রাজধানীর তেজগাঁও থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান।

আজ রবিবার (৯ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শেখ সাদীর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন শামসুজ্জামান। শুনানি শেষে আদালত মামলার আগামি ধার্য তারিখ পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন। শামসুজ্জামানের আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার জামিনের বিষয়টি জানান।

এরআগে গত ২৯ মার্চ রাতে রমনা থানায় প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান,পত্রিকাটির সাভারের নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান ও ক্যামেরাম্যানসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদেরও আসামি করে মামলা করেন আইনজীবী আবদুল মালেক। মামলায় প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহার করে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগ আনেন বাদী আব্দুল মালেক।

মামলা দায়েরের পর শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৩০ মার্চ জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ৩ এপ্রিল জামিন পান তিনি। এরআগের দিন ২ এপ্রিল মতিউর রহমান উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পান।

এরআগে গোলাম কিবরিয়া নামে এক ব্যক্তি ২৯ মার্চ তেজগাঁও থানায় শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় বলা হয়, গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে দৈনিক প্রথম আলো একটি ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ করে। প্রথম আলো পত্রিকা অফিস থেকে সংবাদটি শেয়ার করে। সংবাদটিতে দেখা যায়, একটি শিশু ফুল হাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফটকে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিবেদকের দাবি শিশুটির নাম জাকির হোসেন। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, শিশু জাকির হোসেন বলে, পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়ে কি করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব”।

পরে সামাজিক মাধ্যমে সংবাদটি ভাইরাল হয়ে যায়। সংবাদটি দেশ বিদেশে অবস্থানরত হাজার হাজার মানুষ তাদের ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ক্রিনশটসহ শেয়ার করেন। এই ঘটনায় বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশের সোনালী গৌরবউজ্জ্বল ভাবমূর্তি নিয়ে বাংলাদেশের জনগণসহ বহিঃবিশ্বে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। স্বাধীনতা দিবসের দিনে এই সংবাদ প্রকাশ করায় বিশ্বব্যাপী দেশের ভাবমূর্তি ও স্বধীনতা অর্জন নিয়ে আলোনা-সমালোচনা শুরু হয়।পরবর্তীতে ৮১ টিভি চ্যানেলে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, প্রথম আলো উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে মিথ্যা পরিচয় ও মিথ্যা উদ্বৃতি দিয়ে সংবাদটি পরিবেশন করেছে। শিশুটির বিষয়ে ভুল তথ্য, নাম পরিচয়ও ভুল দেয়া হয়েছে। পরে শিশুটি জানিয়েছে, প্রথম আলোর সাংবাদিক শিশুর হাতে ১০ টাকা দিয়ে এই ছবি তুলেছে।