×

জাতীয়

বিএনপির সম্মুখসারির নেতারা নির্বাচনে অংশ নেবেই

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০৩:০৭ পিএম

আওয়ামী লীগের জেষ্ঠ্য যুগ্ম সাধারণ সম্পদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সংসদ থেকে বিএনপির ছয় সংসদ সদস্যের পদত্যাগ দলটির প্রচণ্ড অদূরদর্শী একটি সিদ্ধান্ত ছিল। উপনির্বাচনে উকিল আবদুস সাত্তারের অংশ নেয়ায় প্রমাণিত হচ্ছে- বিএনপির সম্মুখসারির অনেক নেতাই নির্বাচনমুখী, তারা নির্বাচন করতে চায়। এতে আরো ইঙ্গিত দেয় যে বিএনপি যদি ভবিষ্যতে নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়, তাদের নেতারা ঠিকই নির্বাচনে অংশ নেবে। নির্বাচনে অংশ নেয়া থেকে তাদের নেতাদের ঠেকানো যাবে না। নির্বাচনে তারা অংশ নেবেই।

বিএনপির পদত্যাগী সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে অংশ নেয়া কি ইঙ্গিত দিচ্ছে- সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) এমন মন্তব্য করেন ড. হাছান। রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসায় বর্তমান সরকারের চার বছর পূর্তি উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। এসময় নানা সংকট ও ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধানকে অভিনন্দন জানান ড. হাছান।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির সিদ্ধান্ত আসে সমুদ্রের ওপার থেকে। বাংলাদেশের বাস্তবতা ও পরিস্থিতি সম্পর্কে তাদের সেই (তারেক রহমান) নেতার কোনো ধারণা নেই। তিনি ১৫-১৬ বছর ধরে দেশের বাইরে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি সংসদ থেকে বিএনপির ছয় সংসদ সদস্যের পদত্যাগ দলটির প্রচণ্ড অদূরদর্শী একটি সিদ্ধান্ত ছিল। বিএনপির নেতারা মনে করেন ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশ না নিয়ে তা প্রতিহত করার অপচেষ্টা- সম্পূর্ণ ভুল ছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তারা অংশ নেবে, কী নেবে না- এমন দোলাচাল না রেখে আংশিক নয়, পূর্ণ শক্তি নিয়ে নির্বাচন করা প্রয়োজন ছিল। এবারো তাদের ছয় এমপির পদত্যাগ, তাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে বলে সম্মুখ সারির নেতাদের ধারণা। এই পদত্যাগ বিএনপির জন্য শুভ হয়নি। আমিও ব্যক্তিগতভাবে তাই মনে করি।

বর্তমান সরকারের চার বছর পূর্তি সম্পর্কে ড. হাছান বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের চার বছর পূর্তি হয়েছে। একইসঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের ধারাবাহিকভাবে ১৪ বছর পূর্ণ হয়েছে। গত এক বছর করোনা মহামারী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিশ্বব্যাপি নানা সংকট ছিল। এরপরও বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি অব্যাহত রেখেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রী জাতিকে দুটি তিলক পড়িয়ে দিয়েছেন। একটি হচ্ছে পদ্মাসেতু চালু হওয়া আরেকটি স্বপ্নের মেট্টোরেলের যাত্রা শুরু। এতে দেশের প্রতিটি মানুষ উদ্বেলিত। ২০২০ সালে করোনা মহামারী শুরুর পর থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী যেভাবে করোনা মোকাবিলা করেছেন। বিশ্বসম্প্রদায় তার প্রশংসা করেছে। নিক্কিন ইনস্টিটিউট ও ব্লুম বার্গের যৌথ জরিপ বলছে বাংলাদেশ করোনা মহামারী মোকাবিলার ক্ষেত্রে বিশ্বে পঞ্চম, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম। বিশ্ব সংকট ও মূল্যস্ফিতির মধ্যেও বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্য অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক ক্ষেত্রে সহনীয় পর্যায়ে রেখেছেন। আমাদের মূল্যস্ফিতি ইউরোপ ও অনেক উন্নত দেশের তুলনায় কম হয়েছে। ডিসেম্বর মাসে আমাদের রেকর্ড পরিমাণ রেমিটেন্স এসেছে, রপ্তানী আয় বেড়েছে। গত কয়েক মাসে রপ্তানী আয় বেড়েছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষকে বিভ্রান্তি করে বিদেশীদের পদলেহনের রাজনীতি করে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি যদি বিএনপি না করত, তাহলে দেশ আরো বহুদূর এগিয়ে যেতো। বিএনপি আর তার মিত্রদের নেতিবাচক ও গুজব ছড়ানোর রাজনীতি না থাকলে দেশ আসলেই অনেকদূর এগিয়ে যেতো। পদ্মাসেতুতে মানুষের নর বলি দিতে হবে- এরকম গুজবও ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। বিশ্বের ১৩২টি দেশ যখন করোনা টিকা শুরু করতে পারেনি। আমাদের দেশে তখন শেখ হাসিনা করোনার টিকা দেয়া শুরু করেছিলেন। তখনো নানা বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছিল। সমস্ত নেতিবাচক দিক মোকাবিলা করে জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। সেজন্য জননেত্রী শেখ হাসিনাকে অসংখ্য অভিনন্দন।

গাইবান্ধা উপনির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, গাইবান্ধা উপনির্বাচন অত্যন্ত সুন্দর ও সফল হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশনও দাবি করছে। আমরাও দেখলাম অত্যন্ত সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন হয়েছে। প্রচণ্ড শীত আর একবার ভোট দিয়ে কাঙ্খিত ফল না পাওয়ায় ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম হয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ায় প্রমাণিত হয়েছে এর আগে নির্বাচন যদি স্থগিত করা না হতো, তাহলে তখনো নৌকার প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়লাভ করত।

আওয়ামী লীগের একটি অংশ রাষ্ট্র ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চায় ও সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চায়- এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আসলে সন্ত্রাসের রাজত্ব বিএনপিই কায়েম করেছে। তারা সন্ত্রাসের ওপর ভর করেই রাজনীতি করে। এতদিন তারা বলত যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চায়। এখন বলছে আবার একটি অংশ। আওয়ামী লীগ জনগনের ম্যান্ডেড দিয়ে সরকার গঠন করেছে। দেশ পরিচালনা করছে। জনগণ যতদিন চাইবে, ততদিনেই আমরা দেশ পরিচালনা করব। জনগণ না চাইলে একদিনও দেশ পরিচালনা করব না। বিএনপিই সবসময় পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App