×

জাতীয়

বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় ৫০ বিলিয়নের তহবিল অনুমোদন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২৩, ১২:১১ পিএম

আইএমএফের বসন্তকালীন সভায় যোগ দেননি অর্থমন্ত্রী

বিশ্বব্যাংক গ্রুপের আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ৭ দিনের বসন্তকালীন অধিবেশন গতকাল সোমবার থেকে শুরু হয়েছে। এই অধিবেশনে বৈশ্বিক সংকটের জন্য প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলারের ঘোষণা দেয়ার কথা জানিয়েছে সংস্থাটি। আগামী রবিবার, ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত এই অধিবেশন চলবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাংক গ্রুপের সদর দপ্তরে এই সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সভার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফ্র্যান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং বারডোজের প্রধানমন্ত্রী মিয়ামতলু। তাদের সঙ্গে বিশ্বেজর বিভিন্ন দেশের নেতা, অর্থনীতিবিদ, অর্থমন্ত্রী, শিক্ষাবিদ, উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা থাকছেন। বিশ্বব্যাংকের সদস্যভুক্ত ১৮৯ দেশের অর্থমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নররা এতে অংশ নিচ্ছেন।

অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের নেতৃত্বে এই বসন্তকালীন সভায় ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নিচ্ছে। দলটি গত শুক্রবার ওয়াশিংটনের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছে। গভর্নরের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান, অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন ও অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রেহানা পারভীন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) থেকে দুজন সদস্য এতে যোগ দিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে আরো ৩ জন যোগ দেয়ার কথা রয়েছে।

যাননি অর্থমন্ত্রী : সাধারণত এ ধরনের বৈঠকে বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবারো যোগ দিচ্ছেন না। তিনি গত বছরের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত ৬ দিনব্যাপী বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সম্মেলনেও যোগ দেননি।

৫০ বিলিয়ন ডলার অনুদানের ঘোষণা : বিশ্বব্যাংক গ্রুপের এই বসন্তকালীন সভায় এবার বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় ৫০ বিলিয়ন ডলার বাড়তি অর্থায়নের ঘোষণা দেয়ার কথা জানিয়েছে সংস্থাটির সহযোগী প্রতিষ্ঠান দ্য ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক ফর রিকন্সট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইবিআরডি)। আইবিআরডির সদস্য হওয়ায় এই অর্থায়নের সুবিধা বাংলাদেশও পাবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস আগেই এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, ২০২০ থেকে ২০২২ অর্থবছরের ৩ বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থায়ন করেছে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ। এই অর্থায়নের অর্ধেকেরও বেশি জলবায়ু খাতে অর্থায়ন করা হয়েছে। ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে ভূ-অর্থনৈতিক বিভাজন, বিশৃঙ্খলার ঝুঁকি এবং সম্ভাব্য সমস্যার সমাধানের জন্য এই খরচ দেয়া হতে পারে।

এমডির বক্তব্য : বিশ্বব্যাংকের এমডি ক্রিস্টিনা জর্জিয়েভা এই অধিবেশনের উদ্বোধনী ভাষণে বলেন, ৩টি বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে আমাদের কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে হবে।

সবাইকে একত্রিত করা : আমাদের সংস্থাগুলো দাঁড়িয়ে আছে সবাইকে একত্রিত করা ওপর ভিত্তি করে। আমাদের সামনের বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জগুলোকে আরো ভালোভাবে বুঝতে হবে। আমাদের সামনে একের পর এক সমস্যার পাহাড় পেরোতে হচ্ছে। প্রথমে কোভিড, তারপরে ইউক্রেনে-রাশিয়ার যুদ্ধ। এ কারণে বাড়ছে মুদ্রাস্ফীতি এবং জীবনযাত্রার ব্যয়। সামাজিক সংকট সবাইকে ভোগাচ্ছে। তবে এখনো আমরা স্থিতিশীল পর্বতারোহী হিসেবে টিকে আছি। কিন্তু সামনে রুক্ষ, কুয়াশাচ্ছন্ন পথ আমাদেরকে আগের তুলনায় অনেক দুর্বল করে দিতে পারে। দারিদ্র্য এবং ক্ষুধা আরো বাড়তে পারে। একটি বিপজ্জনক প্রবাহ যা কোভিড সংকট দ্বারা শুরু হয়েছিল।

গ্লোবাল আউটলুক : অধরা অর্তনীতিকে পুনরুদ্ধার করতে নিন্ম আয়ের দেশগুলোর জন্য তাদের রপ্তানির চাহিদা দুর্বল হওয়ার কারণে তাদের উচ্চতর সুদে ঋণ নিতে হয়। তাদের মাথাপিছু আয়ের প্রবৃদ্ধি ঋণের তুলনায় কম দেখতে পাচ্ছি। এটি একটি গুরুতর সমস্যা। নিন্ম আয়ের দেশগুলোর জন্য ঋণপ্রাপ্তি আরো কঠিন করে তুলেছে।

৩টি অগ্রাধিকার : স্বল্প ও মাঝারি মেয়াদে ৩টি উজ্জ্বল সম্ভাবনার জন্যে কাজ করতে হবে। প্রথম হচ্ছে, মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করা। মূল্য স্থিতিশীলতা ছাড়া শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি হতে পারে না। আর্থিক স্থিতিশীলতা ছাড়া আর্থিক খাত বা ব্যাংকসমূহ টিকে থাকতে পারবে না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App