×

জাতীয়

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয় যুক্তরাষ্ট্র

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১:৫২ পিএম

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয় যুক্তরাষ্ট্র

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সঙ্গে নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরো জোরদার করতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশও দেশটির সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়তে আগ্রহী। বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত ঢাকা-ওয়াশিংটনের যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়। তার আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকা সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্থনি ব্লিঙ্কেনের বিশেষ কৌশলগত উপদেষ্টা ও দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর (আন্ডার সেক্রেটারি) ডেরেক শোলে। প্রেস ব্রিফিংয়ে ডেরেক শোলে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আমরা আরো জোরদার করতে চাই। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ বছরের সম্পর্কের যে ধারাবাহিকতা, সেটিকে আরো এগিয়ে নিতে আমরা আশাবাদী। দারুণ আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে উদারতা দেখিয়েছে তা অনুসরণীয়। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে এবং বাংলাদেশের জন্য আমরা আমাদের  সহযোগীতা অব্যহত রাখবো। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমেরিকা আমাদের সব চেয়ে বড় বিনিয়োগকারী। আমরা আরো উপরে যেতে চাই। রোহিঙ্গাদের জীবনযাপন আরো উন্নত করতে তারাও আমাদের সঙ্গে একমত। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্থনি ব্লিঙ্কেনের বিশেষ কৌশলগত উপদেষ্টা ও দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর (আন্ডার সেক্রেটারি) ডেরেক শোলে দুইদিনের সফরে মঙ্গলবার  সন্ধ্যায় ঢাকা আসেন। বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। ডেরেক শোলের সফরের আগেই ইউএসএআইডি’র একটি অগ্রবর্তী দল বাংলাদেশে এসেছে। দলটি রবিবার কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়ে সেখানকার পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখেন। কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ডেরেক শোলে এ সফরে  দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও নিরাপত্তা বিষয়গুলোর পাশাপাশি র‌্যাব এবং এর সাবেক-বর্তমান কর্মকর্তাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বরাবরের মতোই তুলে ধরা হয়। ডেরেক শোলে ঢাকা সফরের আগে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে চ্যানেল আইকে দেয়া সাক্ষাতকারে যুক্তরাষ্ট্রের ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সম্পর্কিত কৌশলে (আইপিএস) বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে ভাবার কারণে উচ্চ পর্যায়ের এসব সফর হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আগামী দশকগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থের ক্ষেত্রে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ এবং সেই সেখানে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে বাংলাদেশ। সে কারণেই উচ্চপর্যায়ের সফরকারীদের আমরা ঘন ঘন দেখছি। সামনের দিনগুলোতে আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের সম্পকর্কে আরো বড় পরিসরে দেখতে চাই। বাংলাদেশে অবাধ ও নিরেপক্ষ নির্বাচন দেখার আশার করার কথা জানিয়ে ডেরেক শোলে বলেন, আমরা স্বীকার করি যে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রও নিখুঁত নয়, তবে আমরা নিজেদেরকে আরও ভালো এবং উন্নত করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। এ কারণে আমরা যখন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, অবাধ ও নিরেপক্ষ নির্বাচন, নাগরিক সমাজের সমাবেশ ও মতপ্রকাশের বিষয়ে উদ্বেগ তুলে ধরি, তখন সেটা আমরা অংশীদারিত্ব ও বন্ধুত্বের জায়গা থেকে করে থাকি। মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, যা কেবল খারাপের দিকেই যাচ্ছে। এই শরণার্থী সংকট বাংলাদেশের উপর চাপ ফেলছে, তা কমানোর জন্য আমরা যুক্তরাষ্ট্র সাধ্যমত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি বাংলাদেশকে। মানবিক প্রয়োজন মেটাতে বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি কিছু শরণার্থীকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসার কার্যক্রমও রয়েছে। প্রসঙ্গত, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে দুই দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার ডেরেক শোলে। মঙ্গলবার বিকালে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলরের দায়িত্বে থাকা ডেরেক শোলে দেশটির আন্ডার সেক্রেটারি পদমর্যাদায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নীতি নির্ধারণ বিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেনের পরামর্শ অনুযায়ী বিশেষ কূটনৈতিক দায়িত্বও সামলে থাকেন এ কর্মকর্তা। বাংলাদেশ সফরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থার সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ডেরেক শোলে। মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং দুই দেশের সরকারের মধ্যে সম্পর্ককে শক্তিশালী করা এ সফরের উদ্দেশ্য।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App