×

জাতীয়

সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০২২, ০৮:১১ পিএম

সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবি

প্রধানমন্ত্রীকে ১৪ দফা দাবির কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুক্তরাষ্ট্র শাখা শুক্রবার এক সভায় বাংলাদেশের হিন্দুসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ১৪ দফা দাবি জানিয়েছে।

এসময় নেতৃবৃন্দ শনিবার (২২ অক্টোবর) সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির ডাকে বাংলাদেশ ব্যাপী অনশন ধর্মঘট কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।

যুক্তরাষ্ট্র হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দ্বিজেন ভট্টাচার্য্য সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানিয়ে বলা হয়েছে, সভায় বক্তারা বাংলাদেশে এবার সংখ্যালঘু হিন্দু সমাজকে নির্বিঘ্নে পুজো এবং শারদোৎসব উদযাপনের নিশ্চয়তার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেছেন, সরকারের সদিচ্ছা থাকলে, অর্থাৎ সংখ্যালঘু নির্যাতন ঠেকাতে সরকার তৎপর হলে, যে সেটা করা সম্ভব তার প্রমান এবারকার পুজো।

তারা প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ২০১৩ সালে রামুর বিভৎসতা থেকে শুরু করে ২০২১ সালের পুজো পর্যন্ত কিছুদিন পর পর ধর্মীয় জাতীয়তাবাদী, মৌলবাদী ও উগ্রপন্থী চক্র দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর যে বর্বর অত্যাচার করে এসেছে সেটার যেন পুনরাবৃত্তি না হয়, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) যেন সংখ্যালঘুদের এই জীবন-মরণ সমস্যার একটি টেকসই সমাধানকল্পে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেন।

তারা আরো বলেন যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-ভিত্তিক ১৯৭২ সালের সংবিধানকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা না করে ধর্মীয় মৌলবাদী গোষ্ঠীকে খুশি করার জন্য ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করা এবং সংখ্যালঘু নির্যাতকদের বিচার না করার ফলে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আজ অস্তিত্ব রক্ষার সংকটে পড়ে রাস্তায় অনশন করতে বাধ্য হচ্ছে। এটা কোনভাবেই কারো কাম্য হতে পারে না।

বক্তারা প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে ১৪ দফা উত্থাপন করেন। তার মধ্যে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন, দেবোত্তর সম্পত্তি সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পণ আইন যথাযথ বাস্তবায়ন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি ও পার্বত্য ভূমি কমিশন আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন, সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করাই নয়, তিনি যেন অবিলম্বে যুক্তরাষ্ট্রের মত একটি হেইট ও স্পীচ্ আইন পাশ করেন, বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন করে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এ’ পর্যন্ত সংঘটিত সকল সংখ্যালঘু নির্যাতনের শ্বেতপত্র করে প্রকাশ করা এবং ওই প্রক্রিয়া চলাকালে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন কমিশন রিপোর্টে চিহ্নিত সংখ্যালঘু নির্যাতকদের হেইট ক্রাইম ও স্পীচ্ আইনের আওতায় বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা, একটি সংখ্যালঘু মন্ত্রনালয় গঠন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আদলে হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃস্টান ফাউন্ডেশন গঠন, সংখ্যালঘু নির্যাতক ও এর সহায্যকারীদের নির্বাচনে মনোনয়ন না দেয়া এবং ১৯৭২ সালের সংবিধান পুনর্বহাল করে দেশের সকল নাগরিকের সম-অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, গত ২১ অক্টোবর, শুক্রবার, সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত নিউইয়র্ক শহরের রুমা’স কিচেনের সভাকক্ষে যুক্তরাষ্ট্র হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ওই সভায় সংগঠনের সিনিয়র সভাপতি নবেন্দু দত্তের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ডক্টর দ্বিজেন ভট্টাচার্যের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এই সভায় ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে সরকারি দলের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবিতে কেন্দ্রীয় ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে ঢাকার শাহবাগ ও চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা চত্বরে সকাল-সন্ধ্যা গণঅনশনরত সংখ্যালঘু নর-নারীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করা ছাড়াও সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রবাসী সংখ্যালঘু নেতৃবৃন্দের সভা, এবারকার পুজোয় হিন্দু সমাজের নিরাপত্তা বিধানে সরকারের প্রশংসনীয় ভূমিকা, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র পার্লামেন্টে কংগ্রেসম্যান শ্যাবো ও রো খান্না কর্তৃক উত্থাপিত বেঙ্গলি জেনোসাইড বিল প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা ছাড়াও একাধিক গুরুত্ত্বপূর্ণ সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সভায় যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সংগঠনের তিন সভাপতি নবেন্দু দত্ত, ডক্টর টমাস দুলু রায় ও রণবীর বড়ুয়া ছাড়া সভায় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন শিতাংশু গুহ, রূপকুমার ভৌমিক, সুশীল সাহা, প্রদীপ মালাকার, ভজন সরকার, রিণা সাহা, আশীষ ভৌমিক, দিলীপ নাথ , তপন সেন, পার্থ তালুকদার, বিষ্ণু গোপ, বিধান রায়, নারায়ণ বর্মণ, মিলন রায়, ও দ্বিজেন ভট্টাচার্য্য।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App