×

জাতীয়

কূটনৈতিকদের আচরণ জেনেভা কনভেনশনে সীমাবদ্ধ থাকা ভাল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২২, ০৬:২৭ পিএম

বাংলাদেশের নির্বাচনের ওপর বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের করা মন্তব্য নিয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, বিদেশি কূটনৈতিকদের আচরণ জেনেভা কনভেনশন দ্বারা সীমাবদ্ধ, তাদের এর মধ্যে থাকাই ভালো।

বুধবার (১৬ নভেম্বর) নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি গত সোমবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের আগের রাতে পুলিশ কর্মকর্তারা ভোটের বাক্স ভর্তি করেছেন। আমি অন্য কোনো দেশের এমন ঘটনার কথা শুনিনি। এখানে সুষ্টু নির্বাচন দরকার।

কেবল জাপানের রাষ্ট্রদূত নয়, সম্প্রতি অন্যান্য দেশের কূটনীতিকরাও নির্বাচন নিয়ে নানা মন্তব্য করছেন। বিষয়টি নিয়ে ইসির মতামত জানাতে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেন, তারা কোন প্রেক্ষাপটে কী বলেছে, এটা তারাই ভালো জানেন। এ বিষয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে মন্তব্য করতে চাই না। এটা কূটনীতিকদের নিজস্ব এখতিয়ার। সেটা সত্য কি মিথ্যা তারাই জানেন ভালো।

কূটনীতিকরা কি এটা বলতে পারে—এমন প্রশ্নের জবাবে আনিছুর রহমান বলেন, না, এটা তো আমরা সবাই জানি যে কূটনৈতিক বিষয়-আশয় জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী হয়। এখন তারা বিবেচনা করে দেখতে পারেন যে তারা কতখানি তার মধ্যে ছিল বা আছে বা ইয়ে করছে। কূটনৈতিক বিষয়ে আমরা তো মনে করি যে, প্রত্যেকটা দেশেরই একটা নিজস্ব স্বকীয়তা আছে। প্রত্যেকেই স্বকীয়তার মধ্যে থাকে। এখন সেখানে তারা কতটুকু আছেন, সেটা বিবেচনা করা উচিত।

বিদেশিরা কেন এমন মন্তব্য করেন—এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই সিনিয়র সচিব বলেন, পৃথিবীর কোথাও এমন বলে আমরা জানা নেই। সাহস কেউ করে দিয়েছে বলেই বলে। যার যার ক্ষেত্রে একটা সীমাবদ্ধতা আছে। আইনে এমন নাই যে, সর্বত্র তারা বিচরণ করবে। কোথাও না কোথাও বাধা আছে। জেনেভা কনভেনশন তাদের জন্য বাইবেল। সেটা অনুসরণ করলেই যার যার সীমাবদ্ধতার মধ্যে থাকবে। যারা বলছেন বা করছেন তারা ভালো করেই জানেন তারা কতটুকু করছেন। তারা কূটনীতিক, তারাই জানেন। জেনেভা কনভেনশনের মধ্যেই তাদের থাকা ভালো।

কূটনীতিকদের মন্তব্যে ইসির প্রতি অনস্থা আরও প্রকট হয় কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আস্থার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। কী ছিল বা আছে, আমরা আমাদের মতো চেষ্টা করে যাচ্ছি। আপনারা (সাংবাদিকরা) দেখেছেন, বিভিন্ন সময় (নির্বাচনে) আমাদের সঙ্গে ছিলেন। ভোটের (জাতীয় নির্বাচনের) আগে আমরা আরও আস্থা সৃষ্টির চেষ্টা করবো। মানুষ এখন বোঝে অনেক কিছুই। ভালোমন্দের বিচার তারাই করে থাকবে। আমরা যদি খারাপ করে থাকি, আমরা ইচ্ছা করলেও অনাস্থা ফিরিয়ে নিতে পারবো না। মিডয়ার কল্যাণে মানুষের কাছে সবার আগে পৌঁছে যায়। আমরা জানার আগে, বোঝার আগেই অনেক রকমের মন্তব্য হয়ে যায়। আমাদের একটা প্রচেষ্টা থাকবে, সেটা হচ্ছে যে আমরা ইমেজ সংকটে যেন না ভুগি। ইমেজকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে যেন সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন করা যায়। এজন্য সবার সহযোগিতা দরকার। মিডিয়া, রাজনৈতিক পক্ষগুলো সবার সহযোগিতা দরকার।

বিদেশিদের সহযোগিতাও লাগবে কিনা —এমন প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, বিদেশিরা কি ভোটে সরাসরি কিছু করতে পারে? তাদের অভ্যন্তরে আমরা কিছু বলতে পারি কিনা। সে অনুযায়ী তাদের কথাগুলো বলার কথা। আমাদের ওপর কোনো দিক থেকেই কোনো চাপ নেই। এটা কি তার ব্যক্তিগত কথা নাকি দেশের কথা, এটাও পরিষ্কার হওয়া উচিত। ব্যক্তিগত বিষয় একটা আছে, দেশের বিষয় একটা আছে। যারা এগুলো বলেন তাদের আরো ভেবেচিন্তে কথা বলা উচিত।

পুলিশ রাতের বেলা বাক্স ভরে দেয়—এই মন্তব্যের বিষয়ে আনিছুর রহমান বলেন, আমি আশা করি ভোটের আগে সব ওভারকাম হয়ে যাবে। আমরা যা চাচ্ছি তা পারবো বলে মনে করি। আমরা ইচ্ছা করলেও পুলিশ তো অন্য কোথাও থেকে আনতে পারবো না। আমরা একা যেমন কিছু করতে পারবো না, প্রশাসন, পুলিশও একা কিছু করতে পারবে না। সবার যদি কাজের প্রতি দায়িত্ববোধ থাকে তাহলে ভালো নির্বাচন হবে বলে আশা করি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App