×

জাতীয়

মৃত্যুর সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে রাস্তায় নামবো

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৩, ০৫:৩৮ পিএম

মৃত্যুর সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে রাস্তায় নামবো

সংসদে শামীম ওসমান। ফাইল ছবি

বাংলাদেশকে বাঁচাতে মৃত্যুর সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে রাস্তায় নামার ঘোষণা দিলেন আওয়ামী লীগের নারায়ণগঞ্জ-৪ এর দাপুটে সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। তিনি বলেন, এবার হয়তো প্রধানমন্ত্রীর কথাও শুনবো না, বাংলাদেশকে বাঁচানোর জন্য মৃত্যুর সাথে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে রাস্তায় নামবো।

রবিবার (৯ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বিশেষ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৪৭ বিধিতে উপস্থাপিত প্রস্তাবের উপর তৃতীয় দিনে আলোচনা অংশ নিয়ে একেএম শামীম ওসমান এ কথা বলেন। এ সময় ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

শামীম ওসমান বলেন, এইবার আর ‘৭৫ সাল হবে না। এইবার হয়তো প্রধানমন্ত্রীর কথাও শুনবো না। পরিস্কারভাবে বলতে চাই এবার প্রধানমন্ত্রীর কথাও শুনবো না কারণ এইবার আমরা যারা এখানে সংসদ সদস্য আছি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আছি, এইবার ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশকে বাঁচাবার জন্য, নেত্রীকে বাঁচানোর জন্য, ভবিষ্যত বাঁচানোর জন্য, বাংলাদেশকে মাথা উচু করে দাঁড় করানোর জন্য মাথায় কাফনের কাপড় পড়ে মৃত্যুর সাথে এ্যাপোয়ে›নমেন্ট নিয়ে রাস্তায় নামবো। এটা বুঝতে হবে আমাদের কথা যেনো হালকাভাবে না নেয়।

তিনি বলেন, সবচেয়ে ধিকৃত মানুষের নাম খুনি মোশতাক। এই খুনী মোশতাক আমাদের বাসায় ফোন করে আমাকে বললো তোমার আব্বাকে দাও। আমাদের রাজনৈতিক পরিবার তাই আমি বললাম আমার বাবা বাসায় নাই। আমার আব্বা সেখানে দাঁড়িয়েছিলেন। তারপর বললেন তোমার মাকে দাও, আমি আমার মাকে দিলাম। আমি দেখলাম আমার মা উনিও রাজনৈতিক পরিবারের মেয়ে। তিনি যখন কথা বলছিলেন আমি দেখলাম আমার মা রক্তের মতো লাল হয়েছে তার চেহারা। খন্দোকার মোশতাক আমার মা কে বললো মা তুই জোহাকে বল (আমার আব্বার নাম ধরে) আগামীকাল সংসদে আসতে। আগামীকাল সংসদে আসতে বল আমি ওকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বানাবো। আমি দেখলাম আমার বাবা আমার মায়ের দিকে তাকিয়ে আছেন কি উত্তর দেয়। আমার মা উত্তর দিয়েছিলেন সেদিন খন্দকার মোশতাককে যে ‘আমি আপনাকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই (অনেকেই সেদিন এই সংসদে এসে বঙ্গবন্ধুর রক্তের উপর পা দিয়েছিলেন) আমার স্বামী আপনার মন্ত্রী সভায় যাবে না। আর যদি যায় আমি প্রথমে চেষ্টা করবো তাকে বাধা দেওয়া, যদি বাধাতে কাজ না হয় আমি চেষ্টা করবো হত্যা করার, আর যতি তাও না পারি আমি নিজে আত্মহত্যা করবো। এর পাঁচ মিনিটের মধ্যে আমাদের বাড়ির দরজা জানালা সব ভেঙে ফেলা হলো, আমার বাবাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হলো। এরপর আমাদের দুরবস্থায় পড়তে হয়- তিনটি বছর এক বেলা ভাত খেয়েছি, এক বেলা খাই নাই। আমার মেজো ভাই সেলিম ওসমান শেখ জামাল ভাইর বন্ধু ছিলেন, বড় ভাই নাছিম ওসমানের খোজ নেয়ার জন্যে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারি ডালিম, বজলুল হুদারা ঢাকার থেকে গুলি করতে করতে নারায়ণগঞ্জের দিকে আসলো, এসে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেলো। এসময় মেজর ডালিম হাত দিয়ে পিচতলটা ঘুরিয়ে বলছিলো এই হাত দিয়ে আব্বাকে মেরেছি, আম্মাকে মেরেছি, ভাইকে মেরেছি বলে আমার ভাইটার বুকের ভেতরে ৪৬টা ছিদ্র করেছিলো সিগারেটের আগুন দিয়ে। আমার মেজো ভাই সেলিম ওসমান ওই অবস্থায়, আমার মা ওই খুনিদেরকে ফোন করেছিলেন, ফোন করে বলেছিলেন স্পষ্টভাবে ওই কিসমতকে আর হুদাকে, একজন মায়ে হুমকার দেখে তারা ভয় পেয়েছিলো। বলেছিলেন, তোমরা আমার আরেকটা ছেলে আছে ওকেও নিয়ে যাও। মনে রাখবা আমার স্বামীও জেলে আছে মেরে ফোলো, আমার ছেলে কেও মেওে ফেলো। কিন্তু আমার একটা ছেলে কিন্তু দেশ থেকে বিদেশে চলে গেছে, ওই একটা ছেলে তোমাদের বংশ নির্বংশ করে দেবে। এই ভয় তারা পেয়েছিলো। ওই তো আমাদের রাজনৈতিক জীবনের ইতিহাস, ওরা আবার গণতন্ত্রের কথা বলে। আমাদের নেত্রী শেখ দেশে আসার পর সেখানে তার বাবার লাশ ছিলো, মায়ের লাশ ছিলো সেখানে নামাজ পড়তে চেয়েছিলেন কিন্তু জিয়াউর রহমান দেয় নাই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App