×

জাতীয়

সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড নিয়ে চলছে ‘তদন্ত-তদন্ত খেলা’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৫:৫২ পিএম

সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড নিয়ে চলছে ‘তদন্ত-তদন্ত খেলা’

ছবি: ভোরের কাগজ

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের ১১ বছর পার হলেও এখনো রহস্য উন্মোচিত হলো না। এই দীর্ঘ বছরে আমরা জানতেই পারলামনা খুনি কারা। অথচ এতোদিন ধরে ‘তদন্ত-তদন্ত খেলা’ চলছেই। ৯৫ বার পেছানো হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময়। এটি সেঞ্চুরি করার আগেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হোক। যদি সেটি না হয়, তাহলে তদন্তকারী সংস্থা বলে দিক, এটির রহস্য উন্মোচন করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা বলতে চাই, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের রহস্য যদি সাংবাদিক সমাজের বিপক্ষেও যায়, তাহলেও উন্মোচন করা হোক।

বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসকাবের সামনে সাগর-রুনিসহ সব সাংবাদিক হত্যার বিচারের দাবিতে আয়োজিত প্রতীকী অনশনে সাংবাদিক নেতারা এসব কথা বলেন।

ঢাকা সংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) এ কর্মসূচির আয়োজন করে। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেনের উপস্থাপনায় এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক, ডিইউজে সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, সহ-সভাপতি মানিক লাল ঘোষ, যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি মোরসালিন নোমানী, বিএফইউজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব জাকারিয়া কাজল ও সাবেক নির্বাহী সদস্য শাহ নেওয়াজ দুলাল প্রমুখ।

অনশন কর্মসূচি শেষে সাংবাদিক নেতারা সব সাংবাদিক হত্যার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে স্মারক লিপি দেন। এতে উল্লেখ করা হয়, অবিলম্বে যদি সাগর-রুনিসহ সারাদেশে হত্যার শিকার সাংবাদিকদের মামলার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় না আনা হলে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।

বিএফইউজে’র সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, সাগর-রুনিসহ হত্যার শিকার অন্য সাংবাদিকদের বেলাতেও নানা কর্মসূচি করেও বিচার পাচ্ছি না। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, সাংবাদিকরা কেন বিচার পাবে না? সমাজের অন্য সবাই বিচার পেলে সাংবাদিকদের বিচার পেতে সমস্যা কোথায়? নাকি সাংবাদিকরা বিচ্ছিন্ন কোনো গোত্রের মানুষ। আমরা আশা করি, তদন্ত সংশ্লিষ্টরা আন্তরিক হলে সব ঘটনার বিচার হওয়া সম্ভব।

ডিইউজে সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর যতজন সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, এর একটিরও সুষ্ঠু বিচার হয়নি। দু-একটি বিচার হলেও তাদের পরিবার রায়ে অখুশি হয়ে নারাজি দিয়েছে। এই হচ্ছে রাষ্ট্রের দায়িত্ববোধের অবস্থা। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, স্বাধীনতায় রক্ত দিয়ে অবদান রাখা সাংবাদিক সমাজের যেসব সদস্য হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে প্রত্যেকের বিচার করতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে।

ডিআরইউ সভাপতি মোরসালিন নোমানী বলেন, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের সময় তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৪৮ ঘন্টা সময় চেয়েছিলেন, সেটি ৯৫ হাজার ঘন্টাতেও শেষ হয়নি। ৯৫ বার পিছিয়েছে তদন্ত প্রতিবেদন তাখিলের তারিখ। যারা তদন্ত করছে, তারা তদন্তে কি পেয়েছে সেটিও আমরা জানি না। তাই বলতে চাই, আর কালক্ষেপন নয়, মামলার প্রতিবেদন দাখিলের আগামী তারিখেই (৫ মার্চ) প্রতিদেন দেয়া হোক। না পারলে তদন্তকারীরা আদালতকে বলে দিক, তারা এই হত্যার রহস্য উন্মোচন করতে পারবে না।

বিএফইউজে’র সাবেক নির্বাহী সদস্য শাহ নেওয়াজ দুলাল বলেন, আমরা তো তেমন কিছু চাইনি, আমাদের দুই সহকর্মী (সাগর-রুনি) হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়েছি। অথচ, তদন্তই ঝুলে আছে। অনেকে বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে অন্য কোনো বিশেষ কারণ রয়েছে বলে তদন্ত অন্ধকারে রয়েছে। আমরা বলতে চাই, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের রহস্য যদি সাংবাদিক সমাজের বিপক্ষেও যায়, তাহলেও উন্মোচন করা হোক। যে তদন্ত তদন্ত খেলা চলছে সেটির অবসান হোক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App