×

জাতীয়

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খুন হন শাওন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১:২৭ পিএম

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খুন হন শাওন

ছবি: ভোরের কাগজ

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খুন হন শাওন
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খুন হন শাওন
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খুন হন শাওন

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-মো. মিজানুর রহমান ওরফে মিজান বেপারী ওরফে মিজান ওরফে ফরমা মিজান (৩২) ও মো. জুয়েল ওরফে ফুটবল জুয়েল ওরফে জুয়েল রানা (২৯)। গতকাল মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

র‍্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতরা রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মীরহাজিরবাগ এলাকায় শাওন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। গ্রেপ্তার মিজান এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও ফুটবল জুয়েল সহযোগী। মূলত পূর্ব শত্রুতার জের ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ খুনের ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তার দুজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

শাওন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারের র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে রাজধানী যাত্রাবাড়ীর মীরহাজিরবাগ এলাকায় শাওন নামক এক যুবকের রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় ভিকটিমের ভাই বাদী হয়ে পরেরদিন রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় ৪ জনের নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। যার মামলা নম্বর-৭৯।।এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব খুনের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে ছায়া তদন্ত শুরু করে। এক পর্যায়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী মিজান ও তার সহযোগী ফুটবল জুয়েলকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় কিলিং মিশনে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র ও ১টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, ভিকটিম শাওন দীর্ঘদিন ধরে পরিবারসহ রাজধানী যাত্রাবাড়ীর মীরহাজিরবাগ এলাকায় বসবাস করে আসছিল। তিনি টিকাটুলীতে একটি ট্রাভেলস কোম্পানীতে চাকুরী করত। ভিকটিম ও গ্রেপ্তাতরকৃত আসামিরা যাত্রাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা। গত বছরের মাঝামাঝি সময় এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ভিকটিমের সঙ্গে মিজানের ভাই রজবের বাকবিতণ্ডা হয়। পরবর্তীতে পুনরায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গত মাসে ভিকটিম শাওন ও রজবের মধ্যে ঝগড়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বিষয়টি রজব তার বড় ভাই গ্রেপ্তারকৃত মিজানকে জানায়। পরবর্তীতে তারা কিছুদিন পূর্বে মিজানের নেতৃত্বে শাওনকে উচিত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করে। এসময় তারা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সুযোগ খুঁজতে থাকে। ঘটনার দিন রাতে ভিকটিম তার স্ত্রীর জন্য ওষুধ আনতে বাসা থেকে বাহিরে বের হয়। এসময় আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মিজান মোটরসাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থলের কাছাকাছি অবস্থান করে। আসামি রজব অতর্কিতভাবে ভিকটিমকে ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে। খুনের সময় গ্রেপ্তারকৃত জুয়েল রাস্তার মোড়ে পাহারার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল যেন হঠাৎ করে কোন পথচারী ঘটনাস্থলের দিকে না আসে। ভিকটিম গুরুত্বর জখম হয়ে জীবন বাঁচাতে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করলে আসামীরা দৌঁড়ে গিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপুরি আঘাত করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। ঘটনার পরপরই গ্রেপ্তারকৃত মিজান ও জুয়েল মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

র‍্যাব মুখপাত্র মঈন বলেন, গ্রেপ্তারকৃত মিজান যাত্রাবাড়ী এলাকার একজন চিহ্নিত অপরাধী। তার নামে যাত্রাবাড়ী ও মীরহাজিরবাগ এলাকায় মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন সময় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি ও মারামারির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। রজবের সঙ্গে শাওনের মারামারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভিকটিমকে উচিত শিক্ষা দেয়ার জন্য তার নেতৃত্বেই শাওনকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। ঘটনার পর সে শ্যামপুর এলাকায় তার আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপন করে। পরবর্তীতে আত্মগোপনে থাকাবস্থায় যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হয়। তার নামে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত জুয়েল ওরফে ফুটবল জুয়েল রাজধানী যাত্রাবাড়ীর মীরহাজিরবাগ এলাকায় বসবাস করে ও একটি ওয়ার্কশপে কাজ করত। পাশাপাশি তিনি মাদক ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত। তিনি গ্রেপ্তারকৃত মিজানের সঙ্গে বিভিন্ন সময় যাত্রাবাড়ী, মীরহাজিরবাগ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি ও মারামারির সাথে জড়িত ছিল। তার নামে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ৪টি মামলা রয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে র‍্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, মূলত আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তার মিজানসহ তার সহযোগীরা মাদকসহ অন্যান্য অপরাধে জড়িত থাকলেও শাওনের তেমন কোন অপরাধের রেকর্ড নেই। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের সঙ্গে রাজনৈতিক কোন দল বা ব্যক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা মেলেনি। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত রজবসহ বাকিদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান চলছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App