×

জাতীয়

ঢাবি ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলন আজ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২২, ০১:২৪ এএম

ডাকসু, তথ্য প্রযুক্তি দক্ষতাসম্পন্ন ও নারী নেতৃত্ব এগিয়ে থাকবে

দীর্ঘ সাড়ে চার বছর পর আজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের সম্মেলন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সম্মেলন উদ্বোধন করবেন ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।

সম্মেলনের মাধ্যমে ঢাবি শাখায় আসবে নতুন নেতৃত্ব। পদপ্রত্যাশীরা পদ পাওয়ার দৌড়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের শীর্ষস্থানীয় নতুন নেতৃত্ব বাছাই করবেন ছাত্রলীগের অভিভাবক ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। এছাড়াও দলের প্রতি অনুগত, কর্মীবান্ধব, চারিত্রিক মাধুর্যতা, সৎ, যোগ্য ও মেধাবীদের হাতে ছাত্রলীগের পরবর্তী নেতৃত্ব তুলে দেওয়া হবে বলে একাধিকবার জানিয়েছেন দলের হাইকমান্ড।

শীর্ষস্থানীয় পদে নতুন নেতৃত্বে নারীদের পদায়ন, তথ্য প্রযুক্তির যুগে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তথ্য প্রযুক্তির দক্ষতাসম্পন্ন নেতৃত্ব ও ডাকসু থেকেও নেতৃত্ব উঠে আসার সম্ভাবনা দেখছেন অনেকেই।

দীর্ঘ সাড়ে চার বছর আগে ২০১৮ সালের ২৯ এপ্রিল ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়। পরে ওই বছরের ৩১ জুলাই সনজিত চন্দ্র দাসকে সভাপতি ও সাদ্দাম হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেই কমিটিই এখন বহাল রয়েছে। এই কমিটি দৃশ্যমান অনেক কাজ করলেও নিয়মিত হল কমিটি না দেয়া, বিতর্কিতদের বিভিন্ন পদে পদায়ন, আঞ্চলিকতার টানে নেতা বানানোসহ না অভিযোগ রয়েছে দলের নেতাকর্মীদের।

কিছু অভিযোগ স্বীকার করে নিয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে এটি আমরা স্বীকার করি। যে স্থবিরতা তৈরি হয়েছে তা আগামীতে কাটিয়ে উঠবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। তবে দেড় বছর ক্যাম্পাস বন্ধ থাকাও মূখ্য হিসেবে কাজ করেছে। আমরা স্থবির না থেকে সংগঠনকে গতিশীল রেখেছি। আমরা ইতোমধ্যে হলগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি, বিভিন্ন ইনস্টিটিউট ও অনুষদের কমিটি দিয়েছি।

একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে সক্ষম, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত ও শিক্ষার্থীবান্ধব এমন নেতৃত্বকেই ঢাবি ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্বে আনা হবে বলেও উল্লেখ করেন সাদ্দাম হোসেন।

আঞ্চলিকতার টানে নেতা বানানোর অভিযোগের বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, আমরা যাচাই-বাছাই করে কমিটিগুলো করেছি। কে কোন বঙ্গের, এটি কোনো বিষয় নয়। মূখ্য বিষয় তার কমিটমেন্ট ঠিক আছে কিনা। এবারের মতো কমিটিগুলোতে সকল এলাকার সমন্বয় কোন সময়ও হয়নি। আঞ্চলিকতার বাইরে কেউ নেই। আমি আমার আঞ্চলিকতার বাইরে নই। কিন্তু এ ধরনের দোষারোপ রাজনৈতিক ছলনা বলে মনে করি।

যেহেতু শীর্ষ পদের নেতৃত্ব নির্বাচন পক্রিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তাই ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বে নারীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে নারীর ক্ষমতায়নে এক নতুন দ্বার উন্মোচন করবেন বলে অনেকেই নারী নেতৃত্বের বিষয়ে অনেকেই আশার আলো দেখছেন। এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফরিদা পারভিন বলেন, বঙ্গবন্ধুতনয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজনীতি থেকে কর্মক্ষেত্র প্রতিটি সেক্টরে নারীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে নারীদের সুযোগ করে দিয়েছেন। নারীরাও পুরুষদের সঙ্গে সমানতালে আর্থসামাজিক দিকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সামনের দিক থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। স্বাধীকার থেকে স্বাধীনতা আন্দোলন প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজকে সামনের দিকে এগিযে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বে নারীদের পদায়ন করে নারী ক্ষমতায়নের বিষয়টিকে আবারো প্রমাণ করবেন।

এদিকে ডাকসু নির্বাচনের পরে ঢাবি ছাত্রলীগের এটাই শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্ব বাছাই। যেহেতু ডাকসুতে ছাত্রলীগের নেতারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়েছে সুতরাং সেখান থেকেও নেতৃত্ব আসার আশু সম্ভাবনা দেখছেন অনেক পদপ্রত্যাশী। এ বিষয়ে অমর একুশে হল ছাত্র সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করেছি। শিক্ষার্থীরা আমাদের কাজকে পছন্দ করেছে। যেহেতু ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের নিয়েই কাজ করে সেহেতু ডাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই নেতৃত্ব বাছাই প্রক্রিয়ায় এগিয়ে থাকবে বলে আমি মনে করি।

ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনে বয়স একটি বড় প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে বাদ পড়তে পারেন অনেক যোগ্য নেতাই। ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্ব জানায়, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ছাত্রলীগের বয়সসীমা অনুর্ধ্ব ২৭ বছর। তবে বিগত তিন কমিটির সম্মেলনে প্রার্থীদের বয়স অনুর্ধ্ব ২৯ বছর করা হয়। যেহেতু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে কোন সেশনজট নেই এবং যথাযথ সময়ের মধ্যেই সবাই শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারছেন, এজন্য বয়স অনুর্ধ্ব ২৯ বছরই হবে। আর যেহেতু প্রধানমন্ত্রী বয়সের ব্যাপারটি বিবেচনা করবেন সেক্ষেত্রে এর বাইরে না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকবে বলে জানিয়েছেন কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা। বয়স নির্ধারণের বিষয়টি সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App