×

জাতীয়

বিএনপি নেতাদের বক্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০২২, ০৪:৩৯ পিএম

বিএনপি নেতাদের বক্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল

খুলনা প্রেস ক্লাবে খুলনা জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলন

বিএনপি নেতাদের বক্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল
বিএনপি নেতাদের বক্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল

খুলনা জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বলেনছেন, বিএনপি কোন গণতান্ত্রিক দল নয়, তাদের জন্ম সেনানিবাসে-তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ তাদের সমর্থন করে না। বিগত নির্বাচনে তাই জনগণ তাদের প্রত্যাখান করেছিল, ১০টি আসনও পায়নি। তারা গণতন্ত্রের ধার ধারে না। অগণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতা দখল করতে চায়।

রবিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন নেতৃবৃন্দ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন খুলনা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ ।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে টেনে-হিঁচড়ে নামানোর ক্ষমতা বিএপির নেই। আওয়ামী লীগ সবসময় নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। ভবিষৎতেও আসবে। তাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান কীভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল-পরবর্তীতে খালেদা জিয়া কীভাবে ক্ষমতায় এসেছে তা জনগণ জানে। যে দলের নেতারা বলেন, পাকিস্তানী আমল ভালো ছিল-সে দলের পক্ষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা কোন অবস্থাতেই সম্ভব নয়।

বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে খুলনায় যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা নির্লজ্জ মিথ্যাচার করে যে উস্কানিমূলক বক্তব্য রেখেছেন, এছাড়া কয়েকটি গণমাধ্যম যেভাবে অসত্য ও অতিরঞ্জিত সংবাদ পরিবেশন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন খুলনা জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ ।

শনিবার (২২ অক্টোবর) সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি গত কয়েকদিন যাবৎ খুলনা ও এর আশপাশ অঞ্চলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। জনগণ ছিল উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে। এর মধ্যে ১০ জেলা থেকে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এসে এই সমাবেশে যোগ দিয়েছে। পথে কোথাও কোন বাধা দেয়া হয়নি তাদের। তবে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনায় তারা নিজেরাই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং সহিংস কার্যকলাপ চালায়। এই সমাবেশের আগে এ অঞ্চলের মালিক-শ্রমিকরা নিরাপত্তার স্বার্থে এবং তাদের কিছু দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিবহন বন্ধ রাখে। এর সাথে সরকার বা আওয়ামী লীগের কোন সম্পর্ক নেই।

তিনি বলেন, বিএনপির মিথ্যা অভিযোগ, উস্কানি ও নানা উচ্ছৃঙ্খল আচরনের মুখে পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং আওয়ামী লীগ অনেক ধৈর্য্যরে পরিচয় দিয়েছে। তাদের ফাঁদে পা দেয়নি। অবশেষে বিভাগীয় সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হওয়ায় এটাই প্রমাণিত হয় যে, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। বিরোধী পক্ষকে সভা-সমাবেশ করতে দেয়। অথচ বিএনপির আমলে আওয়ামী লীগকে সভা-সমাবেশ করতে দেয়া হতোই না-এমনকি রাস্তায় নামতে দেয়া হতো না। এর বহু প্রমাণ রয়েছে।

জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হারুনুর রশিদ আরো বলেন, বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা লাঠিসোটা নিয়ে শহরে প্রবেশ করে আতঙ্ক ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছিল। অথচ বিএনপি নেতারা পথে পথে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে মিথ্যাচার করেছিল।

তিনি বলেন, সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্য নেতারা যা বলেছেন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সৃষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ১০টি আসনও পাবে না। আওয়ামী লীগের কোন চিহ্ন থাকবে না, এখনও সময় আছে নিরাপদে সরে যান, না হলে পালাবার পথ পাবেন না, স্বৈচারচারী সরকারকে জনগণ টেনে হিঁচড়ে নামাবে,  এ সরকারের পতন ঘটাবে, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠিত করা হবে, তাদের আমলে সংখ্যালঘু মানুষ নিরাপদে থাকে ইত্যাদি। এসব গণতন্ত্রের ভাষা নয়-রাষ্ট্রদ্রোহী বক্তব্য বলে আমরা মনে করি।

লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, বিএনপি একটি সাম্প্রদায়িক দল। তাদের আমলে সংখালঘু মানুষ কখনও নিরাপদে ছিল না, কখনও থাকবেও না। ২০০১ সালের অক্টোবরের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা শুরু হলে ওই রাতেই বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডাররা ঝাঁপিয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ সমর্থক ও সংখ্যালঘুদের ওপর। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ ‘অপারেশন সার্চ লাইটে’র আদলে শুরু হয় হত্যা, লুট-তরাজ, অগ্নিসংযোগ। চলে নারকীয় তান্ডব দেশের সর্বত্র। ১ অক্টোবর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত চলে ‘আওয়ামী লীগমুক্ত বাংলাদেশ’ নির্মাণের অভিযান। দেশে আইনের শাসন বলে কিছুই ছিল তাদের আমলে। তা দেশবাসী ভুলে যায়নি। তাই, বিএনপি নেতাদের মুখে এসব বিভ্রান্তিকর-মিথ্যাচার শোভা পায় না। সরকার পতনের নামে বিশৃঙ্খলা ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালালে আওয়ামী লীগ জনগণকে সাথে নিয়ে সমুচিত জবাব দেবে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, খুলনা মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পদক এ্যাড. সুজিৎ অধিকারী, আক্তারুজ্জামান বাবু এমপি, আওয়ামীলীগ নেতা মো. আশরাফুল ইসলাম, এ্যাড. সাইফুল ইসলাম, নূরুল ইসলাম বন্দ, কামরুজ্জামান জামাল, ফারুক হাসান হিটলু, শেখ সৈয়দ আলী, মফিজুল ইসলাম টুটুল, যুবলীগ নেতা শফিকুর রহমান পালাশ ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App