×

জাতীয়

দেশি-বিদেশি চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:৪৫ এএম

দেশি-বিদেশি চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে

ফাইল ছবি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের সরকারি ও বিরোধীদলীয় এমপিরা। তারা বলেছেন, বিএনপি ও তাদের দোসররা দেশে বিদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে। এজন্য তারা আবারো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্র সফল হবে না। জাতীয় নির্বাচন এই ইসির নেতৃত্বেই হবে, ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতার হাত বদল হবে, অন্য কোনো উপায়ে তা সম্ভব নয়।

জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৪৭ বিধিতে উপস্থাপিত প্রস্তাবের উপর গতকাল শনিবার আলোচনা অংশ নিয়ে তারা এসব কথা বলেন। এ সময় প্রথমে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবের উপর গতকাল আলোচনায় অংশ নেন তথ্য ও স¤প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সাবেক মন্ত্রী ইমাজউদ্দিন প্রামাণিক, সাবেক নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, জাপার চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙা, জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রওশন আরা মান্নান, সিমিন হোসেন রিমি, আব্দুস শহীদ, নাহিম রাজ্জাক, হাবিবা রহমান খান, মো. সাইফুজ্জামান, জাকিয়া পারভিন খানম, তানভীর শাকিল জয়, সৈয়দা জাকিয়া নূর, মোসলেম উদ্দিন প্রমুখ।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কাউকে দাওয়াত করে, হাতে পায়ে ধরে নির্বাচনে আনার দায়িত্ব সরকারের বা সরকারি দলের নয়। কেউ আসুক না আসুক আগামী নির্বাচন যথাসময়েই হবে। আজকে গণতন্ত্রকে প্রতিহত করা, সংসদকে অবজ্ঞা করার জন্য এবং সংসদীয় গণতন্ত্র যাতে নিরবচ্ছিন্নভাবে চলতে না পারে সেজন্য নানা ষড়যন্ত্র চলছে। রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি আজকে দেশী-বিদেশি, নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ২০১৪ সালে নির্বাচন বানচাল করার জন্য তারা ৫০০ ভোট কেন্দ্র পুড়িয়ে দিয়েছিল। আজকেও সেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এ বছরের শেষ সপ্তাহে বা আগামী বছর প্রথম সপ্তাহে যে নির্বাচন হবে সেই নির্বাচনকে বাঁধাগ্রস্ত করার জন্য আজ নানা ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে এবং সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার হুমকি দিচ্ছে। দেশের জনগণ তাদের হুমকি প্রতিহত করবে।

তিনি বলেন, ২০০৭ সালে সংসদের স্পিকার ও চিপ হুইপের বাসভবনকে কারাগারে পরিনত করা হয়েছিল। এবং সংসদে দায়িত্ব পালন করা সংসদনেতা ও বিরোধীদলীয় নেতাকে বিচারের জন্য সংসদে আদালত বসানো হয়। যা সংসদকে কলঙ্কিত করেছে। এ সময় তিনি যারা সংসদকে কলঙ্কিত করেছিল সংসদের ৫০ বছর পূর্তিতে তাদের বিচারের দাবি জানান।

ইমাজউদ্দিন প্রামাণিক বলেন, বঙ্গবন্ধু একমাত্র প্রথম বাংলাদেশের স্বাধীনতা চেয়েছিলেন। তার আগে অনেক নেতা ছিলেন তারা কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি। তারা ক্ষমতায় যেতে চেয়েছেন আর বঙ্গবন্ধু একমাত্র নেতা যিনি জীবন দিয়ে স্বাধীনতা দিয়ে গেলেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা দেশকে উন্নয়নের শীর্ষে নিয়ে গেছেন। এতো কিছু কাজ করার পরও যদি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার পক্ষে ক্যানভাস করতে হয় তাহলে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যে আরো দুর্ভোগ আছে।

