২৬ বছর ধরে প্রতারণা, বাদ যায়নি সাবেক আমলারাও
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২২, ০৬:২১ পিএম
ডিবির হাতে গ্রেপ্তার চক্রটির ৪ সদস্য। ছবি: ভোরের কাগজ
দীর্ঘ ২৬ বছর ধরে পেশা হিসেবে প্রতারণা করে আসছে সংঘবদ্ধ এ চক্রটি। নানা পরিচয়ে লাভের প্রলোভন দেখিয়ে যৌথ ব্যবসার ফাঁদ পেতে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ-লাখ টাকা। সাধারণ মানুষ ছাড়াও তাদের এই ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্ব খুইয়েছেন সাবেক আমলারাও।
ডিবি বলছে, কখনো বিদেশী বেসরকারী সংস্থার (এনজিও) কর্মকর্তা বা কখনো ডিগ্রীধারী চিকিৎসক আবার কখনো প্রকৌশলী কিংবা প্রভাবশালী আমলা পরিচয়ে টার্গেট ব্যক্তিকে বেশি লাভের আশা দেখিয়ে বিনিয়োগে উৎসাহী করে চক্রটি। চলতি মাসেই এই প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়েন অবসরপ্রাপ্ত একজন অতিরিক্ত সচিব। বেশী লাভের আশায় তাদের সঙ্গে ব্যবসায় যুক্ত হতে ৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। এক পর্যায়ে চক্রটির নানা তালবাহানায় সাবেক এই সচিব প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অভিযোগ করেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) মিরপুর বিভাগ রাজধানীর মোহাম্মদপুরের পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি ও কলাবাগানের বশিরউদ্দিন রোড এলাকা অভিযান চালিয়ে এ চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মো. হায়দার আলী (৬৪), মো. রেজাউল করিম (৩৭), মো. নাসির উদ্দিন (৪৯) ও মো. আব্দুল কাদের (৫৬)। এ সময় তাদের কাছে থাকা প্রতারণার ২০ লাখ ৩ হাজার টাকাও উদ্ধার করা হয়।
রাজধানীর মিন্টু রোডের ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স সেন্টারে ৪ প্রতারককে গ্রেপ্তারের বিষয়ে রবিবার (৩০অক্টোবর) বিকেলে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে অফিস সাজিয়ে প্রতারণার কাজ করে। অবসরপ্রাপ্ত সরকারী-বেসরকারী লোক, ব্যবসায়ী ও বয়োবৃদ্ধরাই তাদের প্রধান টার্গেট। এই চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অন্তত ১০টি করে মামলা রয়েছে। এই চক্রটি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অবসরপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তার সঙ্গে প্রতারণা করে ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে। বার বার গ্রেপ্তারের পরেও জামিনে বেড়িয়ে একই কাজে লিপ্ত হচ্ছে চক্রটি তাদের দমানো যাচ্ছে না কেন? প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান হারুন বলেন, আমরা গ্রেপ্তার করি তারা জামিনে বেড়িয় আবার আগের কাজে লিপ্ত হয়। এটা দুঃখজনক কিন্তু জামিনের বিষয়টা তো আমাদের হাতে না৷ তারপরও এবার আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানাবো। এই ঘটনায় গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় একটি প্রতারণা মামলা করা হয়েছে। গ্রেপ্তাররা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে আছে ও প্রতারক চক্রের অন্যান্য পলাতক সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।