×

জাতীয়

মুদ্রানীতি বাস্তবতার কাছাকাছি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০৮:২৬ এএম

মুদ্রানীতি বাস্তবতার কাছাকাছি

অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নতুন মুদ্রানীতিতে আশাব্যঞ্জক তেমন কিছু নেই। বরং কিছু ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ আছে বলে মনে করেন বিশ্বব্যাংকের সাবেক লিড অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন। ভোরের কাগজকে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, অর্থবছরের প্রথমার্ধে অর্থাৎ গত জুন মাসে ঘোষিত মুদ্রানীতির চেয়ে তুলনামূলকভাবে এটা ‘মোর রিয়েলিস্টিক’ হয়েছে।

তিনি বলেন, এর আগে বিদায়ী গভর্নর ফজলে কবির যে মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছেন, অর্থবছরের মাঝামাঝি এসে সেই মুদ্রানীতির একটি সংশোধিত ভার্সন দেয়া হয়েছে। তার মানে এই না যে, এখানে যে লক্ষ্যগুলো দেয়া হয়েছে তার সবই অর্জিত হবে। তবে যেসব লক্ষ্য এবারের মুদ্রানীতিতে দেয়া হয়েছে তা আগের তুলনায় বাস্তবতার আরেকটু কাছের। দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাংক সুদহারে ক্যাপের বিষয়ে তার অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসেছে। যদিও গত তিন মাস ধরে একটি অঘোষিত নীতি ছিল, কনজ্যুমার ঋণে ৯ শতাংশের উপরে ১২ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দেয়া যেতে পারে। এটা একটি ইতিবাচক দিক। ডিপোজিট রেটের উপরে ফ্লোর উঠিয়ে দেয়াও ইতিবাচক দিক।

ড. জাহিদ হোসেন বলেন, এতদিন ব্যাংকাররা ফিক্সড ডিপোজিটে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছিল। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ব্যাংকগুলোর ফিক্সড ডিপোজিটে আগ্রহ বাড়বে। যা ডিপোজিট গ্রোথকে বাড়াতে সহায়তা করবে। ফলে ব্যাংক খাতে যে তারল্য সংকট রয়েছে তা পুরোপুরি কেটে না গেলেও অনেকটা সহায়ক হবে।

রেপো ও রিভার্স রেপো ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে ব্যাংকারদের খরচ হয়তো কিছুটা বাড়বে। কিন্তু ব্যাংকাররা এর থেকে অনেক বেশি রেট নিচ্ছে। কলমানি রেট, ইন্টারব্যাংক রেপো রেট ৭ শতাংশের উপরে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন সিদ্ধান্ত সার্বিক অর্থনীতিতে কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না।

ড. জাহিদ হোসেন বলেন, সার্বিকভাবে বলা চলে, মুদ্রানীতির মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। সুতরাং, নতুন মুদ্রানীতি বর্তমান মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে বলে মনে হয় না। কারণ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নেই। একটাই আছে, ভোক্তা ঋণে (ব্যক্তিগত ঋণ, গাড়ি ঋণ, আবাসন ঋণ, শিক্ষা ঋণ প্রভৃতি) সুদহার ৩ শতাংশ বাড়িয়ে ১২ শতাংশ করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে ভোক্তা ঋণ খুব বেশি না। কাজেই এটি মূল্যস্ফীতির ওপরে খুব বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে না।

তিনি বলেন, কিছু পদক্ষেপ আছে যা মূল্যস্ফীতিকে আরো বাড়িয়ে দিতে পারে। যেমন- সরকারকে বাংলাদেশ ব্যাংক এখন যে সরাসরি ঋণ দিচ্ছে, এর ফলে মানি ক্রিয়েশন হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিফাইন্যান্সিং ফ্যাসিলিটির (পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা) কথা বলেছে যে, মূল্যস্ফীতি যেহেতু সাপ্লাই সাইডের, তাই রিফাইন্যান্সের মাধ্যমে সাপ্লাইকে বাড়ানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু যেখানে বিদেশি মুদ্রার অভাবে এলসি খোলা যাচ্ছে না। জ্বালানি গ্যাসের অভাবে কারখানা চালানো যাচ্ছে না। সেখানে উৎপাদনশীলতা আটকে গেলে সেটা ক্রেডিট দিয়ে মূল্যস্ফীতির চাপ আরো বাড়ানো হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App