শাজাহান খান বলেন, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট যারা বঙ্গবন্ধুকে প্রত্যক্ষভাবে হত্যা করেছিল বিএনপি তাদের এই সংসদে এনে বসিয়েছিলেন, তাদের হাতে পতাকা তুলে দিয়েছিলেন। বিএনপি এইভাবে পবিত্র সংসদকে অপবিত্র-কুলষিত করেছিল। এখন বিএনপি বাক স্বাধীনতার কথা বলছে, গণতন্ত্রের কথা বলছে। কিন্তু ২০১৪-১৫ সালে তারা গণতন্ত্রের জিগির তুলে নির্বাচন বানচাল করার জন্য অগ্নিসন্ত্রাস করে। শত শত মানুষকে হত্যা করে। তারা এভাবে শ্রমজীবী, সাধারণ মানুষকে হত্যা করে ক্ষমতায় যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ‘বিজয় লাভ করে বাড়ি ফেরার’ যে ঘোষণা দিয়েছিলেন, বাংলাদেশের মানুষ তা হতে দেয়নি, বিজয় তো দূরের কথা, মাথা নিচু করে তিনি বাড়ি ফিরতে বাধ্য হন।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, আগামী নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, নানান ধরনের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত হচ্ছে, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক থাকতে হবে। সেই ষড়যন্ত্র মোকাবিলার জন্য আমাদের নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আগামী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নৌকা মার্কা বিজয়ী করে সোনার বাংলা বাস্তবায়িত করব এ প্রত্যাশা করি।

আ স ম ফিরোজ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক ধারায় দেশ পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু কেউ কেউ গণতন্ত্র পছন্দ করেন না, তারা দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র করে পিছনের পথ দিয়ে ক্ষমতায় আসার খোয়াব দেখছেন। এটা আর হতে পারে না। জনগণ তাদের প্রতিহত করবে।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র ধ্বংস করে ক্ষমতা দখলের রাজনীতি, খালকাটা ও ঋণখেলাপির রাজনীতি এবং কারফিউ দিয়ে প্রতিদিন মুক্তিযোদ্ধা হত্যা করে পাকিস্তানিকরণের তথাকথিত গণতন্ত্র ও ক্যু পাল্টা ক্যু দিয়ে রাষ্ট্রতন্ত্রের হত্যাযজ্ঞের রাজনীতি চালু করে। তারা এই সংসদকেও বার বার কলুসিত করার চেষ্টা করেছে। হাওয়া ভবন দিয়ে রাজনীতির দুবৃত্তায়ন ও অর্থ লুটপাট করেছে। অবৈধ ক্ষমতাধর বিএনপি আবারো এ দেশকে অস্থিতিশীল করতে তারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। সবাই মিলে এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে।

নসরুল হামিদ বলেন, বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন কৃষি কাজের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে শিল্পায়ন ঘটাতে হবে, সেজন্য সংবিধানের ১৬ নম্বর অনুচ্ছেদে তিনি গ্রাম ও শহরের দূরত্ব ঘোচাতে গ্রামাঞ্চলের আমূল পরিবর্তনের কথা বলেন। তিনি সেই সময় ৫টি গ্যাসফিল্ড কিনে নেন, তার দূরদর্শিতার কারণে আজকের বাংলাদেশ জ্বালানি সংকট সহজে মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে। আধুনিক বাংলাদেশ গঠনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তিনি ধন্যবাদ জানান।

মশিউর রহমান রাঙা বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে আজ গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত। সংসদ প্রাণবন্ত। জাতীয় পার্টি বিরোধী দল হিসেবে তাদের ভূমিকা রেখে চলেছে। কিন্তু কোনো কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচন নিয়ে জলঘোলা করছে। তারা অগণতান্ত্রিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রথার দাবি জানাচ্ছে, সেটি আর হতে পারে না। ভোটারদের ভোটেই ক্ষমতার হাত বদল হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App