×

জাতীয়

গাড়ি বন্ধ করে সমাবেশে জনস্রোত ঠেকানো যাবে না

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২২, ০৮:৫৬ পিএম

গাড়ি বন্ধ করে অলিখিত হরতাল দিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সমাবেশে জনস্রোত ঠেকানো যাবে না বলে দাবি করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, খুলনার জনসভায় যাতে জনগণ অংশগ্রহণ করতে না পারে সেজন্য পথে পথে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। গাড়ি বন্ধ করে দিয়েছে। প্রাইভেট গাড়িতে যারা যাতায়াত করছে তাদের আটকে পরীক্ষা করা হচ্ছে। মোবাইল পরীক্ষা করা হচ্ছে তাদের, সেখানে বিএনপির কোনো ছবি আছে কিনা। তবু বিএনপির জনসভায় জনস্রোত হচ্ছে। গাড়ি-ঘোড়া বন্ধ করে দিয়ে জনস্রোত বন্ধ করা যাবে না।

বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) ঢাকা রির্পোর্টাস ইউনিটিতে (ডিআরইউ) অনুষ্ঠিত ‘মুক্তির পক্তিমালা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। মানব সেবা সংঘের উদ্যোগে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, যারা জনসভায় যারা অংশ নিচ্ছে সবাই বিএনপির নেতাকর্মী নয়। অসংখ্য জনগণ যুক্ত হচ্ছে। যখন সাধারণ মানুষ আন্দোলন যুক্ত হয় তখন আন্দোলন বেগবান হয়। তখন আন্দোলন বিজয় লাভ করে। এই স্রোতকে দমন করার শক্তি সরকারের নেই।

চট্টগ্রামের সভাবেশে বাধা দেয়ার অভিযোগ করে আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে তিনি হুঁশিয়ারি দেন, চট্টগ্রামের সব মালিকদের বলে দিয়েছে যাতে বিএনপিকে গাড়ি ভাড়া না দেয়। ময়মনসিংহের সমস্ত এলাকা বাস-ট্রাক-টেম্পু এমনকি ইজি বাইক পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। একদিন বন্ধ ছিল। খুলনায় আরো বড় জনসভা হয়ে যাবে সেই ভয়ে দুইদিন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। খুলনার জনসভা যদি আরো বড় তখন সিলেটের জনসভায় তিনদিন বন্ধ করে দিবেন। এরপরের সভাবেশে চারদিন বন্ধ করে দিবেন। বিএনপির তো দশটা মিটিং হবে। গাড়ি কয় দিন বন্ধ রাখবেন?

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি তোলে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মতো জনপ্রিয়, দেশপ্রেমিক, ভালো মানুষকে অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে তারা পাপ করেছে। আপরাধ করেছে। তারা বলেছে আদালত সিদ্ধান্ত দিয়েছে। আদালত কিভাবে চলে আমরা দেখি না! দেশের প্রধান বিচারপতিকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছে এই সরকার। দেশে এখনো কিছু ভালো মানুষ আছে বলে দেশটা এখনো ঠিকে আছে। এছাড়া সব প্রতিষ্ঠানকে আওয়ামীলীগ সরকার ধ্বংস করে দিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। আওয়ামী লীগ প্রতিপক্ষের কোনো অধিকার স্বীকার করে না বলে তিনি মন্তব্য করেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের গণতান্ত্রিক অধিকার মিছিল, সমালোচনা ও জনসভায় করা। আওয়ামী লীগ এক ধরনের জমিদারি শাসন, দানবীয় শাসন, নাৎসি শাসনের জিন ধারণ করে। তাই প্রতিপক্ষের কোনো অধিকার কখনো স্বীকার করে না তারা। তাদের বৈশিষ্ট্য, প্রতিপক্ষকে হত্যা করা, গুম করা, মিছিলে বাধা দেয়া, সমাবেশে বাধা দেয়া। এটিই আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য।

রিজভী আরও বলেন, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকার ভিতর থেকে ভয় পেয়ে গেছে। তাদের জনসমর্থন একেবারে তলানিতে চলে গেছে। তাদের কোন জনশক্তি নেই। তাই রাষ্ট্রশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিরুধী কর্মসূচী পণ্ড করার চেষ্ট করছে। বাস-ট্রাকসহ সব পরিবহন বন্ধ করে অলিখিত হরতাল তারা পালন করছে।

বিএনপির সভাবেশে জনগণের অংশগ্রহণ ঠেকানো যাচ্ছে না বলে দাবি করে তিনি বলেন, মানুষ ট্রেন বোঝাই করে খুলনায় রাওনা দিয়েছে। মানুষ আগের রাতে গিয়ে সভাবেশে উপস্থিত হচ্ছে। তারা যতই বেড়াজাল তৈরি করেছে। ততই বেড়াজাল ছিড়ে জনসভায় মানুষ উপচে পড়ছে। আওয়ামীলীগ তাদের পতনের ধ্বনি শুনতে পাচ্ছে না। তারা (হাছান মাহমুদ ও ওবায়দুল কাদের) সমাবেশ নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছে। চট্টগ্রামের সভাবেশে নিয়ে তারা বলেছে, জব্বারে বলী খেলায় এর চেয়ে বেশি মানুষ হয়। সমাবেশে লোক হয় না। সেটা হলো আওয়ামী লীগের পতনের ভয়ে আর্তচিৎকার।

অনুষ্ঠানে সঞ্চয় দে রিপনের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক নায়ক আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জল, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান প্রমুখ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App