা।

বুধবার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষ তাকে শ্রদ্ধা জানাবেন। একই সময় রাষ্ট্রীয়ভাবে তাকে সম্মান জানানো হবে। দুপুর ২টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তার নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর শুক্রবার সকাল ১০টায় জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহ নেয়া হবে সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জুমার নামাজের পর আরেক দফা জানাযা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে গণ সংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পরিবারের সদস্যরা বৈঠকে করে সিদ্ধান্ত নেবেন- তাকে সমাহিত করা হবে নাকি দেহ দান করা হবে। তারা ১০ ভাইবোন, তার স্ত্রী-সন্তান আছেন। একজন বাদে তাদের সবাই ঢাকায় অবস্থান করছেন। দেহ দানের বিষয়টি সম্পূর্ণ তাদের সিদ্ধান্ত। তারা আজকের (বুধবার) মধ্যে বসে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন বলে আশা করছি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জানাযার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

তবে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ছোট বোন আলেয়া চৌধুরী পরে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত জানি পরিবারের বেশির ভাগ সদস্য মরদেহ দান করার পক্ষে। তিনি কয়েকবার বলেছেন দেহ দান করতে। আমরা তার কথার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। বোন আলেয়া চৌধুরী ছাড়াও বীর মুক্তিযোদ্ধা ইশতিয়াক আজিজ, নাগরিক ঐক্যের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডা. নাজিমুদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

গত মঙ্গলবার রাত ১০টা ৪০ মিনিটে ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে মারা যান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। গত কয়েক দিন তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। ৮২ বছর বয়সি এই বীর মুক্তিযোদ্ধার মরদেহ রাখা হয় বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে। একাত্তরে ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে মুক্তিযোদ্ধাদের সেবায় আত্মনিয়োগকারী জাফরুল্লাহর বড় অবদান ছিল জাতীয় ওষুধ নীতি প্রণয়নে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তুলে কম খরচে দরিদ্রদের চিকিৎসাসেবায় তার অবদান অপরিসীম। একেবারেই সাদামাটা জীবনে অভ্যস্ত জাফরুল্লাহ চৌধুরী কোনো রাজনৈতিক দলে যুক্ত ছিলেন না। তবে দেশ ও জাতির স্বার্থে সব রাজনৈতিক দলেরই গঠনমূলক সমালোচনা করতেন। তিনি বলতেন- আমি মানুষের রাজনীতি করি।

রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীসহ নানা মহলের শোক : প্রান্তিক সাধারণ ও হতদরিদ্র মানুষের জন্য আজীবন কাজ করে যাওয়া মহান এ মানুষটির মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বুধবার এক শোকবার্তায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর রুহের মাগফিরাত কামনার পাশাপাশি তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান রাষ্ট্রপতি। পৃথক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ওষুধ শিল্প ও জনস্বাস্থ্য খাতে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনিও মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

এছাড়া শোক প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্য ও স¤প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাকের পার্টি চেয়ারম্যান মোস্তফা আমীর ফয়সল বীরসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App