×

জাতীয়

সীতাকুণ্ড-ফুলবাড়িয়ায় বিস্ফোরণ: দায়ীদের শাস্তির দাবি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৩, ০৭:৩৫ পিএম

সীতাকুণ্ড-ফুলবাড়িয়ায় বিস্ফোরণ: দায়ীদের শাস্তির দাবি

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। ছবি: ভোরের কাগজ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সীমা অক্সিজেন কারখানা ও ফুলবাড়িযা বাসস্ট্যান্ডে ভয়াবহ বিস্ফোরণ যথাক্রমে ৬ ও ১৮ জন নিহত ও শতাধিক আহতের ঘটনায় দায়ীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। একই সঙ্গে নিহতদের আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ, আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা ও আইএলও কনভেনশন ১৫৫, ১৮৭ ও ১২১ অনুস্বাক্ষরের দাবি জানিয়েছে ফ্রন্ট।

বুধবার (৮ মার্চ) এই দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে শ্রমিক সংগঠনটি।

সমাজতন্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সহ-সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুলের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি শাহজাহান তালুকদার, সহ-সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, কোষাধ্যক্ষ জুলফিকার আলী, সংস্কৃতি সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, নির্বাহী সদস্য মহিন উদ্দিন প্রমুখ।

ফ্রন্টের নেতারা বলেন, কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর অবহেলা আর ব্যর্থতায় জীবিকার জন্য এসে জীবন হারানোর ঘটনা নিয়মিত ঘটছে। মালিকের অবহেলাজনিত কারণে কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় শ্রমিকের মৃত্যুর জন্য অদ্যবধি কোনো মালিককে শাস্তি পেতে হয়নি। প্রতিটি দুর্ঘটনার পরে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট কর্মক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা আয়োজন ছিলনা। অথচ সব কর্মক্ষেত্রে অগ্নি ও অন্যান্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে অগ্নি নির্বাপক ও শ্রম পরিদর্শন সংস্থাগুলোর কোনো কর্মকর্তাকে শাস্তি পেতে হয়নি। কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থদের আইএলও কনভেনশন ১২১-এর আলোকে আজীবন আয়ের মানদন্ডে ক্ষতিপুরণ আদায়ের বিধান করা হয়নি। উপরন্তু মালিকের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের পরিবর্তে শ্রমিকের অর্থে গঠিত শ্রমিক কল্যাণ তহবিল থেকে অনুদান দিয়ে মালিক ও শ্রম পরিদর্শন সংস্থার দায় আড়াল করার চেষ্টা করা হয়। মালিকদের অত্যাধিক মুনাফালিপ্সা, সরকারী সংস্থার কর্তব্য অবহেলা ও দুর্নীতির জন্য কর্মক্ষেত্রে মৃত্যুর মিছিল থামছে না। সরকার মুখে শ্রমবান্ধব নীতির কথা বললেও কর্মকাণ্ডে মালিকবান্ধব ও শ্রমিকদের প্রতি দায়িত্বহীন নীতির প্রতিফলন ঘটাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তারা।

ফ্রন্টের নেতারা আইএলও কনভেনশন ১২১, ১৫৫, ১৮৭ অনুস্বাক্ষরের আহবান জানিয়ে বলেন, সেজান জুস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ৫৪ জন শিশু শ্রমিকের মৃত্যুর পর ট্রেড ইউনিয়নের অন্তর্ভূক্তি ছাড়াই প্রধানমন্ত্রীর শিল্প উপদেষ্টার নেতৃত্বে রাষ্ট্র একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে। কিন্তু দুই বছর পরেও সেই কমিটি কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। তার উদাহরণ সীতাকুণ্ডে সীমা অক্সিজেন কারখানা বা ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ডে কর্মক্ষেত্রে বিস্ফোরণে শ্রমজীবী মানুষের হতাহতের ঘটনার পুনরাবৃত্তি।

শ্রমিক নেতারা বলেন, শিল্প মালিক ও সরাকারি নজরদারি প্রতিষ্ঠানের সীমাহীন অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার ফলে দেশের বিভিন্ন শিল্প এলাকায় অসংখ্য শ্রমিক কাঠামোগত হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে, আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করছে। অবিলম্বে সীমা অক্সিজেন কারখানা ও গুলিস্থানে বিস্ফোরণে অবহেলায় জন্য দায়ীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তি এবং নিহতদের আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ ও আহতদের পুনর্বাসন করার এবং প্রতিটি কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন ও সেইফটি কমিটি গঠনের দাবি জানান তারা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App